ইনসাইড পলিটিক্স

হতাশায় ভরপুর এরশাদের জাপা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/03/2019


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে চলছে বন্ধ্যাত্ব।  জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দলের আসনে এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি থাকলেও বর্তমানে এর সাংগঠনিক কোন কার্যক্রম কোথাও নেই। আগের মত সরগরম নেই কাকরাইলের দলীয় কার্যালয় কিংবা দলের চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়। সবখানেই সুনশান নীরবতা। 

১ জানুয়ারি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনেকটা নীরবে-নিভৃতে চলে গেল। সেটা নিয়েও দলের কোন স্তরের নেতার মাথাব্যথা ছিলনা। ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্রাজেডি নিয়ে প্রতিবছরই জাতীয় পার্টি শোক দিবস কিংবা বনানীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠান রাখলেও এবার তা উপেক্ষিত। সবকিছু মিলিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বে রদবদলের কারণেই নাকি পার্টিতে কোন শৃঙ্খলা নেই। পার্টি চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ অসুস্থ থাকায় তাঁর সহোদর জিএম কাদের পার্টির সাংগঠনিক বিষয়গুলো দেখভাল করছেন। কিন্তু জিএম কাদেরের নেতৃত্ব কোনভাবেই মানছেন না দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতা। আর এ না মানার মূল কারণ পার্টিতে বেগম রওশন এরশাদের নিষ্ক্রিয়তা বলে জানা গেছে। বেগম রওশন এরশাদকে কোনভাবেই পার্টির সাংগঠনিক কর্মকান্ডে যুক্ত করা যাচ্ছে না। তবে বেগম রওশন এরশাদ নিয়মিত সংসদে অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন।

জাপার একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমানে জাতীয় পার্টির মূল সমস্যা হলো এরশাদ-রওশন এরশাদ এবং জিএম কাদেরের নেতৃত্ব। কার নেতৃত্বে জাপা চলবে এটাই এখন প্রধান আলোচ্য বিষয়। এরশাদের  শারীরিক অসুস্থতার কারণে দলের সাংগঠনিক কোন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন না সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ। দলের নেতারা তার সাথে বারংবার যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পাচ্ছেন না।  তাছাড়া জিএম কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করায় বর্তমানে  রওশন এরশাদের সেক্ষেত্রে পার্টিতে কোন ক্ষমতাও নেই।  জিএম কাদেরকে কেউ জাপার নেতৃত্বে মানতে চাচ্ছেন না। তারা বলেন, এ সমস্যার সমাধান না হলে অচিরেই জাপা প্যাডসর্বস্ব দলে পরিণত হবে।

 সূত্রগুলো জানায়, জাপার আরেকটি বড় বাধা মহাসচিব! বর্তমান মহাসচিবকে সিনিয়র কেউ পাত্তা দিচ্ছেন না। কারণ প্রেসিডিয়াম সদস্য যারা আছেন তাদের থেকে অপেক্ষাকৃত অনেক জুনিয়র মশিউর রহমান রাঙা। সাংগঠনিক দক্ষতাও তার কম। সেক্ষেত্রে সবাইকে একত্রিত করে জাপাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে মশিউর রহমান রাঙ্গা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মনে করেন জাপার নেতারা। সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের একটি  গ্রুপও কোনভাবেই রাঙাকে সামনে এগুতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বর্তমানে কুয়াকাটায় তার হোটেল ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন। জাপার রাজনীতির সাথে তার তেমন কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন। জাতীয় সংসদেও চলছে মনোমালিন্য। সিনিয়র নেতাদের বাদ দিয়ে মশিউর রহমান রাঙাকে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ নিযুক্ত করায় কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু এবং ফখরুল ইমামরা কোনভাবেই এরশাদের নেতৃত্বকে মানতে পারছেন না। তাদের মতে এখনও বিজ্ঞ সাংসদরা রয়েছেন তাদের উপেক্ষা করে এমন সিদ্ধান্ত দলের জন্য ক্ষতিকর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাপার সিনিয়র এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, জাপা এখন ফ্যামিলি পার্টি। ফ্যামিলি পার্টি নিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। তাছাড়া জাতীয় সংসদেও জী হুজুর পার্টির ভূমিকায় আছে। ঐ প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে দল বিলীন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। 

বাংলা ইনসাইডার/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭