ইনসাইড বাংলাদেশ

ভিসা নিষেধাজ্ঞাই শেষ না, আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে


প্রকাশ: 28/09/2023


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নজরদারি এবং দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, তাদের বিশেষ নজরের কারণেই বাংলাদেশের শেষ পর্যন্ত একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে। আর এই নজরদারি এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যে ব্যবস্থা তা শুধুমাত্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিভিন্ন সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বরং তারা ধাপে ধাপে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তাদের মূল পরিকল্পনা হলো শেষ পর্যন্ত একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামীতে আর কি কি পদক্ষেপ নিতে পারে?

১. আরও ভিসা নিষেধাজ্ঞা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম পর্যায়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর কয়েকজনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই সংখ্যা কত তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী এটি চার শতাধিক। তবে এটি অনুমিত একটি তথ্য। সঠিক তথ্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়েই বসে থাকবেন না। এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত নজরদারি বাংলাদেশের ওপর আছে। যেখানেই অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন বিরোধী কর্মকান্ড লক্ষ্য করা যাবে এবং যেখানে কোনো ঘটনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নজরে আসবে যাতে প্রমাণিত হয় যে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার পক্ষে এটি বাধা সেখানেই যুক্তরাষ্ট্র ভিসার নীতি প্রয়োগ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সামনের দিনগুলোতে অর্থাৎ আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সহ আরও একাধিক ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

২. বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা: ভিসা নিষেধাজ্ঞার বাইরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্য ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। সেই সমস্ত নিষেধাজ্ঞা গুলো কি হবে বা কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা হবে তা পর্যায়ক্রমে জানানো হতে পারে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। 

৩. সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত: যে সমস্ত বাংলাদেশির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ রয়েছে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় পদক্ষেপ। বিশেষ করে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বা যারা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধাগ্রস্ত হবে তাদের মধ্যে থেকে যদি কারো আত্মীয়স্বজন, পরিজনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ থাকে সেই সম্পদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাজেয়াপ্ত করতে পারে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। 

৪. বাণিজ্য সংকোচন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সবচেয়ে বড় বাজার। প্রায় নয়শো কোটি ডলারের রপ্তানি হয় প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি এই ব্যবসা-বাণিজ্য সংকোচনের নীতি ঘোষণা করতে পারে। তবে একটি সূত্র বলছে, এটি হবে নির্বাচনের পর। বাংলাদেশের নির্বাচন যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য না হয় সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে কোনো পণ্য না কেনার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এটি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।

৫. সামরিক সহায়তা বন্ধ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি নির্বাচনের আগে সামরিক সহায়তা হ্রাস করা বা বন্ধ করার পদক্ষেপও নিতে পারে এবং এই সহায়তা বন্ধ করলে মার্কিন অর্থায়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর জন্য যে অস্ত্র গোলাবারুদ ইত্যাদি কেনা হয় তা রোহিত করা হবে। 

৬. অর্থনৈতিক অবরোধ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ এবং সবচেয়ে ভয়ঙ্কর নিষেধাজ্ঞার অস্ত্র হলো অর্থনৈতিক অবরোধ। এটি অবরোধের শেষ ধাপ। তবে মার্কিন সূত্রগুলো বলছে, তারা ধাপে ধাপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। একবারেই সব কিছু করতে চায় না। ভিসা নিষেধাজ্ঞার পর তারা পরিস্থিতির কতটুকু উন্নতি হয়, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণের পরই পরবর্তী ধাপের ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭