ইনসাইড বাংলাদেশ

সাতক্ষীরায় প্রকল্পের টাকা যাচ্ছে পকেটে- জনদূর্ভোগ চরমে!


প্রকাশ: 31/08/2023


Thumbnail

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মেলাবাজার এলাকায় কপোতাক্ষ নদে ভয়াবহ ভাঙ্গনে বাইপাস পাকা রাস্তাসহ ভাঙ্গন সংলগ্ন এলাকা ধসেপড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃক দুইটি প্যকেজে- ৫৬ লক্ষাধিকটাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমেপাইলিং ও মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু সপ্তাহ পার না হতেই পাইলিংসহ পাকারাস্তার সিংহভাগ নদী গর্ভে চলে গেছে। অতিসত্বর ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যে কোন সময়রাস্তা,মন্দীরসহ তিনতলা বাড়ীটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে বির্স্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ারআশঙ্কায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। 

 

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাযায়, কপোতাক্ষ নদে মেলা বাজার এলাকারভয়াবহ ভাঙ্গনের থেকে গুরুত্বপূর্ণ পাকা রাস্তাসহ মন্দির ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য আপৎকালীন জরুরীপ্যকেজে-১ এর মাধ্যমে গাছ দিয়ে পাইলিং ও মাটি দিয়ে ভরাট করার জন্য ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দদেয়া হয়। মেসার্স তানিয়া এন্টার প্রাইজ কেশবপুর নামের একটি ঠিকাদারি  প্রতিষ্ঠানকে ভাঙ্গন রোধে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে পাইলিংও মাটি ভরাটের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। 

 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে আরো জানায়,কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙ্গন থেকে পাকা রাস্তাসহ মন্দীর ঘরবাড়ী রক্ষার জন্য আবারওআপৎকালীন জরুরী প্যকেজে-২ বালির বস্তার ডাম্পিংয়ে ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একইঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তানিয়া এন্টারপ্রাইজকে ২৭ লক্ষ টাকায় ৭ হাজার ২শ বালুর বস্তাডাম্পিংয়ের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে,যার কাজ চলমান। 

 

বুধবার কপোতাক্ষ নদের মেলাবাজার ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় সরেজমিনে গেলে দেখা মেলেনিসাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন লোককে। এসময় ব্যবসায়ী কাশেম আলীসহ স্থানীয় লোকজন নদীর ওপারে বালুর ভর্তি বস্তা গুলোদেখিয়ে বলেন, কিছু বস্তায় বালি ভরাট করে রাখা হয়েছে।আর মেলা বাজার- মাঝিয়াড়াসংযোগ রাস্তার মুখে বালু ও আরও কিছু বালু ভর্তি বস্তা এবং মোড়ের একটি দোকানেরভিতর রাখা বস্তা গুলো দেখান এ প্রতিনিধিকে। 

 

এসময় তারা আক্ষেপ করে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ন মেলা বাজার- মাঝিয়াড়া বাইপাস সংযোগ রাস্তাটিনদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার জন্য পাইলিং ও মাটি ভরাটের জন্য সরকার ২৯ লক্ষ টাকা দিলেওঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানেরপাইলিং ও মাটি ভরাট করার কারণে সপ্তাহ না যেতেই পাইলিংসহ পাকা রাস্তাটি নদীতে চলেগেছে।  

 

এসময় তারা আরো বলেন,এখন শুনছি বালুর বস্তা দিয়ে নাকি ডাম্পিং করবে সেখানেনাকি আরো ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।এত টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পরেও ঠিকাদার ও পানিউন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারনে কখন যে মন্দীরসহ ঘরবাড়ী নদীতে মিশেযায় সেই আশংকায় রয়েছেন তারাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, বালুর বস্তায় ১৭৫ কেজি করে বালু দেয়ার কথা থাকলেওদিচ্ছে অনেক কম, তাই এই বালুর বস্তার ডাম্পিং কোনো উপকারে আসবে বলে মনে হয় না। এখনরাস্তার বাঁধ যে টুকু আছে সঠিক ভাবে দ্রুত ডাম্পিং করে রাস্তাটি সংস্কার না করা হয়তাহলে বাকি এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকায় দিন কাটছে তাদের।

 

এবিষয়ে ঠিকাদার আব্দুল মতিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, আপৎকালীন জরুরী প্যকেজের-১পাইলিং ও মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ করেছেন। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই পাইলিংসহ পাকারাস্তাটি নদীতে ডেবে গেছে।এখন আপৎকালীন জরুরী প্যকেজের-২ এর মাধ্যমে ডাম্পিং এর করারকার্যাদেশ পেয়েছেন। প্রথম পর্যায়ে ভাঙ্গন এলাকায় ৫শ বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। বালীর বস্তাভরাটের কাজ চলছে আগামী ১৫ দিনের ভিতর বাকী বস্তা গুলো ফেলে ডাম্পিং এর কাজ শেষ করাহবে বলেও জানান তিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিরুল ইসলাম জানান, তালা উপজেলারমেলাবাজারের সন্নিকটে কপোতাক্ষ নদের তীরে ভাঙ্গন রোধে আপৎকালীন জরুরী প্যাকেজেরআওতায় প্রথমে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে গাছ ও বাঁশ দিয়ে পাইলিং করলেও সেটা টেকেনি। একইজায়গায় আবারও আপৎকালীন জরুরী প্যাকেজের ২৭ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৭২০০ বালুর বস্তা দিয়েডাম্পিং করা হচ্ছে। বস্তায় বালুর পরিমান কমের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখন বস্তায় বালু ভরাহচ্ছে। এই কাজ শেষে আমরা ওজন করে নির্দেশনা দিলে সেলাই করে বাঁধ দেয়া হবে। 

 

এছাড়া প্রকল্প মনিটরিং এর জন্য এমপি সাহেবের প্রতিনিধি বীরমুক্তিযোদ্ধা মইনুল ইসলাম ও উপজেলানির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।  

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জয় বলেন, আমাদের কমিটিতে রাখা হলেও কাজের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি এমনকি ইস্টিমেটওদেয়া হয়নি। শুধু একদিন বালুর বস্তা গননার জন্য জন্য তাদের ডাকা হয়েছিল।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭