ইনসাইড পলিটিক্স

তারেককে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যমত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/07/2018


Thumbnail

বাংলাদেশে দুই মামলায় দণ্ডিত আসামি তারেক জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই লন্ডনে অবস্থান করছে। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও সফলতা পায়নি বাংলাদেশ। তবে তারেককে ফিরিয়ে আনতে সম্প্রতি ভারতের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাম্প্রতিক সফরে তেমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বাংলাদেশ সফরের তৃতীয় ও শেষ দিন আজ রোববার সকালে তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের একান্ত বৈঠক হয়। এই বৈঠকে ‘কমন এনিমি’ বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে। সন্ত্রাসবাদের লালন পালনকারী, অর্থায়নকারী, সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদে যুক্ত, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দানকারী এদেরকেই কমন এনিমি হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর বাংলাদেশ-ভারতের কমন এনিমি যদি তৃতীয় কোনো রাষ্ট্রেও থাকে তাহলে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে দুই দেশ একই সঙ্গে কাজ করবে বলে সমঝোতা হয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বর্তমানে বন্দী-বিনিময় চুক্তি আছে। এই চুক্তিরই বর্ধিত অংশ হিসেবে যুক্ত হবে কমন এনিমি বিষয়ক সমঝোতা। এর আগে বন্দী বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে গ্রেপ্তার ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিবাদীদের দেশটির কাছে তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ। একইভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশের সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদীদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেকার বন্দী বিনিময় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই হয়েছে এবং তা কার্যকর ভাবে কাজ করছে। আর এখন কমন এনিমি সমঝোতার ফলে উভয় বাংলাদেশ-ভারতের কোনো অপরাধী যদি তৃতীয় কোনো দেশেও থাকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে দুই দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে। এর ফলে দুই দেশের সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান আরও সুসংহত হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে কমন এনিমি বিষয়ে সমঝোতা এই সময়ে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তারেক জিয়া বাংলাদেশে যেমন দুই মামলায় দণ্ডিত আসামি তেমনি জঙ্গিবাদী তৎপরতার অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। আর তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ আছে ভারতের শীর্ষ সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিমের। দাউদ ইব্রাহিম ভারতে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত একাধিক হামলা, জঙ্গিবাদী তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত। ভারতের অখন্ডতার জন্য হুমকি হিসেবেই দেখা হয় দাউদ ইব্রাহিমকে। ভারতে সন্ত্রাসের মূল হোতা এই দাউদের অন্যতম একজন সহযোগী হিসেবেই চিহ্নিত করা হয় তারেককে। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিল তারেক। এই হিসেবে তারেক জিয়া বাংলাদেশ-ভারতের কমন এনিমি হিসেবে বিবেচিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এর আগে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাজ্যকে বারবার বলা সত্ত্বেও কোনো সন্তোষজনক উত্তর পায়নি বাংলাদেশ। এখন তারেক জিয়াকে ফেরাতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে চাপ দিলে তা বিশেষ গুরুত্ব পাবে। সম্প্রতি ব্রেক্সিটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য। দেশটির অর্থনীতি ও বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভারতের কোনো অনুরোধ যুক্তরাজ্যের কাছে যথেষ্ট গুরুত্ব পাবেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, কমন এনিমি হিসেবে তারেককে যুক্তরাজ্য থেকে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে ফিরে দেশে ফিরে যাওয়া ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং কমন এনিমি বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে একমত হয়েছেন। এখন বাংলাদেশ-ভারত বন্দী বিনিময় চুক্তিতে বর্ধিত অংশ হিসেবে কমন এনিমি অংশটি যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর এই প্রক্রিয়ায় চুক্তি সম্পন্ন হলেই তারেক জিয়াকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ পাশে পাবে ভারতকে। 


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭