ইনসাইড বাংলাদেশ

টেকনোক্রেট মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে কারা?


প্রকাশ: 21/02/2024


Thumbnail

সংসদীয় গণতন্ত্রে মন্ত্রিসভার সদস্য হতে হলে সংসদ সদস্য থাকতে হয়। তবে তার ব্যতিক্রম রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভার মোট সদস্যের এক দশমাংশ অনির্বাচিত বা টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী থাকতে পারবেন। বর্তমানে নতুন যে মন্ত্রিসভা আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে এই মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৩৭ জন। ৩৭ জনের মন্ত্রিসভায় তিনজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী থাকতে পারেন। তবে আওয়ামী লীগ নতুন মন্ত্রিসভায় এখন পর্যন্ত দুইজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছে। এদের মধ্যে একজন হলেন টানা তিনবারের মন্ত্রী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। আর অন্যদিকে এবার মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বড় চমক ডা. সামন্ত লাল সেন। এখনও টেকনোক্র্যাট কোটায় একটি মন্ত্রীর পদ খালি আছে। এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সংসদে মহিলা আসনগুলো চূড়ান্ত হওয়ার পর তারা মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করবে। 

বিভিন্ন সরকারি সূত্রগুলো বলছে, আরও ১০ থেকে ১২ জন নতুন মন্ত্রী মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে পারেন। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একজন পূর্ণমন্ত্রী, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে একজন মন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে একজন মন্ত্রী। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা রয়েছে। 

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে নতুন কোন প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়নি। সেখানে একজন প্রতিমন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি বিবেচিত হচ্ছে। এই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণে কারা যুক্ত হবেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা রকম আলাপ আলোচনা চলছে। তবে আওয়ামী লীগের নেতারাই স্বীকার করছেন যে, একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া এ বিষয়ে কেউ কিছু জানেন না। তবে মন্ত্রিসভার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে জল্পনা কল্পনা, আলাপ আলোচনা থেমে নেই। এই আলাপ আলোচনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে কারা মন্ত্রী হতে পারেন, সেই বিষয়টি। মন্ত্রিসভায় আরও বেশি রাজনৈতিক মুখ আনার পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ কথা বলছেন, তাদের মতামত দিচ্ছেন। বিশেষ করে রাজপথে যারা সক্রিয় ছিলেন, নেতাকর্মীদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এমন ব্যক্তিদেরকে মন্ত্রিসভায় সম্পৃক্ত করা উচিত বলে অনেকে মনে করেন। 

সরকার সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু টেকনোক্রেট মন্ত্রী যুক্ত হতে পারেন। এখন মন্ত্রিসভা যদি বড় হয় এবং সেটি যদি ৪০ এর ওপরে যায় তাহলে আরও দুজন টেকনোক্রেট মন্ত্রীর মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাধীন বিষয়। মন্ত্রিসভায় কারা নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন এ নিয়ে বিভিন্ন আলাপ আলোচনা চলছে। এদের মধ্যে দুইজন আমলার টেকনোক্রেট মন্ত্রী হওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। 

কবির বিন আনোয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। পিএলআরে থাকার কারণে এবং নির্বাচনী আইনে তিন বছরের বিধিনিষেধের কারণে তিনি নির্বাচন করতে পারেননি। আবার নির্বাচনের পরপরই তার পিএলআর শেষ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি আওয়ামী লীগে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগদান করেছেন। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে নির্বাচন পরিচালনায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। যদিও সরকারি চাকরির বাধ্যবাধকতার কারণে তাকে কোনো আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তিনি উপদেষ্টা হতে পারেন এমন গুঞ্জন ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ড. কামাল নাসের চৌধুরী উপদেষ্টা হন। এখন কবির বিন আনোয়ার মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। টেকনোক্রেট কোটায় থাকে মন্ত্রিসভায় আনার কথা শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন হয়তো তিনি মন্ত্রিসভায় থাকবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে তাকে দেখলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

অন্যদিকে নির্বাচনের পরপরই বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করে আলোচনায় আছেন ড. আহমদ কায়কাউস। আহমদ কায়কাউস আসতে পারেন মন্ত্রিসভায় এমন গুঞ্জন সব মহলেই রয়েছে। যদিও আহমদ কায়কাউস তার ঘনিষ্ঠদেরকে বলেছেন যে, সহসাই সরকারের যোগদানে তার সম্ভাবনা খুবই কম। ড. কায়কাউস ছাড়াও গত মন্ত্রিসভায় যারা টেকনোক্রেট কোটায় বাদ পড়েছেন সেই দুইজনও চেষ্টা করছেন মন্ত্রিসভায় ফিরে আসার জন্য। তবে তাদের সম্ভাবনা খুবই কম।

সরকারের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী টেকনোক্রেট কোটায় দেওয়া হতে পারে। তবে এই দুইজন মন্ত্রী কারা হবেন বা প্রধানমন্ত্রী কাদেরকে পছন্দ করবেন সেটি একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিষয় বলেও তারা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭