ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনে নেই বিএনপির যে হেভিওয়েটরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/11/2018


Thumbnail

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির যে আবেগ ও উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে, তা থেকে প্রমাণ হয় যে বিএনপি ২০১৪ সালে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত একটা বড় ভুল ছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি যে ভুল করেছিল, তা এখন বিএনপির নেতারা কোনো লুকোছাপা ছাড়াই স্বীকার করছেন। এবারের নির্বাচনে বিএনপির মধ্যে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি আবেগ, উচ্ছ্বাস এবং উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। তবে এই নির্বাচনী আবেগ এবং উচ্ছ্বাসের মধ্যেও বিএনপির কিছু নেতা তৈরি হয়েছেন যাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। তবে তাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও কেউ কেউ বিএনপির নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। 

বিএনপির প্রধান দুই নেতা বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান এবারের সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। তাঁরা ইচ্ছা করে নয়, বরং তাঁরা নৈতিক স্খলনজনিত কারণে আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হওয়ার কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না।

নজরুল ইসলাম খান: বিএনপির প্রধান দুই নেতা ছাড়াও আরও যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি নির্বাচন করবেন না বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। অবশ্য তিনি কোনোবারই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। নির্বাচনে তাঁর সুনির্দিষ্ট কোনো আসনের কথাও জানা যায়নি। তবে বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন তাঁর আসন কোনো বিষয় না। নির্বাচনের চেয়ে তিনি নির্বাচন সংক্রান্ত দাপ্তরিক কাজেই বেশি ব্যস্ত থাকেন। এজন্য তাঁকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হয়েছে। 

রুহুল কবির রিজভীঃ রুহুল কবির রিজভী হলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।  তিনিও এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। যদিও তিনি বলেছেন, যেহেতু খালেদা জিয়া কারাগারে তাই তিনি নীতিগত কারণে নির্বাচন করছেন না। তবে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, রিজভীরও নির্বাচনে কোনো আসন নাই। তিনি নির্বাচনের চেয়ে দাপ্তরিক কাজেই বেশি পারদর্শী। তাই নির্বাচনের সময় তাকে দাপ্তরিক বিষয়ে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

রিয়াজ রহমানঃ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন রিয়াজ রহমান। তিনি ছিলেন বিএনপি আমলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। সেই সময় তিনি বিএনপির অন্যতম  কূটনৈতিক নীতি নির্ধারক ছিলেন। তিনিও এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না বলে জানা গেছে। অবশ্য তাঁর সঙ্গে বিএনপির অনেক আগেই একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। ২০১৫ সালে যখন বিএনপি জ্বালাও পোড়াও করেছিল, তখন তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের দ্বারাই আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছিল। গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন রিয়াজ রহমান। এরপর পর থেকেই রাজনীতিতে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন তিনি। জানা গেছে, এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না রিয়াজ রহমান।

মাহমুদুর রহমান: বিএনপি আমলের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, দলটি ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি অন্যতম নীতি নির্ধারকের ভূমিকায় ছিলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারকে পরিণত হন, এখনো তিনি বিএনপির একজন থিংক ট্যাংক হিসেবেই পরিচিত, তিনি মাহমুদুর রহমান। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খালেদা জিয়ার অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। কিন্তু এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না মাহমুদুর রহমান। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গেও তাঁর সম্পৃক্ততার বিষয়ে এখনো কোনে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

শফিক রেহমান: বিএনপির আরেক থিংক ট্যাংক, যিনি খালেদা জিয়ার বক্তৃতা লিখে দিতেন, বেগম জিয়ার নীতি নির্ধারণী বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তিনি শফিক রেহমান। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন কারাগারেও থাকতে হয়েছে তাঁকে। কারাগার থেকে ছাড়া পেলেও বর্তমানে বিএনপির কার্যক্রমগুলোতে তাঁকে তেমন একটা চোখে পড়েনা। নির্বাচনী এই ডামাডোলেও শফিক রেহমান অনুপস্থিত। এবার তিনিও নির্বাচন করছেন না বলেই নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগে যাঁরা নির্বাচন করছে না, তাঁরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে ও গুরুত্বপূর্ণ কাজেই সম্পৃক্ত। কিন্তু বিএনপির ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। বিএনপির ক্ষেত্রে হলো, যাঁরা নির্বাচন করছে না, তাঁরা মান অভিমান, বিভিন্ন রকম অন্তঃকলহের কারণে নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছেন।

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭