টেক ইনসাইড

ফেসবুক কাঠগড়ায়: তথ্য বিক্রির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/03/2018


Thumbnail

ব্যবহারকারীদের তথ্য অন্যের কাছে বিক্রি করা নিয়ে বহুদিন ধরেই জায়ান্ট সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক সমালোচনার মুখে আছে। তথ্য অপব্যবহারের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে জন্য নতুন কিছু না। বিভিন্ন সময় এদের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ থেকেই ধারণা করা হচ্ছে যে এবার হয়তো ফেসবুক তদন্তের মুখে পড়বে।

ব্যবহারকারীর তথ্য নিয়ে ফেসবুক কী করছে, সে প্রশ্ন ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে। এর ব্যবসায় প্রণালী নিয়েও দ্বন্দ্ব আর মতভেদ আছে। আর তাই ফেসবুকের বিরুদ্ধে তদন্ত আশা করছেন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পক্ষ রাজনীতিবিদেরা।

২০১৪ সাল থেকে একটি রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের পাঁচ কোটির মতো গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য পেয়েছে। তবে গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশের আগেই গত শুক্রবার ফেসবুক এক ব্লগ পোস্টে জানায়, ট্রাম্প শিবিরের প্রচারণার জন্য পরিচিত একটি ডাটা কোম্পানিকে তাদের বেশকিছু গ্রাহকের তথ্যে প্রবেশাধিকার দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি এসব তথ্য এখনো মুছে ফেলেনি। এর আগে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া প্রভাব বিস্তারে ফেসবুকের প্লাটফর্ম ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ফেসবুকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

মার্কিন ডেমোক্রেটিক দলের সিনেটর অ্যামি ক্লোবুচর এক টুইট বার্তায় লিখেছেন— এটা স্পষ্ট যে, ইন্টারনেট প্লাটফর্মগুলো তাদের সুরক্ষা দিতে পারবে না। ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গের বক্তব্য তুলে ধরে অ্যামি ক্লোবুচর বলেন, তাদের বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে। মার্ক জাকারবার্গকে সিনেট বিচার বিভাগীয় কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে হাজির করা উচিত।

ফেসবুকের তথ্যমতে, গ্রাহক তথ্যের অপব্যবহার নিয়ে সমস্যার মূলে রয়েছে গবেষক ও ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা। এতে তাদের নীতিমালার অপব্যবহার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার জন্য ফেসবুকের সমালোচকরা সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টটিকে দায়ী করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের পক্ষে তারা ফেসবুকের কাছে এ বিষয়ে জবাব চেয়েছেন ও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।

ফেসবুক জানায়, তথ্যের অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে, তবে তথ্য চুরি হয়নি। কারণ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এতে অনুমতি দিয়েছিল।

অভিযোগ উঠেছে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল ফেসবুক। ওই অ্যাপের মাধ্যমেই কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। সেই তথ্য পরে ব্যবহার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের কাজে। এ কাজের সঙ্গে জড়িত এক অধ্যাপক সম্প্রতি মুখ খোলায় প্রকাশ্যে এসেছে সবকিছু। এখন পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদেরা।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা তাদের তথ্য বেহাত হওয়ার খবরগুলো পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ২০১৪ সালে ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা সব তথ্য তারা মুছে ফেলেছিল। তথ্য সুরক্ষা নিয়মের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, এ বিষয়টি জানার পর তারা এই পদক্ষেপ নেয়।

২ লাখ ৭০ হাজার গ্রাহক এক গবেষককে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। তবে গবেষক এসব তথ্য ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে বিক্রি করেছে, যা ফেসবুকের নীতিমালার পরিপন্থী।

গত শুক্রবার ফেসবুক জানায়, ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা ও গবেষক উভয়ই তাদের নীতি ভেঙেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। আবার ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা জানায়, তারা সব তথ্য মুছে ফেলেছে। যারা এসব তথ্য সরবরাহ করেছে, তারাই মূলত এর জন্য দায়ী।

এদিকে আবার অভিযোগ আছে যে ফেসবুক ২০১৫ সাল থেকে গ্রাহক তথ্যের অপব্যবহার সম্পর্কে জানলেও গত শুক্রবারের আগ পর্যন্ত তা প্রকাশ পর্যন্ত করেনি!

এতে করে ফেসবুকের সম্পদ আর শেয়ারের লোকসানের পরিমাণ ক্রমেই কমতির দিকে যাচ্ছে। এই বিতর্ক আর আইনি লড়াই চালিয়ে জাকারবার্গ আর তার ফেসবুককে কোন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় তা এখন দেখার বিষয়।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭