ইনসাইড বাংলাদেশ

কারা থাকতে পারেন নির্বাচনকালীন সরকারে


প্রকাশ: 04/05/2023


Thumbnail

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে যে আগামী অক্টোবর নাগাদ তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারেন। ডিসেম্বর বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন থেকে। সেই লক্ষ্যেই নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি শুরু করেছে এবং সেই কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও সম্প্রতি এক বক্তৃতায় ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আগামী অক্টোবর নাগাদ নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করতে পারে। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যে মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবেন সঙ্গে সঙ্গে সরকার একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই নির্বাচনকালীন সরকার হবে আকারে ছোট। জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলের অন্তর্ভুক্ত থাকবে নির্বাচনকালীন সরকারে। নির্বাচনকালীন সরকার রুটিন কাজের বাইরে কোন কাজ করবে না। যারা মন্ত্রী হবেন তারা নির্বাচন পরিচালনায় অংশগ্রহণ করলে কোন সরকারি প্রটোকল পাবেন না ইত্যাদি একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত সমেত এই নির্বাচনকালীন সরকারের একটি আনুষ্ঠানিক রূপরেখা আওয়ামী লীগ আগামী কিছুদিনের মধ্যেই ঘোষণা করতে পারে করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলছেন যে বিএনপি আসুক না আসুক আওয়ামী লীগ অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে জনগণের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। আগামী নির্বাচনে এমন একটি অবস্থা দৃশ্যমান করতে চায় যা সকলের কাছে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে থাকবে এবং এই নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হবে না। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং তিনি বারবার এই নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম, বিশৃংখলাকে তিনি প্রশ্রয় দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে সরকার বিএনপির দিকে তাকিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। বরং জনগণের স্বার্থের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যা যা করা দরকার সবকিছু করবে। তার একটি বড় অংশ হলো নির্বাচনকালীন সরকার। নির্বাচনকালীন সরকার অনেকটাই ২০১৪ নির্বাচনকালীন সরকারের আদলে হবে বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার কাছে এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন বলেও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। নির্বাচনকালীন সরকারের  মন্ত্রিসভার সদস্য ১০ থেকে ২০ জনের বেশি হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। একেক জন মন্ত্রী একাধিক মন্ত্রণালয়ের রুটিন কাজের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে নির্বাচনকালীন সময় সরকার নতুন কোনো উপদেষ্টামন্ডলী নেবে কিনা এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে নির্বাচনকালীন সরকারে যারা থাকতে পারেন বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র মনে করছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু। আমির হোসেন আমু ২০১৪ নির্বাচনকালীন সরকারেরও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তোফায়েল আহমেদ এ নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবেন কি থাকবেন না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ তোফায়েল আহমেদ শারীরিকভাবে অসুস্থ। শেষ পর্যন্ত অসুস্থতার কারণে তিনি নির্বাচনকালীন সরকারের নাও থাকতে পারেন। সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবেন বলে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। কারণ তার একটি স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে এবং নির্বাচনের সময় মন্ত্রিসভায় তার অন্তর্ভুক্ত সরকারি ইমেজকে বাড়াবে বলেই সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারক মনে করছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে অন্তত তিনজন নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারেন ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। 

যেহেতু তারা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা একারণেই তারা নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন বলে কেউ কেউ ধারণা করছেন। আওয়ামী লীগের বাইরেও বেশ কয়েকজন নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন এমন ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন অন্যতম। রাশেদ খান মেনন ২০১৪ নির্বাচনকালীন সরকারের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। জাসদের হাসানুল হক ইনু। তিনিও ২০১৪ নির্বাচনকালীন সরকারে ছিলেন। এছাড়াও জাতীয় পার্টির নেতা এবং জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন বলে কেউ কেউ ইঙ্গিত দিচ্ছেন। রওশন এরশাদ ২০১৪ তেও নির্বাচনকালীন সরকারে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ছাড়াও জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এর মধ্যে কেউ নির্বাচনকালীন সরকারে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। 

সম্প্রতি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করা উকিল আব্দুস সাত্তারও নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন বলে কেউ কেউ মনে করছেন। এই সবই হলো আলাপ-আলোচনা এবং অনুমান। আসলে নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো কি হবে এবং কে কে থাকবেন তা চূড়ান্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী। শোকের মাস আগস্ট পেরোনোর পরেই এ সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭