ইনসাইড বাংলাদেশ

কেন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা সরোয়ারের?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 30/07/2018


Thumbnail

বরিশাল সিটি নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার মাত্র ঘন্টা চারেক পরই এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের প্রতি ভোট কারচুপি, জালভোট ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।

যদিও অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেছেন সরোয়ার, কিন্তু সকাল থেকে ঘটে চলা বিভিন্ন ঘটনা ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে। আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভোট দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে সৈয়দা মজিদুন্নেসা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আসেন বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। এতদূর পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু বিপত্তি বাধে সরোয়ার যখন বুথে ঢুকে সহকারি প্রিসাইডিং অফিসারকে বলেন, নিজের ভোটার নম্বর জানেন না তিনি। একথা শোনার পর প্রিসাইডিং অফিসার বলেন, ‘ভোটার নম্বর ছাড়া ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। নম্বর এখন খুঁজে বের করা যাবে না।’

মজিবর রহমান সরওয়ার এবার অপেক্ষা করতে থাকেন তাঁর ভোটার নম্বরের কার্ড আসার জন্য। কিন্তু ততক্ষণে ভোটকেন্দ্রে গণ্ডগোল শুরু হয়ে গেছে।  ‘জয় বাংলা’, ‘সরওয়ারকে বাইর কর’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে শুরু করেছে নৌকা ব্যাজধারী কয়েকজন ব্যক্তি। এক পর্যায়ে ২০-২৫ জন ভোটকেন্দ্রে ঢোকার জন্য চেষ্টা করে। ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের কথা কাটাকাটিও হয়। পরবর্তীতে বাইরে আরও লোক জড়ো হয়। এ সময় মজিবর রহমান সরোয়ার কেন্দ্রে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।  অতিরিক্ত পুলিশ এসে বিএনপি প্রার্থী সরোয়ারকে বের করে আনেন।

কেন্দ্রের বাইরে বের হলে নৌকা প্রতীকের ব্যাজধারী লোকজন সরোয়ার ও তাঁর সমর্থকদের ঘিরে ধরেন। এক পর্যায়ে পুলিশ মজিবর রহমান সরোয়ারকে গাড়িতে তুলে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন। ভোট না দিয়েই কেন্দ্র ত্যাগ করেন তিনি।

সৈয়দা মজিদুন্নেসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের বাড়ির কাছেই অবস্থিত। সরোয়ার নিজের মায়ের নামে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই স্কুলেই নিজের গাফিলতির জন্য ভোট দিতে পারেননি বিএনপির এই প্রার্থী। এটি কি আসলেই ভুলে অসাবধানতাবশত হয়ে গেছে নাকি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরোয়ার এমনটা করেছেন সেটি নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে।

এছাড়া সরোয়ার ভোট গ্রহণ শুরু হতে না হতেই ভোট কারচুপি, বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিএনপির পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করে আসছিলেন। সরোয়ার গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘অর্ধশতাধিক কেন্দ্র থেকে তাঁর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ভোট হবে না।’

এসবের ধারাবাহিকতায় এবার বেলা ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেন মজিবর রহমান সরোয়ার।

বরিশাল সিটিতে মোট ভোটার দুই লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন এবং মহিলা মোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন। ভোটকেন্দ্র ১২৩টি ও ভোট কক্ষ ৭৫০টি। এই সিটিতে মেয়র প্রার্থী মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

আজ সোমবার সকাল ৮ টা থেকে রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ চলবে একটানা বিকেল ৪ টা পর্যন্ত। 

এই তিন সিটির ১৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া বাকি সব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হচ্ছে ব্যালট পেপারে।


বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭