কালার ইনসাইড

চলচ্চিত্র শিল্পীদের লজ্জা হয় না?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 23/01/2019


Thumbnail

যখন কোন শিল্পী মারা যান, কতশত ফেসবুক স্ট্যাটাস চোখে পড়ে। বাংলাদেশের প্রায় সব তারকাই তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ভরিয়ে ফেলেন। কিন্তু সেই ফেসবুক পর্যন্তই তাদের আবেগ।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলেরদেশের গানের পরই সবচেয়ে বড় অবদান চলচ্চিত্রে। জীবদ্দশায় তিনি কথা আর সুর বুনেছেন ৩০০টিরও বেশি সিনেমায়। এই সংগীত পরিচালকের তৈরি শতাধিক জনপ্রিয় গান যাদের ঠোঁটে দর্শকরা দেখেছেন সিনেমার পর্দায়, সেই নায়ক-নায়িকা কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের তেমন কেউই আসেননি তাকে শেষ বিদায় জানাতে, বিএফডিসিতে! বিএফডিসিতে শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা বহু ঘটেছে। তবে এবারেরটা একটু বেশিই দৃষ্টিকটু।

সর্বশেষ নায়ক রাজ রাজ্জাকের জানাজাতে দেখা গিয়েছিলো চলচ্চিত্রের মানুষদের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি। প্রায় সবাই এসেছিলেন রাজ্জাকের শেষ বিদায়ে। বিষয়টি প্রশংসিত হয়েছিলো। অনেকেই দ্বন্দ্ব ভুলে এক হয়েছেন। কিন্তু বাকিসব সত্যিই আশ্চর্য্য করেছে সবাইকে। শোবিজের বাইরের মানুষ রীতিমতো সমলোচনা করে ধুয়ে দিচ্ছেন।

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কেউ মারা গেলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মরদেহ নিয়ে আসা হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল ও প্রিয় আঙিনা এফডিসিতে। ঘোষণা দিয়েই আনা হয়। শিল্পী সমিতির সভাপতি জায়েদ খান জানান,‘ প্রায় সবাইকে কল ও এসএমএস দেওয়া হয়েছে। এখানে তো আমি জোর করে আনতে পারি না।’

সাধারণ মানুষ এফডিসির বাইরে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকলেও তারকারা ভীষণ ব্যস্ত। এক ঘন্টা ফুরসত মেলে না। খোঁজ নিয়ে অবশ্য জানলে, কারো কাজের খবরই পাওয়া যাবে না দু একজন ছাড়া।

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতির নেতৃত্বেই বেশিরভাগ সময় মৃত ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজার আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত থাকেন নামে মাত্র কয়েকজন পদস্থরা। যারা সমিতির কর্তাব্যক্তি। ফেসবুক ও গণমাধ্যম ভর্তি নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা। কিন্তু এতটুকু আন্তরিকতা নেই কেন নিজেদের মধ্যে?

চিত্রনায়িকা দিতির মৃত্যুর পরও ফেসবুকে এমন শোকের বান ডেকেছিল। কিন্তু তার সিঁকিভাগও দেখা যায়নি জানাজাতে। এমনও হয়েছে, সে সময় এফডিসিতে থেকেও জানাযায় উপস্থিত হননি।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী তাদের ব্যস্ত রুটিনের ফাঁক গলে বুলবুলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। শোক জানিয়েছেন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নানা ব্যক্তিত্বরা। এমনকি এর অনেকেই শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়েছেন। বুলবুলের সঙ্গে যাদের খুব একটা দেখা যায়নি। তারাও এসেছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে। অথচ আমাদের চলচ্চিত্রের মানুষ ভীষণ ব্যস্ত।

নায়ক আলমগীর বলেন, ‘এটা খুবই খারাপ একটি চর্চা। এমন কোনো ব্যস্ততা বা কারণ না থাকলে একজন সহকর্মীকে অবশ্যই শেষ বিদায় জানাতে আসা উচিত। তার সঙ্গে যে সবার কাজ করতে হবে এমন কথা তো নেই। এটা আমাদের পরিবার। সেখানকার একজন মানুষ চলে গেলেন, আর আমরা সেখানে থাকবো না। এটা সত্যিই দু:খজনক। যদি শ্রদ্ধা জানানোর মানুষই না থাকে তাহলে তাকে অপমান করা হয়। আমাদের এগুলো শিখতে হবে। একজন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল রোজ রোজ জন্মায় না। সবারই ভাবতে হবে একদিন আমিও মরে যাবো, যিনি চলে যাচ্ছেন তার এতটুকু সম্মান প্রাপ্ত।’


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭