ইনসাইড থট

অষ্টপ্রহরে মাইনাস শেখ হাসিনা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/07/2018


Thumbnail

আমাদের দেশের একটা বিশেষ শ্রেণির মানুষ অষ্টপ্রহর হিসেব করে কবে নির্বাচন আসবে। এই অষ্টপ্রহর কী তা একবার দেখে নিই। সময়ের সর্বনিম্ন একক হচ্ছে নিমিষ। চোখের পাতা পড়ার যে সময় তাকে এক নিমিষ বা পলক হিসেবে ধরা হয়। আর ১৫ নিমিষ=১ ক্ষণ। ১৫ ক্ষণ=১ লঘু। ৩০ লঘু=১ মুহূর্ত। ৩০ মুহূর্ত=১ দিবারাত্র বা ২৪ ঘণ্টা। ২৪ ঘণ্টা বা একদিন আবার ৮ প্রহরে বিভক্ত। নির্বাচন এগিয়ে এলেই সবাই প্রহর গুণে গুণে সুযোগ নেয়, এটা যেন আমাদের দেশের একটা কালচারে পরিণত হতে চলেছে। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও তাদের মিত্র মিডিয়ার সাহায্য নানা প্রপাগান্ডা করে সরকারকে চেপে কাহিল করে ফেলে। ফলে মাঝে মাঝে সরকারের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা হতে দেখা যায়। সরকার প্রধান বিচক্ষণ আর দেশপ্রেমিক হলে তাল সামাল দিতে পারেন, না হলে অনেক কিছুই এলোমেলো হয়ে যায়, যার প্রভাব থাকে সুদূরপ্রসারী। 

বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে যেহেতু সচিবগণ আর প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কারও কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবার ক্ষমতা নেই, তাই আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে দিন রাত সমানে কাজ করতে হয়। ফলে কাউকে না কাউকে বিশ্বাস করে মাঝে মধ্যে ঠিকমতো না পড়েই প্রধানমন্ত্রীকে সই করতে হয় ফাইলে। ফলে অনেক সময় সরকারের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন সিদ্ধান্তও এসে যায় সামনে। দেশে উন্নয়ন প্রকল্পের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অনেক বেশি ফাইলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা পড়ে। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি মাত্র ৫ ঘণ্টা ঘুমাই। বাকি ১৯ ঘণ্টা দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করি। আমার কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই। আমি চাই, বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্ত হোক। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হোক। আমি জাতির পিতার দেখে যাওয়া স্বপ্ন পূরণ করতে চাই’।

এক জরিপে দেখা গেছে যে, দারিদ্রে জর্জরিত স্বল্প শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর দেশে ছাপার অক্ষরে লেখা যেকোনো কিছুকেই তাঁদের ধর্মগ্রন্থের পরেই বিশ্বাস করে থাকেন। তাই মিডিয়া সমাজের বড় অপিনিয়ন মেকারের হুইল চেয়ার দখল করে বসে। আধা সত্য, অল্প সত্যকে নানা কথার প্যাচে নিজেদের মতো সত্য বলে প্রচার করে। যা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষায় এসব কথা, ‘কেহ বিশ্বাস করে, কেহ করে না। যে বিশ্বাস করে সেও সত্য-মিথ্যা যাচাই করে না, যে অবিশ্বাস করে সেও না। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নটা নির্ভর করে মানুষের খুশির উপর।’

ঘটনার পটভূমি বিচার করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হবার পরে দেশের কথিত নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী বলে খ্যাতদের মাঝে জবাবদিহিতা ছাড়াই সাময়িক একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ আসে। এতে কথিত নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবীগণ খুশিতে ডগমগ করতে থাকেন। কারণ ক্ষমতা পেতে তাঁদের ভোটের দরকার হয় না। দেদারসে আর্থিক দুর্নীতির সুযোগ থাকার ফলে কথিত নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী তথা সুশীল সমাজ একাট্টা হয়ে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষমতা দখলের একটা ষড়যন্ত্র করে। তাঁদের প্রিয় মিডিয়ায় প্রোপাগান্ডার সাপোর্টে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধানকে জেলে পুরে ফেলে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে নিভৃত জীবন যাপনকারী বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান এবং ওয়ান ইলেভেনের অন্যতম পরিকল্পনাকারী জেনারেল মঈন ইউ আহমেদের নতুন প্রকাশিতব্য বইতে সেই তথ্য ফাঁস করে দেন। ঐ বইয়ে মঈন ইউ আহমেদ ‘শেখ হাসিনাকে ‘বিচক্ষণ, দেশপ্রেমিক এবং রাষ্ট্রনায়োকচিত গুণাবলী সম্পন্ন রাজনীতিবিদ’ হিসেবে অন্যদিক বেগম জিয়াকে ‘পরিবার কেন্দ্রিক, অস্থির এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন’। 

মঈন ইউ আহমেদ বলেন, ‘দেশে শক্তিশালী এবং ক্রিয়াশীল একটি সুশীল সমাজ দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তার করে তাদের রাজনীতি থেকে অবসরে পাঠানোর জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপর ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। এই সুশীল সমাজের নিয়ন্ত্রণে ছিল দেশের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা ও ইংরেজি দৈনিক। তাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা এবং আমার অন্তত তিন দফা বৈঠকে তারা বার বার দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তার করে রাজনীতি থেকে বিদায় করতে বলেন।’ 

খুব যৌক্তিক কারণে শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার ফলে কথিত সুশীল সমাজ তাঁর উপর চরম রুষ্ট হন। ক্ষমতায় গেলে ১৯৭১ সালের মানবতা বিরোধীদের বিচার করবেন এই এজেন্ডা এতই জনপ্রিয়তা পায় যা, ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোট বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ক্ষমতায় আসে, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়। এতে কথিত নিরপেক্ষ সুশীল সমাজ লোভের গুড়ে বালি পড়ে, চুপসে গিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।  

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোটের বিপুল জনপ্রিয়তায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে ২০১৬ সালে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন যে, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর’ যাচাই ছাড়া প্রকাশ করে সাংবাদিকতা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।  তিনি বলেন যে, ‘এটা আমার সাংবাদিকতার জীবনে, সম্পাদক হিসেবে ভুল, এটা একটা বিরাট ভুল। সেটা আমি স্বীকার করে নিচ্ছি।’ ইংরেজি দৈনিকটির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশন এটিএন নিউজে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রশ্নের মুখে মাহফুজ আনামের এই স্বীকারোক্তি আসে। মাহফুজ আনামের অন্যতম সহযোগী মতিউর রহমান যিনি প্রথম আলোতে দুই নেত্রীকে বিদায় নিতে বিশেষ সম্পাদকীয় লেখেন তিনিও অনেকটা চুপ হয়ে যান এই নির্বাচনের পরে। তাঁরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকার নীতি গ্রহণ করেন বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়।    

২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে বিরাট অঙ্কের টাকা চুরি যায়। টাকা চুরির এই ঘটনায় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা দ্য ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স-আইএসআই এর সম্পৃক্ততার আশঙ্কা করে ভারত। ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের এই আশঙ্কার কথা রিজার্ভ ব্যাংক ইন্ডিয়াকে জানিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছিল বলে জানা যায়।

‘টানা পাঁচ বছর ধরে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমটি সমান্তরালভাবে হ্যাকারদেরও নিয়ন্ত্রণে থেকেছে- অথচ প্রতিষ্ঠানটি কেউ সেটি টেরই পায়নি তা খুব অবাক করার কথা’। সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানি `ফায়ার আই` এমন একটি কেসেরও তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির চিফ এশিয়া প্যাসিফিক সিকিউরিটি অফিসার ব্রিচ বোলান্ড। তাঁর ভাষ্য,’বাস্তবতা হচ্ছে অধিকাংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানই সিস্টেম হ্যাক হওয়ার তথ্য প্রকাশ করে না।’

এবার আমরা দেখে নিই সেই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি অপারেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্ট, ইনফরমেশন সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট,ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগ এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ অপারেশন বিভাগের দায়িত্বে কে ছিলেন আর কী তাঁর পরিচয়। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-৪ বেগম নাজনীন সুলতানার অধীনে ছিল। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লোপাট বা চুরির সহযোগিতার বা দায়িত্বে অবহেলার দায়ে বেগম নাজনীন সুলতানার চাকরি চলে যায়। এই নাজনীন হচ্ছেন প্রথম আলোর মতিউর রহমানের শালার বৌ, কমিউনিস্ট পার্টির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের বোন।  

সাম্প্রতিক কালে তারেক জিয়ার প্রতিনিধির সঙ্গে দফায় দফায় জাতীয় পার্টির বৈঠক, বিএনপি নেতাদের ভারত সফর, যুক্তরাষ্ট্র আর ভারতের কাছে ডক্টর ইউনুস ও ডক্টর কামালের আবেদন নিবেদন, বি চৌধুরীকে দিয়ে নতুন জোট গঠনের প্রক্রিয়া, ইত্যাদি কেমন যেন একটা ষড়যন্ত্রের আভাস দেয় আমদের সবাইকে। এর পরেই এই ইমরান এইচ সরকার কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীর মৃত্যু নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা স্ট্যাটাস দিয়ে বলে যে, একজন আন্দোলনকারী মারা গেছে। ফলে মুহূর্তে খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কয়েকদিন আগে প্রথম আলো কাস্টম ইন্টেলিজেন্সের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনা নিয়ে ‘ভৌতিক কাণ্ড’ শিরোনামে আংশিক সত্য খবর প্রকাশ করে, যা মূলতঃ কেরানিদের ভুলে। যে ভুলের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক লিখিত চিঠির মাধ্যমে কাস্টম ইন্টেলিজেন্সকে জানায় এবং কাস্টম ইন্টেলিজেন্স তা মেনে নেয়। এই খবরাংশটি বাদ দিয়ে প্রথম আলো এমনভাবে খবর প্রচার করে যে, চোরাচালান থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা সোনা নিয়ে জনমনে ব্যাপক ঋণাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সরকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে যায়। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তার রাষ্ট্রদূতের পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়। আবার উৎসবিহীন আয়ের ব্যয়বহুল নেতা, গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের নেতা ইমরান এইচ সরকারকে ‘আমেরিকান সরকারের U.S. Department of State এর আমন্ত্রণে অহিংস আন্দোলন, লিডারশিপ, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য দাওয়াত দেয়, যদিও তাঁকে এয়ারপোর্টে আটকে দেওয়া হয়। এদিকে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির ডিপো থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা গায়েব হয়ে গেছে বলে খবর বেরিয়েছে। কী হচ্ছে একটা পরে একটা! যেন সাজানো টেলিফিল্ম!  

কিছু প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, ইউটিউব, সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই দেখা যাবে যে দেশে চরম বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে চলছে। দুর্নীতি হচ্ছে, আগেও হয়েছে, হয়তো আগামীতে হবে কম কিন্তু এসব মিডিয়া এমনভাবে খবর প্রচার করা হচ্ছে যে দেশের প্রধানমন্ত্রী বসে বসে এগুলো করছেন, আরাধনার মতো করে তাঁর মুন্ডুপাত করা হচ্ছে অষ্টপ্রহরে। লেখা শেষ করার আগে আসুন আমাদের আরাধ্য প্রহরগুলোর নাম জেনে নিই। এগুলোর মধ্যে আছে অমৃতযোগ, মহেন্দ্রযোগ, কুলিকবেলা,কুলিকরাতি, বারবেলা, কালবেলা, কালরাতি, ইত্যাদি। রাতের চারটি প্রহর নিয়ে কখন কে জাগে সে সম্পর্কে প্রচলিত কথা: প্রথম প্রহরে সবাই জাগে, দ্বিতীয় প্রহরে ভোগী। তৃতীয় প্রহরে তস্কর জাগে, চতুর্থ প্রহরে যোগী। কিন্তু আমাদের দেশে নির্বাচনের আগে এখন অষ্টপ্রহরে মিডিয়ায় কালরাতির চরম প্রভাব। তাঁরা খুব সক্রিয় যারা এই দেশটাকে পাকিস্তানের মতো একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, সরকার বিরোধিতার বদলে জেনেশুনে কোনো রাষ্ট্রের বিরোধিতা, চায় ‘শেখ হাসিনার মাইনাস’, তাহলে আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে, মজা হবে অনেক।         


লেখক: উন্নয়ন কর্মী ও কলামিস্ট
তথ্যঋণঃ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুক ও অন্যান্য   


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭