ইনসাইড পলিটিক্স

সিলেটে আলোচনায় ডা. জোবায়দা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 01/08/2018


Thumbnail

তিন সিটি নির্বাচনের বেশ আগেই রাজশাহী ও বরিশালে মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করে বিএনপি। কিন্তু বাদ থাকে সিলেট। সিলেট সিটিতে মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন আটকে ছিল মনোয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত। বিএনপি সূত্রে জানা যায়, সিলেটে নব নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দিতে রাজি ছিলেন না লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। তবে সিলেট সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হিসেবে আরিফুল হককে নমিনেশন দিতে কার্যকর ভূমিকা রাখেন তারেক রহমানের স্ত্রী ও সিলেটের মেয়ে ডা. জোবায়দা রহমান। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আরিফকে সিলেটে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়।

সিলেট সিটি নির্বাচনে এবার বিএনপির দুইজন মেয়র প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। জামায়াতের প্রার্থীও অনড় ছিল। তবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী একপর্যায়ে নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্থন জানান। তবে জামায়াত সরে দাঁড়ায়নি। এরপরও জয় হয় আরিফুলের। জানা যায়, এবার সিলেট সিটি নির্বাচনে বিএনপির সকল মেকানিজম করেছেন লন্ডন থেকে ডা. জোবায়দা রহমান।

সিলেটের স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে দুইটা গ্রুপ বিদ্যমান ছিল সবসময়য়। একটা ইলিয়াস আলীর গ্রুপ অপরটি আরিফুল হক চৌধুরীর গ্রুপ। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই আরিফুল হক চৌধুরী স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে লাইম লাইটে চলে আসেন। সিলেটে বিএনপির রাজনীতিতে তিনিই হন সর্বেসর্বা।

আরিফুলের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সখ্যতার বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। অনেক দিন ধরেই প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অনেক ভালো সম্পর্ক। আরিফ যখন মেয়র ছিলেন সে সময় অর্থমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় সিলেটে অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়। কামরান সিলেট আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতা কিন্তু মুহিত ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে কামরানের ঐতিহাসিক বিরোধ রয়েছে। সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে কামরানকে মনোনয়ন দেওয়ার পর মুহিত ও তাঁর অনুসারীরা কামরানের পক্ষে কাজ করেনি বরং তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির আরিফুল হকের পক্ষে কাজ করেছেন। এছাড়া আরিফের সঙ্গে মুহিত ও তাঁর পরিবারের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্কও রয়েছে। সিলেট থেকে তিনি নিজের ছোট ভাই ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে মনোনয়ন দিতে চান। রাজনীতিবিদদের মনোনয়ন না দিয়ে অর্থমন্ত্রী সাবেক এই আমলাকে মনোনয়ন দিতে ইচ্ছুক, এই নিয়ে সিলেটে সন্দেহ ও অসন্তোষ রয়েছে। এসব কারণে সিলেটে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের জন্য অর্থমন্ত্রীর সৃষ্ট বিভেদকে দায়ী করা হচ্ছে। নির্বাচনের দিন অর্থমন্ত্রী হেলিকপ্টারে চড়ে ভোট দিতে যান। অথচ এর আগে সিলেটে নির্বাচনী কার্যক্রমে তাঁকে অংশ নিতে দেখা যায়নি।

বিএনপির একটি পক্ষ অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে একটি সমঝোতা করে বলে জানা গেছে। সমঝোতা অনুযায়ী আরিফুল হক চৌধুরী যদি মেয়র নির্বাচিত হন, তাহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে সমর্থন দিবেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণেই আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ গোপনে সিটি নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে কাজ করেছে। ওই গ্রুপটির কারণেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরও পরাজিত হয় আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান।  

সিলেটে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নির্বাচন থেকে শুরু করে নির্বাচন-কালীন সময়ে ডা. জোবায়দার বিভিন্ন ভূমিকা বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর জয়ের কারণ মনে করা হচ্ছে। সে কারণেই সিলেটের সিটি নির্বাচনের পর আলোচনায় চলে এসেছে ডা. জোবায়দা রহমান।     

বাংলাইনসাইডার/আরকে/জেডএ  

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭