ইনসাইড পলিটিক্স

বাংলাদেশি খেদাও নিয়ে আ. লীগে উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/08/2018


Thumbnail

ভারতের আসাম প্রদেশে বাঙালি খেদাও অভিযান চলছে। এই উদ্দেশ্যে গত ৩০ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে ভারতের জাতীয় নাগরিক পঞ্জী বা ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজেনসের (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা। আসামের কয়েক লাখ বাংলাভাষী হিন্দু-মুসলমান এই তালিকা থেকে বাদ পড়ে রাষ্ট্রবিহীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন। আসামের জাতীয়তাবাদীরা অবশ্য দাবি করছেন তাঁরা বাঙালিদের তাড়িয়ে দিচ্ছেন না। শুধু আসামে বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব তালিকা থেকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চাইছেন। আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও চলছে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর অভিযান। তবে আসাম পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি ভারত। 

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে চলা এমন অভিযানের ঘটনায় বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার খুবই চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন বোধ করছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে জাতীয় নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে ভারতের বিজেপি সরকার এই ইস্যুতে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে আর এতে করে আওয়ামী লীগ সরকার একটি বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে। কারণ আসামের নাগরিকদের যদি বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করা শুরু হয় তাহলে তা দুই দেশের সম্পর্কের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। অবশ্য এখন পর্যন্ত সরকার এটি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

ভারতের রাষ্ট্রদূত অবশ্য বলেছেন, এই ইস্যু বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে বিজেপি সরকারের এই ভূমিকা আওয়ামী লীগের ওপর একটি বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। আওয়ামী লীগ তাই এই বিষয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের থিংক ট্যাংকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাঁরা বিজেপি সরকারের সঙ্গে এবং বিজেপির বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কথা বলবে।

বিএনপির কয়েকজন নেতা সাম্প্রতিক সময়ে ভারত সফর করেছেন। এছাড়া ড. মুহাম্মদ ইউনূসেরও বিজেপি সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি তিনি ৮ম সামাজিক ব্যবসা দিবস এবার বাংলাদেশে উদযাপন না করে ভারতের বেঙ্গালুরুতে উদযাপন করেছেন। এই যোগাযোগগুলো ভারত সরকারকে তথাকথিত অবৈধ বাংলাদেশিদের ব্যাপারে আগ্রাসী ভূমিকা নিতে উৎসাহী করেছে কী না এই নিয়েও আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনা রয়েছে। এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের একটি অংশ মনে করছে, ভারত সরকারের সঙ্গে এই মুহূর্ত সম্পর্ক খারাপ হলে পরবর্তী নির্বাচনে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ শক্তিশালী সরকার গঠন করতে পারবে না। একটি দুর্বল সরকার গঠন করে দলটি ক্ষমতায় আসবে আর এই বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উত্থান-পতন ভূমিকা রাখতে পারে। এই কারণে আওয়ামী লীগ সরকার সতর্কতার সঙ্গে ইস্যুটি মোকাবেলা করতে চাইছে। সরকার এমন কিছুই করতে চাইছে না যাতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়ে।

নির্বাচনের আগে ভারত সরকারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আওয়ামী লীগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালেও নির্বাচন সুসম্পন্ন করতে ভারতের সমর্থন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। সে সময় ভারত সরকারের সমর্থন নির্বাচনটিকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেতে সাহায্য করেছিল। তাই হঠাৎ সামনে চলে আসা বিব্রতকর এই ইস্যুটিকে আওয়ামী লীগ সরকার কৌশলগত ভাবে সুরাহা করতে চাচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭