সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মেলাবাজার এলাকায় কপোতাক্ষ নদে ভয়াবহ ভাঙ্গনে বাইপাস পাকা রাস্তাসহ ভাঙ্গন সংলগ্ন এলাকা ধসেপড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃক দুইটি প্যকেজে- ৫৬ লক্ষাধিকটাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমেপাইলিং ও মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু সপ্তাহ পার না হতেই পাইলিংসহ পাকারাস্তার সিংহভাগ নদী গর্ভে চলে গেছে। অতিসত্বর ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যে কোন সময়রাস্তা,মন্দীরসহ তিনতলা বাড়ীটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে বির্স্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ারআশঙ্কায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাযায়, কপোতাক্ষ নদে মেলা বাজার এলাকারভয়াবহ ভাঙ্গনের থেকে গুরুত্বপূর্ণ পাকা রাস্তাসহ মন্দির ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য আপৎকালীন জরুরীপ্যকেজে-১ এর মাধ্যমে গাছ দিয়ে পাইলিং ও মাটি দিয়ে ভরাট করার জন্য ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দদেয়া হয়। মেসার্স তানিয়া এন্টার প্রাইজ কেশবপুর নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভাঙ্গন রোধে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে পাইলিংও মাটি ভরাটের কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে আরো জানায়,কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙ্গন থেকে পাকা রাস্তাসহ মন্দীর ঘরবাড়ী রক্ষার জন্য আবারওআপৎকালীন জরুরী প্যকেজে-২ বালির বস্তার ডাম্পিংয়ে ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একইঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তানিয়া এন্টারপ্রাইজকে ২৭ লক্ষ টাকায় ৭ হাজার ২শ বালুর বস্তাডাম্পিংয়ের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে,যার কাজ চলমান।
বুধবার কপোতাক্ষ নদের মেলাবাজার ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় সরেজমিনে গেলে দেখা মেলেনিসাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন লোককে। এসময় ব্যবসায়ী কাশেম আলীসহ স্থানীয় লোকজন নদীর ওপারে বালুর ভর্তি বস্তা গুলোদেখিয়ে বলেন, কিছু বস্তায় বালি ভরাট করে রাখা হয়েছে।আর মেলা বাজার- মাঝিয়াড়াসংযোগ রাস্তার মুখে বালু ও আরও কিছু বালু ভর্তি বস্তা এবং মোড়ের একটি দোকানেরভিতর রাখা বস্তা গুলো দেখান এ প্রতিনিধিকে।
এসময় তারা আক্ষেপ করে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ন মেলা বাজার- মাঝিয়াড়া বাইপাস সংযোগ রাস্তাটিনদী ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার জন্য পাইলিং ও মাটি ভরাটের জন্য সরকার ২৯ লক্ষ টাকা দিলেওঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানেরপাইলিং ও মাটি ভরাট করার কারণে সপ্তাহ না যেতেই পাইলিংসহ পাকা রাস্তাটি নদীতে চলেগেছে।
এসময় তারা আরো বলেন,এখন শুনছি বালুর বস্তা দিয়ে নাকি ডাম্পিং করবে সেখানেনাকি আরো ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।এত টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পরেও ঠিকাদার ও পানিউন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারনে কখন যে মন্দীরসহ ঘরবাড়ী নদীতে মিশেযায় সেই আশংকায় রয়েছেন তারাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, বালুর বস্তায় ১৭৫ কেজি করে বালু দেয়ার কথা থাকলেওদিচ্ছে অনেক কম, তাই এই বালুর বস্তার ডাম্পিং কোনো উপকারে আসবে বলে মনে হয় না। এখনরাস্তার বাঁধ যে টুকু আছে সঠিক ভাবে দ্রুত ডাম্পিং করে রাস্তাটি সংস্কার না করা হয়তাহলে বাকি এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকায় দিন কাটছে তাদের।
এবিষয়ে ঠিকাদার আব্দুল মতিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, আপৎকালীন জরুরী প্যকেজের-১পাইলিং ও মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ করেছেন। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই পাইলিংসহ পাকারাস্তাটি নদীতে ডেবে গেছে।এখন আপৎকালীন জরুরী প্যকেজের-২ এর মাধ্যমে ডাম্পিং এর করারকার্যাদেশ পেয়েছেন। প্রথম পর্যায়ে ভাঙ্গন এলাকায় ৫শ বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। বালীর বস্তাভরাটের কাজ চলছে আগামী ১৫ দিনের ভিতর বাকী বস্তা গুলো ফেলে ডাম্পিং এর কাজ শেষ করাহবে বলেও জানান তিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিরুল ইসলাম জানান, তালা উপজেলারমেলাবাজারের সন্নিকটে কপোতাক্ষ নদের তীরে ভাঙ্গন রোধে আপৎকালীন জরুরী প্যাকেজেরআওতায় প্রথমে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে গাছ ও বাঁশ দিয়ে পাইলিং করলেও সেটা টেকেনি। একইজায়গায় আবারও আপৎকালীন জরুরী প্যাকেজের ২৭ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৭২০০ বালুর বস্তা দিয়েডাম্পিং করা হচ্ছে। বস্তায় বালুর পরিমান কমের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখন বস্তায় বালু ভরাহচ্ছে। এই কাজ শেষে আমরা ওজন করে নির্দেশনা দিলে সেলাই করে বাঁধ দেয়া হবে।
এছাড়া প্রকল্প মনিটরিং এর জন্য এমপি সাহেবের প্রতিনিধি বীরমুক্তিযোদ্ধা মইনুল ইসলাম ও উপজেলানির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জয় বলেন, আমাদের কমিটিতে রাখা হলেও কাজের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি এমনকি ইস্টিমেটওদেয়া হয়নি। শুধু একদিন বালুর বস্তা গননার জন্য জন্য তাদের ডাকা হয়েছিল।
সাতক্ষীরা প্রকল্প জনদূভোর্গ পানি উন্নয়ন বোর্ড
মন্তব্য করুন
প্রমত্তা যমুনার বুকে এক রেখায় সম্পূর্ণ দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু। নির্মাণাধীন সেতুটির ৪৯টি স্প্যানের সব বসে যাওয়ার পর গত মাসেই সেতুর ৪.৮ কিলোমিটারের সম্পূর্ণটা দৃশ্যমান হয়েছে। বর্তমানে কিছু জায়গায় চলছে সংযোগের কাজ। সেতু নির্মাণ প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ করে চলতি বছরের শেষ নাগাদ উদ্বোধনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বর্তমানে পুরোদমে এগিয়ে চলছে বাকি কর্মযজ্ঞ।
এরই মধ্যে সেতুতে দেড় কিলোমিটার রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। তারপর আগামী আগস্টে সেতুটিতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে। এর পরই প্রমত্তা যমুনার বুকে ছুটবে দ্রুতগতির ট্রেন।
ট্রেন চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়ার পর বাড়বে রেলের সক্ষমতা। সেতুটির মাধ্যমে দেশের পূর্বাঞ্চল রেল ও পশ্চিমাঞ্চল রেল নতুন আঙ্গিকে যুক্ত হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাকি কাজ শেষ করতে প্রকল্প কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন শ্রমিকরা। সেহেতু রেললাইন বসানো, বাকি অংশের সংযোগ স্থাপন, টেলিকমিউনিকেশন, স্টেশন নির্মাণসহ সব ধরনের কাজই সমানতালে এগিয়ে চলেছে। সেতুর দুই পারের ১৩ কিলোমিটার সংযোগ রেললাইনের অর্ধেক এরই মধ্যে বসে গেছে।
বঙ্গবন্ধু রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সেতুর কাজ প্রায় শেষ। সেতুর ওপর রেললাইন বসানো শুরু হয়ে গেছে। আগামী ডিসেম্বরে উদ্বোধনের পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এখন কাজ করছি।’
বঙ্গবন্ধু রেল সেতু চালু হলে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের বর্তমান অবস্থা পাল্টে যাবে। মূলত যমুনা নদী রেলওয়ের দুই অঞ্চলকে বিভক্ত করে রেখেছিল।বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর পূর্বাংশ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম পর্যন্ত এলাকা পূর্বাঞ্চল। আর সেতুর পশ্চিমাংশ থেকে রাজশাহী, খুলনাসহ পশ্চিমাঞ্চল।
এই দুই অঞ্চলের রেললাইনের ধরন আলাদা। পূর্বাঞ্চলের রেললাইনের প্রায় পুরোটায় মিটার গেজ ট্রেন চলাচল করে। এই ট্রেনগুলো প্রস্থে ছোট হওয়ায় রেললাইনগুলোও সরু। আর পশ্চিমাঞ্চলের রেললাইনে বেশির ভাগ চলাচল করে ব্রড গেজ ট্রেন। ফলে রেললাইনও বড়।
বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুতে বর্তমানে রয়েছে এক লাইনের রেল ট্র্যাক। এই লাইন দিয়ে খুব ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল করে। পূর্ব স্টেশন থেকে একটি ট্রেন ছাড়লে পশ্চিম স্টেশনের ট্রেনকে অপেক্ষায় থাকতে হয়। নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেল সেতু ডুয়াল গেজ রেল সেতু। সেতুটি দিয়ে ব্রড গেজ ও মিটার গেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে। ফলে সেতু পারাপারে অন্য পারে আর ট্রেনকে অপেক্ষায় থাকতে হবে না।
১৯৯৮ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেল সংযোগ চালু হয়। সেতুটির ওপর দিয়ে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৪৩.৭০ কিলো-নিউটন/মিটার ওজন বহনের অনুমতি রয়েছে। ট্রেনে বেশি বগি যুক্ত করার সুযোগও নেই। সঙ্গে রয়েছে এক লাইনের সীমাবদ্ধতা। ফলে বেশি ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
রেলের তথ্য মতে, বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে বর্তমানে দিনে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করছে। নতুন সেতু চালু হলে দিনে চলবে ৮৮টি ট্রেন। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যেখানে ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে, সেখানে নতুন এই রেল সেতুতে ব্রড গেজ ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং মিটার গেজ ট্রেন ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে। এতে সময়ও বাঁচার পাশাপাশি ট্রেন চলাচলের সময় প্রায় ৩৫ মিনিট কমে আসবে।
একই সঙ্গে নতুন সেতুটি সার্ক, বিমসটেক, সাসেক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রেলওয়ে রুট এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশে পরিণত হতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে নানা জটিলতা কাটিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে।'
২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হলেও মূল কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১০ আগস্ট। দুই ভাগে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান আছে।
প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত ১ মে পর্যন্ত নির্মাণ কাজের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮৪ শতাংশ। আর আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৬২.৫ শতাংশ।
সেতুর মোট ৫০টি খুঁটির মধ্যে ৫০টিই বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এই ৫০টি খুঁটির মধ্যে রেলের পশ্চিমাঞ্চলে ২৩টি আর পূর্বাঞ্চলে ২৭টি খুঁটির অবস্থান।
যমুনা নদীর ওপর রেলপথ পুরনো হলেও নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে ৩০ কিলোমিটার রেললাইন। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে নির্মিত হচ্ছে ডুয়াল গেজ ডাবল লাইনের মূল সেতুটি। এর সঙ্গে সেতুর দুই প্রান্তে থাকছে দশমিক ০৫ কিলোমিটার সংযোগ সেতু, ৭.৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে সংযোগ বাঁধ এবং লুপ ও সাইডিংসহ মোট ৩০.৭৩ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।'
জানতে চাইলে পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে এই রেল সেতু দেশের রেল ব্যবস্থায় প্রভাব রাখবে। কারণ, যমুনা নদী রেল ব্যবস্থাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে রেখেছিল। এখন ডুয়াল গেজ লাইন নির্মাণ হওয়ায় ব্রড গেজ ও মিটার গেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে।’
প্রসঙ্গত, নতুন রেল সেতুটি নির্মাণে প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। প্রথম সংশোধনীর পর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। আর জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ।'
বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতি
মন্তব্য করুন
নরসিংদীর মাধবদীতে সিটি (প্রাঃ) হাসপাতালে সিজারের পর রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পরিবার ও এলাকাবাসী হাসপাতালের দায়িত্ব অবহেলায় মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন ।
জানা যায় রবিবার (১৯ মে) রাত ১১টায় বথুয়াদী গ্রামের ইয়ামিনের স্ত্রী ছনিয়া আক্তার (২০) বাচ্চা প্রসবের ব্যাথ্যা হলে মাধবদী সিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে বাচ্চা জন্মদানের পর রোগীর মৃত্যু হয়।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, আজ সোমবার (২০ মে) বেলা ১১টা পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানের জন্য হাসপাতালেই লাশ পরেছিল। পরে ভুক্তভোগীর পরিবারকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশাল অংকের অর্থের বিনিময়ে চুপ থাকতে বলে।
এবিষয়ে মৃত ছনিয়ার স্বামী বলেন মোঃ ইয়ামিন বলেন, ‘সিজার করার পর রোগী অসুস্থ হয়ে যায়। সারারাতই রোগী কষ্ট পায়। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডাক্তার আনার কথা বললেও ডাক্তার আসেনি। অন্য হাসপাতালে নেওয়ার কথা বললেও তারা রোগী নিয়ে যেতে দেয়নি।’
রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে মাধবদী সিটি হাসপাতালের ম্যানেজার জাকির হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘রাত ১১টায় রোগী ভর্তি হয়। রাত ১২টার সময় ডাঃ শের ই মোস্তফা সিজার করলে একজন ছেলে বাচ্চার জন্ম হয়। পরে রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালের নিয়মিত ডিউটি ডাক্তার সুমন কুমার নাথ চিকিৎসা করেন। এসময় অন্যকোন ডাক্তার ছিলোনা। রোগী ভোর ৫টায় মৃত্যুবরণ করেন।’
হাসপাতালের নিয়মিত ডিউটি ডাক্তার সুমন কুমার নাথ বলেন, রাতে যখন নিয়ে আসে তখন আমরা বলেছিলাম যে রোগীর অবস্থা ভালো নয়। রোগী ও বাচ্চা দুইজনই মারা যেতে পারে। আমরা সিজার করাতে পারব না। কিন্তু রোগীর গার্জিয়ানের কথায় আমরা সিজার করিয়েছি।’
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মাধবদী সিটি হাসপাতালের এমডি মোঃ তানিনের সাথে কথা বলতে হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে কল দিলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য যে মাধবদীর হাসপাতাল গুলোতে কয়েকদিন পরপর রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। গত বছরের মার্চ মাসে মাধবদী প্রাইম জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারের অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় ফাবিহা মাদেহা নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। গত রমজান মাসে মাধবদী হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে সিজার করার আগ মুহূর্তে রোগীকে এনেস্থিসিয়া দেয়ার কিছুক্ষণ পর মৃত্যুবরণ করে। পেটে থাকা বাচ্চাটিকেও পরে বের করা হয়নি। ফলে এক সাথে দুইটি জীবন চলে গেলো।
তাই এলাকাবাসী হাসপাতালগুলোতে সিভিল সার্জনের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন। প্রশাসনের তদারকির মাধ্যমে যেসকল হাসপাতাল পরিচালনার যোগ্য নয় তাদের অনতিবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করেন। পাশাপাশি অত্র অঞ্চলের জন্য একটি সরকারি হাসপাতাল নির্মানের দাবী জানান।
রোগী মৃত্যু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিজার
মন্তব্য করুন
বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক সরকার মন্ত্রিসভা বৈঠক
মন্তব্য করুন
নীলফামারীতে কৃষি মন্ত্রনালয়ের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টর প্রদান করা হয়েছে কৃষককে।
সোমবার (২০ মে) নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে চাবি তুলে দিয়ে কম্বাইন হারভেস্টর প্রদান করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান। এতে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ।
এসময় জানানো হয় ৩০লাখ ৫০হাজার টাকা দামের এই কৃষি যন্ত্র সুবিধাভোগী কৃষকরা পাবেন ১৫লাখ ২৫ হাজার টাকা দামে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ জানান, 'এই কৃষি যন্ত্রের ফলে শ্রমিক সংকট দুরীকরণ, অর্থনৈতিক ও সময় সাশ্রয় হবে কৃষকের। পাশাপাশি এক যন্ত্র দিয়ে ধান কর্তন ও মাড়াই করতে পারবেন কৃষকরা। এরফলে লাভবান হবেন কৃষকরা। সদর উপজেলায় পাঁচজনকে এই কৃষি যন্ত্র প্রদান করা হবে।'
কৃষি যন্ত্র কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প
মন্তব্য করুন
আগামী ৫ জুন থেকে শুরু হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় ও বাজেট অধিবেশন। ওই দিন বিকাল ৫টা থেকে জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহ্বান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
সোমবার জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাজেট নিয়ে হওয়া এবারের অধিবেশন দীর্ঘ হবে বলে জানা গেছে। ৫ জুন অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে সংসদের কার্য উপদেষ্টা বৈঠকে সংসদ কত দিন চলবে তা নির্ধারণ করা হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন চলতি মাসের ২ তারিখ হতে শুরু হয়ে ৯ মে শেষ হয়। ওই অধিবেশনে একটি বিল পাশ হয়।
বাজেট অধিবেশন অর্থনীতি জাতীয় সংসদ
মন্তব্য করুন
প্রমত্তা যমুনার বুকে এক রেখায় সম্পূর্ণ দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু। নির্মাণাধীন সেতুটির ৪৯টি স্প্যানের সব বসে যাওয়ার পর গত মাসেই সেতুর ৪.৮ কিলোমিটারের সম্পূর্ণটা দৃশ্যমান হয়েছে। বর্তমানে কিছু জায়গায় চলছে সংযোগের কাজ। সেতু নির্মাণ প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ করে চলতি বছরের শেষ নাগাদ উদ্বোধনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বর্তমানে পুরোদমে এগিয়ে চলছে বাকি কর্মযজ্ঞ।