নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৩৩ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০১৮
বাংলাদেশে দুই মামলায় দণ্ডিত আসামি তারেক জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই লন্ডনে অবস্থান করছে। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও সফলতা পায়নি বাংলাদেশ। তবে তারেককে ফিরিয়ে আনতে সম্প্রতি ভারতের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাম্প্রতিক সফরে তেমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বাংলাদেশ সফরের তৃতীয় ও শেষ দিন আজ রোববার সকালে তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের একান্ত বৈঠক হয়। এই বৈঠকে ‘কমন এনিমি’ বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে। সন্ত্রাসবাদের লালন পালনকারী, অর্থায়নকারী, সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদে যুক্ত, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দানকারী এদেরকেই কমন এনিমি হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর বাংলাদেশ-ভারতের কমন এনিমি যদি তৃতীয় কোনো রাষ্ট্রেও থাকে তাহলে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে দুই দেশ একই সঙ্গে কাজ করবে বলে সমঝোতা হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বর্তমানে বন্দী-বিনিময় চুক্তি আছে। এই চুক্তিরই বর্ধিত অংশ হিসেবে যুক্ত হবে কমন এনিমি বিষয়ক সমঝোতা। এর আগে বন্দী বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে গ্রেপ্তার ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিবাদীদের দেশটির কাছে তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ। একইভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশের সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদীদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেকার বন্দী বিনিময় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই হয়েছে এবং তা কার্যকর ভাবে কাজ করছে। আর এখন কমন এনিমি সমঝোতার ফলে উভয় বাংলাদেশ-ভারতের কোনো অপরাধী যদি তৃতীয় কোনো দেশেও থাকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে দুই দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে। এর ফলে দুই দেশের সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান আরও সুসংহত হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে কমন এনিমি বিষয়ে সমঝোতা এই সময়ে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তারেক জিয়া বাংলাদেশে যেমন দুই মামলায় দণ্ডিত আসামি তেমনি জঙ্গিবাদী তৎপরতার অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। আর তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ আছে ভারতের শীর্ষ সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিমের। দাউদ ইব্রাহিম ভারতে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত একাধিক হামলা, জঙ্গিবাদী তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত। ভারতের অখন্ডতার জন্য হুমকি হিসেবেই দেখা হয় দাউদ ইব্রাহিমকে। ভারতে সন্ত্রাসের মূল হোতা এই দাউদের অন্যতম একজন সহযোগী হিসেবেই চিহ্নিত করা হয় তারেককে। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিল তারেক। এই হিসেবে তারেক জিয়া বাংলাদেশ-ভারতের কমন এনিমি হিসেবে বিবেচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর আগে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাজ্যকে বারবার বলা সত্ত্বেও কোনো সন্তোষজনক উত্তর পায়নি বাংলাদেশ। এখন তারেক জিয়াকে ফেরাতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে চাপ দিলে তা বিশেষ গুরুত্ব পাবে। সম্প্রতি ব্রেক্সিটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য। দেশটির অর্থনীতি ও বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভারতের কোনো অনুরোধ যুক্তরাজ্যের কাছে যথেষ্ট গুরুত্ব পাবেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, কমন এনিমি হিসেবে তারেককে যুক্তরাজ্য থেকে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে ফিরে দেশে ফিরে যাওয়া ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং কমন এনিমি বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে একমত হয়েছেন। এখন বাংলাদেশ-ভারত বন্দী বিনিময় চুক্তিতে বর্ধিত অংশ হিসেবে কমন এনিমি অংশটি যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর এই প্রক্রিয়ায় চুক্তি সম্পন্ন হলেই তারেক জিয়াকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ পাশে পাবে ভারতকে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।