ইনসাইড পলিটিক্স

কোন্দল বন্ধ করতে আওয়ামী লীগের পাঁচ কৌশল


প্রকাশ: 29/01/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগের এখন প্রধান সমস্যা হল দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানো। নির্বাচনের সময়ে আওয়ামী লীগের যে কৌশল সেই কৌশলের কারণে সারাদেশে কোন্দল ছড়িয়ে পড়েছে। এখন মারামারি হানাহানি নিত্যকার ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহল মনে করছে, দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেছে এবং দলের ঐক্য টিকিয়ে রাখাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। কারণ সামনের দিনগুলোতে বিএনপি আবার নতুন করে আন্দোলন করব। দল যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকে, দলের মধ্যে যদি প্রকাশ্য বিভক্তি থাকে সে ক্ষেত্রে এর সুযোগ নেবে বিরোধী পক্ষরা। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ তাদের দলের অনৈক্য এবং বিরোধ বন্ধের জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। 

পাঁচটি কৌশল গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ তার অভ্যন্তরীণ কোন্দল থামানোর জন্য। এর মধ্যে রয়েছে;

১. স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বার্তা: গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি অভ্যন্তরীণ কোন্দল আজকে থেকে বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা দেন। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের এমপিদেরকে একই রকম নির্দেশনা দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই নির্দেশনার ফলে দুই পক্ষ অর্থাৎ যারা আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন এবং যারা স্বতন্ত্র ছিলেন তাদের বিরোধের অবসান ঘটবে এবং শান্তিপূর্ণ সহবস্থানে তারা আসার চেষ্টা করবে।

২. সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে নির্দেশনা: আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে দলের সব সাংগঠনিক সম্পাদকদের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় কোন্দল বন্ধের জন্য তারা যেন উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং কোন্দলরত নেতাদের দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে, আলাপ আলোচনা করে সে ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সাংগঠনিক সম্পাদকরা ইতোমধ্যেই কোন্দলে জর্জরিত এলাকাগুলোর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলছেন। তারা স্থানীয় পর্যায়ে সফরে যাবেন বলেও নির্ধারিত হয়েছে। তবে সাংগঠনিক সম্পাদক তাদের নিজ নিজ বিবেচনায় এবং সুবিধা অনুযায়ী কোন্দলরত নির্বাচন এলাকাগুলো সফর করবেন। 

৩. দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী: যে সমস্ত নির্বাচনী এলাকাগুলোতে অধিক কোন্দল, যেখানে সন্ত্রাস সহিংসতা বেশি, সেখানে বিজয়ী এবং পরাজিত উভয় পক্ষকেই আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর দুই পক্ষের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে একটি সমঝোতার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তবে একাধিক সূত্র বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নেবেন শেষ উদ্যোগ। আর আগেই দলের সাধারণ সম্পাদক উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন বলে জানা গেছে। 

৪. সতর্কবার্তা দেওয়া হবে: নির্বাচনে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল, তাদের কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। গতকালও গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আওয়ামী লীগে যারা যে পদে ছিলেন সেই পদে থাকবে। কিন্তু এরপরও যদি কেউ কোন্দল করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

৫. উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতা না করা: উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক তুলে নিয়েছে। দলীয় প্রতীক ছাড়া এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কমাতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। কোন্দল কমানোর মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষকেই একটি সুষ্পষ্ট বার্তা দেয়া হয়েছে। এটির ফলে আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে এবং যে ব্যক্তি সংগঠন বিরোধী তৎপরতা করবে, সন্ত্রাস, সহিংসতার সাথে জড়িত থাকবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই পাঁচ কৌশল করে আওয়ামী লীগ যত দ্রুত সম্ভব দলের নির্বাচন কেন্দ্রিক কোন্দল কমাতে চায়। এখন দেখার বিষয় এই কোন্দল শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কমাতে পারে কিনা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭