ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনকালীন সরকার: ছোট মন্ত্রিসভা, নিরপেক্ষ উপদেষ্টা?


প্রকাশ: 21/04/2023


Thumbnail

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, বর্তমান সরকারও নয় বরং নির্বাচনকালীন একটি সরকারের কাঠামো কি হতে পারে সেটা নিয়ে কূটনৈতিক মহল এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে পর্দার আড়ালে চলছে নানামুখী আলাপ-আলোচনা। বিএনপি বলেছে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু এই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর এ কারণেই কূটনীতিকরা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে দুইজনের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি আপোষ ফর্মুলা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে। আর এই কাজ করতে গিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প একটি নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে বিভিন্ন রকম আলোচনা চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই আলাপ-আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। আর এই আলাপ-আলোচনায় পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা ছাড়াও রাজনীতিবিদরা নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। 

নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপ কাঠামো তৈরি করা হয়েছে এবং এই রূপ কাঠামোটি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভা অপেক্ষাকৃত ছোট হবে এবং মন্ত্রিসভার দায়িত্ব হবে রুটিন কাজ করা। ১০ বা ১২ সদস্যের বেশি মন্ত্রিসভা না থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দিলেও তিনি রুটিন কাজের মধ্যে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার বাইরে গেলে কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করবেন না। এমনকি নির্বাচনকালীন সময়ে তিনি কোনো রকম অনুদান, উন্নয়ন প্রকল্প ইত্যাদি গ্রহণ করবেন না। যেটি পাশ্চাত্য গণতন্ত্র এবং ভারতীয় গণতন্ত্রে লক্ষ্য করা যায়। সেটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। 

ছোট মন্ত্রিসভায় বিএনপির পক্ষ থেকে অন্তত একজন অন্তর্ভুক্ত থাকবে, মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির সদস্য থাকবেন এবং সংসদে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে। ছোট মন্ত্রিসভার বাইরে এই নির্বাচনকালীন সরকারের একটি বড় চমক থাকতে পারে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ উপদেষ্টামন্ডলী। আওয়ামী লীগ-বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মনোনীত এই নিরপেক্ষ উপদেষ্টামন্ডলী মূলত নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তারা সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিবেন এবং নির্বাচন পরিচালনার কাজের জন্য যে ধরনের পরামর্শ ও নির্দেশনা দিতে হয় সেটি দেবেন। 

বর্তমান সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রীর একটি উপদেষ্টা মন্ডলীর রয়েছে। এই উপদেষ্টামন্ডলী ২০০৯ সালে অন্তত শক্তিশালী ছিল। বিশেষ করে প্রয়াত এইচটি ইমাম, ড. আলাউদ্দিন সহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হিসেবে বিবেচিত হতেন। সেরকম একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ উপদেষ্টামণ্ডলীর কথা বলা হচ্ছে, যারা প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিবেন। এই ধরনের উপদেশ যদি গ্রহণ না করা হয় সেক্ষেত্রে করণীয় কি তা নিয়েও আলোচনা করা হচ্ছে। একটি মহল থেকে প্রস্তাব এসেছে যে উপদেষ্টামন্ডলী প্রধানমন্ত্রীকে যে পরামর্শ দিবেন নির্বাচনকালীন সময়ে সেই পরামর্শই প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করবেন। মূলত মন্ত্রীরা থাকবেন ওএসডি, উপদেষ্টারাই সমস্ত কর্মকাণ্ড করবেন এবং উপদেষ্টাদের পরামর্শ ছাড়া মন্ত্রীরা কোন ফাইল অনুমোদন করবেন না। এই উপদেষ্টামন্ডলী মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন এবং নির্বাচনের ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষ উপদেষ্টাদের কার্য পরিধি কতটুকু পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, কারা কারা উপদেষ্টা হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আলাপ-আলোচনা খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনী ফর্মুলা নিয়ে দূতাবাসগুলো কাজ করছে এবং রাজনৈতিক দলগুলো এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭