কালার ইনসাইড

কবে বন্ধ হবে নাটকে ‘ইংরেজি’ নাম?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/02/2019


Thumbnail

ফ্রেন্ডস, কাপল, রুমমেট, বয়ফ্রেন্ড ভার্সেস গার্লফ্রেন্ড, হোম থিয়েটার, থার্ড ডিগ্রি, দ্য ব্রেকআপ, জাস্ট ফ্রেন্ড, আল্টিমেটাম, স্লিপিং বিউটি, লাভ স্টেশন, চিটার নাম্বার ওয়ান, বাস নাম্বার, জেন্টলম্যান…’ যদি গত একবছরের হিসেবেও করা হয়,  বলে শেষ করা যাবে না গত বছরে ঠিক কতগুলো কতগুলো ইংরেজি নামে নাটক হয়েছে।

নাম, নাটকের অলঙ্কার। সেই অলঙ্কার গল্পের মত বিদেশ থেকে নিয়ে আসেন। দেশে এখন যে নাটক হয়, তার সিংহভাগই ইংরেজি নামে হয়। ইংরেজি নামের প্রতি নির্মাতাদের আকর্ষণ বলতে গেলে নেশার পর্যায়ে চলে গেছে। বাংলা নামের পাশাপাশি ইংরেজি নামের সহাবস্থান আগেও ছিল, কিন্তু এখন তা ভয়াবহ অবস্থায়।

এমন কিছু ইংরেজি ভাষার শব্দ আছে যেগুলোর বাংলা প্রতিশব্দ দর্শকদের কাছে অপরিচিত বা স্বল্পপরিচিত। সেসব নামে কারো কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। যেমন ‘এডিটর’,‘কর্পোরেট’, ‘গেইট’,‘পারফিউম’, ‘অফিসার’ ইত্যাদি। একটা সময় যেমন সংলাপে ভয়াবহভাবে ইংরেজি ঢুকে পড়েছিল। এখন নামে ইংরেজি ঢুকে পড়েছে। এটাই যেন নাটকের আধুনকিতা।  

চ্যানেলগুলোর কি এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই? ভ্রুক্ষেপ নেই আমার চ্যানেলে কি দেখাচ্ছি? ভাষার মাসে যেমন মাসব্যাপি অনুষ্ঠান করা হয়। তেমনি কি একটু নজড় দেওয়া যায় না এই নামে? এই চ্যানেলগুলোতে বছরভর প্রচারিত হয় অশ্রাব্য ইংরেজি নামের নাটকগুলো। তরুণ দর্শকদের চ্যানেলমুখী করার এক গোপন মিশন নিয়ে এই ইংরেজি নামগুলোর অনুমোদন দেয় চ্যানেল কর্তৃপক্ষ।

চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড আগেই এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। যুক্তি না থাকলে ইংরেজি নাম গ্রহণ করছে না। সেই নির্দেশনা কার্যকর না হলেও বছর দুই থেকে অনেকটা কমেছে ইংরেজি নাম। কিন্তু কয়েকজন নাট্য পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন কোন ধরনের নির্দেশনা নেই চ্যানেলগুলোর ভেতর থেকে। টিভি চ্যানেলের রেড সিগনাল না থাকায় নির্মাতারা কোনো ধরনের বিচার-বিবেচনা ব্যবহার করছে এমন ইংরেজি নাম।

আর এই ইংরেজি নাম দেওয়ার পেছনের অন্যতম কারণ, অনলাইনের দর্শক ধরা। নাটকের বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, একখানা ইংরেজি নাম রাখলেই যেন দর্শকের আকর্ষণ অনেক বৃদ্ধি পায়। গাদা গাদা ইংরেজি নামে সয়লাব ইউটিউব।

আর এসব নাটক নির্মাণে আছে সববয়সী নির্মাতারাই। কাকে রেখে কাকে দোষারোপ করবেন? তবে যারা নিয়মিত নাটক বানাচ্ছেন, এরমধ্যে কয়েকজনের নেশাটা একটু বেশিই হয়ে আছে। এই নির্মাতারা বাংলা নামকে নির্বাসনেই পাঠিয়ে দিতে উদ্যত। আর এসব নাটকে অভিনয় করছেন বিভিন্ন কাতারের অভিনয়শিল্পীরাও।

শিল্প সংস্কৃতি চর্চার একটি মাধ্যম বাংলাদেশের নাটক। যেখানে বাংলা ভাষার চর্চাও হয়। ড্রয়িং রুমের বিনোদন এই নাটক। সেখান থেকে বিনোদিত হয় বিভিন্ন পেশার বাজারি চিন্তার প্রতি আত্মসমার্পন না করে সুষ্টু সংস্কৃতি চর্চা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। বাংলা ভাষার প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত নির্মাতাদেরও।


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭