ইনসাইড গ্রাউন্ড

মুশফিক নৈপুন্যে সহজ সহয় বাংলাদেশের


প্রকাশ: 07/04/2023


Thumbnail

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে জয়টা অনুমিতই ছিলো। তবে শঙ্কা ছিলো পঁচা শামুকে পা কাঁটার। প্রথম দুই দিনের খেলাতে অবশ্য সে রকম কিছুর আভাস পাওয়া যায়নি। ব্যাট-বল হাতে দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাই। প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডকে ২১৪ রানে অলআউট করার পথে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। পরে মুশফিকের সেঞ্চুরি ও সাকিব-মিরাজের ফিফটিতে ১৫৫ রানের লিড নেয় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫১ রানে প্রতিপক্ষের ৫ উইকেটে তুলে নিয়ে বড় জয়ের স্বপ্নও দেখাচ্ছিলো দল। তবে সেখান থেকেই ঘুরে দাড়ানোর দারুণ এক গল্প লেখে আইরিশরা। লরকান টাকারের সেঞ্চুরির পর অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের ৭২ রানের ইনিংসে লিড নেয় আইরিশরা। তবে চতুর্থ দিন প্রথম সেশনের শুরুতেই তাদেরকে অলআউট করে লক্ষ্যটা বেশি হতে দেয়নি বাংলাদেশ। আইরিশদের ১৩৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় সেশনেই ৭ উইকেটের জয় পায় সাকিব আল হাসানের দল।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ১৩১ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিং শুরু করেছিলো আইরিশরা। চতুর্থ দিনে ৯ ওভার থেকে মাত্র ৬ রান যোগ করতেই শেষ দুটি উইকেট হারিয়েছে সফরকারিরা। দুটি উইকেটই নিয়েছেন পেসার ইবাদত হোসেন। তাতে জয়ের জন্য লক্ষ্যটা নাগালের মধ্যেই থাকে বাংলাদেশের। ১৩৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম সেশনে ২ উইকেটে ৮৯ রান তুলে মধ্যাহৃ বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য প্রয়োজন আরো ৪৯ রান।

উইকেট বিবেচনায় মিরপুরে চতুর্থ ইনিংসে দেড়শো রান তাড়া করাটাও বেশ চ্যালেঞ্জিং। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে চমক দেখা গেলো ব্যাটিং অর্ডারে। তামিমের সাথে ইনিংসে সূচনা করেন লিটন দাস। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সবশেষ ওপেন করতে নেমেছিলেন লিটন। আর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পচেফস্ট্রুম টেস্টের পর উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিতীয়বার ইনিংসে সূচনা করতে আসলেন তিনি। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ওপেনিংয়ে নেমে ম্যাকব্রাইনকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন। পরের বলে মারেন আরেকটি বাউন্ডারি।

তামিম টেস্ট মেজাজে খেললেও শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তবে দারুণ শুরুর পর লিটনের শেষটা হয়েছে হতাশার। মার্ক অ্যাডায়ারের একটি শর্ট বল তার হেলমেটে আঘাতের পর বাহুতে স্পর্শ করে তা লাগে ব্যাটে। সেটি স্টাম্পের বেল ফেলে দেয়। ১৯ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৩২ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। 

লিটনের বিদায়ে ক্রিজে আসে প্রথম ইনিংসে গোল্ডেন ডাক মারা নাজমুল হোসেন শান্ত। এই ইনিংসেও থিতু হতে পারেন নি তিনি। দারুণ একটি স্ট্রেইট ড্রাইভে চার মারলেও মাত্র ৯ বল স্থায়ী হয়েছে তার ইনিংস। ম্যাকব্রাইনের বলে পরাস্ত হয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত। তবে শুরুতেই আউটের আবেদনে সাড়া দেননি অন ফিল্ড আম্পায়ার। ক্যাচটি ধরার আগে তা মাটি স্পর্শ করেছে এমন সন্দেহে সফট সিগন্যাল 'নট আউট' দিয়ে তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠানো হয়। টিভি রিপ্লেতে দীর্ঘ সময় নিয়ে দেখার পর আউটের সিদ্ধান্ত দেন থার্ড আম্পায়ার।

৪৩ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারালেও খুব একটা চাপে নেই বাংলাদেশ। আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক ও তামিম ইকবালের ব্যাটে কোন অঘটন ছাড়াই প্রথম সেশনের বাকি সময়টা পার করে দিয়েছে স্বাগতিকরা। মুশফিক এই ইনিংসেও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই রান তুলছেন। ২০ বলে ৫ চারে ২৯ রানে মুশফিক ও ২৪ রানে অপরাজিত আছেন তামিম ইকবাল।

বিরতি থেকে ফিরে বেশ সাবলীল ভাবেই রানের গতি বজায় রাখেন তামিম-মুশফিক। অনায়াসে আইরিশ বোলারদের সামলে নিয়ে জয়ের দিকে এগোতে থাকে টাইগাররা। তৃতীয় উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়ে জয়কে হাতছোয়া দুরত্বে পরিণত করেন দুজনে। তবে দলীয় ১০৫ রানে বেন হোয়াইটের আলগা এক ডেলিভারি দেখে শট খেলার লোভ সামলাতে পারলেন না তামিম। পুল করার চেষ্টা করেছিলেন তবে তা ব্যাটে-বলে না হওয়ায় ক্যাচ উঠে মিড উইকেটে। বেশ খানিকটা দৌড়ে গিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন মারে কমিন্স।

তামিম বিদায় নিলেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম। এ ইনিংসেও তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। শেষদিকে মুমিনুল হকও ব্যাট করেছেন ফুরফুরে মেজাজে। তাতে ২৮তম ওভারের প্রথম বলেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে বাংলাদেশ। ১০৬ স্ট্রাইকরেটে ৪৮ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন মি. ডিপেন্ডেবল। ব্যাট হাতে অনবদ্য পারফর্ম্যান্সের কারণে ম্যাচসেরাও হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭