এডিটর’স মাইন্ড

রাতভর বৈঠক: বিএনপি কি নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলবে?


প্রকাশ: 17/11/2023


Thumbnail

দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আন্দোলনের কৌশল এবং নির্বাচন ইত্যাদি নিয়ে গতকাল রাতভর বিএনপির নেতাদের মধ্যে আলাপ আলোচনা হয়েছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ঢাকায় বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে জুমে বৈঠক করেছিলেন। এই বৈঠকে বিভিন্ন নেতারা তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। তারেক জিয়া তাদের বক্তব্য শুনেছেন। তবে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। মজার ব্যাপার হল যে অধিকাংশ নেতাই এখন নির্বাচনের তফসিলের পর আন্দোলনের বদলে একটি কৌশলগত অবস্থান গ্রহণের জন্য তারেককে পরামর্শ দিয়েছেন। তবে তারেক জিয়া এই পরামর্শের ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—এমন কোন খবর পাওয়া যায়নি। 

বিএনপির নেতারা মনে করছেন যে, এখন নির্বাচনের তফসিল যেভাবে ঘোষণা করা হয়েছে তাতে নির্বাচন করা অসম্ভব। আবার যদি নির্বাচন না করা হয় তাহলে সরকার একতরফা ভাবে নির্বাচন করবে এবং এখন তারা যেভাবে প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা নিয়েছে তাতে সেই নির্বাচন ২০১৪ এর মতো না। বরং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের মাঠে এনে আওয়ামী লীগ একটি সাজানো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে বলেই মনে করছেন বিএনপির অনেক নেতা। এরকম নির্বাচন যদি শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ করে ফেলে তাহলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতার কোন সমস্যা হবে না। 

বিএনপির অধিকাংশ নেতাই মনে করছেন যে, এভাবে আন্দোলন করে আর যাই হোক নির্বাচন ঠেকানো যাবে না। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী—এরকম আলোচনায় বিএনপির অধিকাংশ নেতারাই কৌশলগত কারণে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তবে এই মতামতের দুটি অংশ রয়েছে। কোনো কোনো নেতা বলেছেন, কৌশলগত কারণে তারা নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিবে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করবে। নির্বাচনের তফসিল পেছানোর জন্য অনুরোধ করা হবে এবং মনোনয়নপত্র জমাও দেওয়া হবে। এরপর সরকার যে নির্বাচন নিয়ে কারচুপি গুলো করে বা অনিয়মগুলো করে সেগুলো আন্তর্জাতিক মহলে উপস্থাপন করা হবে। জনগণের কাছে দেখানো হবে এবং একটা পর্যায়ে প্রয়োজন হলে নির্বাচন থেকে বিএনপি সরে আসবে। আবার অন্যরা মনে করছেন যে নির্বাচন থেকে সরে না এসে এরকম একটি অবস্থান অবস্থা নিয়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা এবং যে কটি আসন পাওয়া যায় তা নিয়ে আবার নতুন করে আন্দোলন গড়ে তোলাটাই যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু বিএনপির কোনো নেতা প্রশ্ন করেছেন যে, বিএনপি যদি নির্বাচনেই যাবে তাহলে এত রক্তক্ষয়ের দরকার কি ছিল? এত আন্দোলনের প্রয়োজন কি ছিল? সরকার চাইছে না বিএনপি নির্বাচনে আসুক, এজন্য বিএনপি নেতা কর্মীদের ওপর জেল, জুলুম ও হামলা ইত্যাদি করা হয়েছে বলে কোনো কোনো নেতা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা বলেছেন যে এখন সরকার বিএনপিকে ন্যূনতম ছাড় দেবে না। অথচ যদি আগে আমরা দরকষাকষি করতাম তাহলে আছে কিছু ছাড় পাওয়া যেত। অন্তত দলের শীর্ষনেতারা গ্রেপ্তার এড়াতে পারত। তাহলে নির্বাচনের মাঠে বিএনপি ভাল করত। 

তবে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া এখন পর্যন্ত নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষেই তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন যে, আন্দোলন এ ভাবেই চলবে এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচন পর্যন্ত আন্দোলনকে অব্যাহত রাখতে হবে। তবে বিএনপি নেতাদের সিংহভাগই এখন তারেকের সঙ্গে একমত নন। কারণ আরও ৫০ দিন আন্দোলনকে টেনে নিয়ে যাওয়ার মতো শক্তির রসদ কোনোটাই বিএনপির হাতে নেই। এরকম একটি বাস্তবতায় শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি নির্বাচনে যাওয়ার কৌশল নেয় সেটাই তাদের জন্য ভাল হবে। বৈঠকের শেষ পর্যায়ে বিএনপির একজন নেতা নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলার প্রস্তাব দিয়েছেন যেন তফসিল পিছানো যায় যায়। এই প্রস্তাবের ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তারেক জিয়া জানিয়েছেন যে, তিনি দুই একদিনের মধ্যেই এ সম্পর্কে তার অভিমত জানাবেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭