ইনসাইড বাংলাদেশ

ফখরুলকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বললেন খালেদা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 31/03/2018


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়া তাঁর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। ক্ষুব্ধ বেগম জিয়ার তীব্র আপত্তির মুখেই মাঝপথ থেকে ফিরে যান মির্জা ফখরুল। শুক্রবার বেগম জিয়া তাঁর পুত্রবধূ এবং বোনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সাক্ষাতে তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে মন্তব্য করেন। এজন্যই তিনি তাঁর পরিবারকে দলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বেগম জিয়ার পরিবার এবং কারা সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বেগম জিয়া মনে করছেন, সিনিয়র নেতারা তাঁর সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করছেন। সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার করে, ওই নেতারা শুধু নিজেদের জন্য সুবিধা আদায় করছেন। বেগম জিয়া এটাও মনে করেন, সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং আইনজীবীদের জন্যই তাঁর কারাবাস দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এ কারণেই, তাঁর পরিবারের সদস্যদের দিয়েই বিএনপি পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন দুর্নীতির অভিযোগে দন্ডিত বেগম খালেদা জিয়া।

জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠরা বলেছেন, বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হবার পরপরই তাঁর মুক্তির জন্য সমঝোতার উদ্যোগ নেন শামীম ইস্কান্দার। এই সমঝোতা প্রক্রিয়া অনেকদূর এগুনোর পর হঠাৎ এর সঙ্গে যুক্ত হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতা। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তারা বেগম জিয়ার মুক্তির সঙ্গে নির্বাচন এবং আসন ভাগাভাগি পর্যন্ত যুক্ত করা শুরু করে।  জিয়া পরিবারের দাবি, ব্যক্তিগত লাভের আশায় এরা মুক্তি প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, একপর্যায়ে শামীম ইস্কান্দারকে পাশ কাটিয়ে মির্জা ফখরুলই যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কারাগারে থাকলেও এই খবর ঠিক পৌঁছে বেগম জিয়ার কাছে।

সূত্রমতে, সমঝোতার খুটিনাটি চূড়ান্ত করতে মির্জা ফখরুল বৃহস্পতিবার নাজিমউদ্দিন রোডে বন্দী বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদন করেন। এই সাক্ষাতের ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব দলকেও অন্ধকারে রাখেন। দলের নেতাদের তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন।’ কিন্তু বিপত্তি ঘটে তখনই যখন বেগম জিয়া জানতে পারেন যে, মির্জা ফখরুল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসছেন। তিনি ফখরুলের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপরই অসুস্থতার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

জেল সূত্রে জানা গেছে, বেগম জিয়ার আগ্রহেই শুক্রবার প্রয়াত কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। শর্মিলাকে তিনি তাঁর (বেগম জিয়ার) মুক্তির সঙ্গে অন্য কিছু না জড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি শুধু উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান, কবে তিনি দেশে ফিরতে চান তাও উহ্য রাখতে চান। শুধু এটুকু বলতে চান, ‘যতদিন তাঁর চিকিৎসা চলবে ততদিন তিনি বিদেশে অবস্থান করবেন। বেগম জিয়া এখনই নির্বাচনের ব্যাপারে হ্যাঁ বা না কিছু বলতে রাজি নয়। মূলত এই বিষয়গুলো নিয়েই বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ। একাধিক সূত্র বলছে, বেগম জিয়া বলেছেন, নির্বাচনে যাওয়া বা না যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এখনই না। এটা নির্ভর করবে সে সময়ের পরিবেশ এবং পরিস্থিতির উপর। এসব নিয়ে বিরোধে তিনি সিনিয়র নেতাদের দুষছেন। এখন দল না তাঁর আত্মীয়রাই তাঁর মুক্তির পথ তৈরি করছে এবং সেটি তারা করতে চান বিএনপিকে নিষ্ক্রিয় রেখে। আর সেই কাজটি করবেন প্রয়াত কোকোর স্ত্রী।

এদিকে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার মেডিকেল রিপোর্ট সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন সিঁথি। বেগম জিয়ার আত্মীয় স্বজনরা আশা করছেন এসব কাগজ পত্র আদালতে জমা দিলে, সহজেই তাঁর জামিন এবং লন্ডন যাওয়ার সুযোগ হবে। একজন চিকিৎসক তাঁর ব্যবস্থাপত্রে ছয় মাস পর বেগম জিয়াকে আবার দেখা করতে বলেছিলেন।

একাধিক সূত্র বলছে, সরকার তাঁর বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে নমনীয়। তবে, বেগম জিয়া নির্বাচন না করলেও বিএনপি যেন নির্বাচনে আসে সে ব্যাপারে সরকার আগ্রহী।




Read In English: https://bit.ly/2J97Djw


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭