ইনসাইড গ্রাউন্ড

বেসবল খেলার খুঁটিনাটি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 30/03/2019


Thumbnail

খেলার জনপ্রিয়তা অঞ্চল ভেদে ভিন্ন রকম। যেমন নিঃসন্দেহে জনপ্রিয়তায় পুরো পৃথিবীতে ফুটবলের রাজত্ব। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ফুটবলের তুলনায় বেশিই হবে। ঠিক তেমনি ক্রিস্টোফার কলম্বাসের আবিষ্কৃত দুই আমেরিকায় দু’ধরনের উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায়। দক্ষিণ আমেরিকায় আধিপত্য ফুটবলের। বৈশ্বিকতার কারণে ফুটবল জনপ্রিয় হলেও উত্তর আমেরিকাতে এগিয়ে বেসবল। আবার ফুটবল প্রবণ অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে বেসবল।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় খেলা এই বেসবল। শুধুমাত্র মার্কিন মুলুকেই প্রায় ১২ মিলিয়ন মানুষ বেসবল খেলে থাকেন। প্রায় একই রকম খেলা হলেও ক্রিকেটের তুলনায় বেশ ভিন্নতা রয়েছে বেসবলে।

বেসবলের মাঠ ও খেলার নিয়ম:

ক্রিকেট ফুটবল এগার জনের খেলা হলেও বেসবলে এক দলের খেলোয়াড় সংখ্যা থাকে ৯ জন করে। ৯০ ফুটের রম্বস আকৃতির মাঠে চারকোণায় চারটি বেস স্পর্শ করে রান নেওয়া হয়। যারা ব্যাট করে তাদের বলা হয় ‘অফেন্স’ দল। আর যারা ফিল্ডিং করে তাদের বলা হয় ‘ডিফেন্স’ দল। এই খেলায় ডিফেন্স দলের হয়ে যিনি বল ছোঁড়েন তাকে বলা হয় পিচার। আর অফেন্স দলের হয়ে যে ব্যাটিং করেন তাকে বলা হয় হিটার। ক্রিকেটে বোলার-ব্যাটসম্যানদের মতো, হিটারের কাজ হচ্ছে পিচারের ছোঁড়া বলগুলো মোকাবিলা করা।

অফেন্স দলের হিটাররা চার কোণের যেকোনো বেসে ইচ্ছে করলে থামতে পারবে। যদি দলের কোনো হিটার বল হিট করে, নিজেদের মধ্যে জায়গা পরিবর্তন করে রান নিয়ে থাকেন। ডিফেন্স দল যদি অফেন্স দলের তিনজন হিটারকে আউট করতে পারে, তাহলে একটি ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। মোট নয় ইনিংসে এই খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। এই নয় ইনিংসের মধ্যে দুই দলের মধ্যে যে দল বেশি রান করে সেই দল বিজয়ী হয়।

বেসবল খেলার সরঞ্জাম: বেসবল খেলার প্রধান সরঞ্জাম হলো চারটি। ব্যাট, বল গ্লাভস ও হেলমেট। কাঠের তৈরি ব্যাটের দৈঘ্য ৪২ ইঞ্চির বেশি হয় না। যে জায়গা দিয়ে বলকে হিট করা হয় এর ব্যাস থাকে ২.৭৫ ইঞ্চি। আর ওজন হয়ে হয় ৩৪ আউন্স থেকে ৩৬ আউন্সের (৯৬৩ গ্রাম থেকে ১,০২১ গ্রাম) মধ্যে।

পেশাদার বেসবলে বলের রং হয় সাদা। এর পরিধি সাধারণত ৯ থেকে ৯.২৫ ইঞ্চি হয়। এর ওজন ১৪১.৭৫ থেকে ১৪৮.৮৩ গ্রাম হয়ে থাকে। ব্যাট-বল ছাড়া এক ধরনের বিশেষ গ্লাভস ব্যবহার করা হয়। এছাড়া হেলমেটের প্রচলন আছে বেশ আগে থেকেই।

সাধারন তিন বিভাগ রয়েছে ব্যাটিং, পিচিং এবং ফিল্ডিং।

বেসবলে ব্যাটিং: পিচারদের ছোঁড়া বলগুলো মোকাবিলা করে রান তোলাই ব্যাটিং দলের কাজ। খেলা শুরুর আগে হিটারদের মাঠে নামানোর একটি লাইন আপ জমা দিতে হয়। সেই লাইন আপ অনুযায়ী অফেন্স দলকে হিটারদের মাঠে নামাতে হয়। এই লাইন আপ পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। হিটার যদি টানা তিনবার বল হিট করতে ব্যর্থ হন তাহলে তাকে বলা হয় স্ট্রাইক বা আউট। সে ক্ষেত্রে নতুন হিটার আসবেন।

বেসবলে পিচিং: ডিফেন্স দল পিচারদের পরিবর্তন করতে পারবে। চাইলে প্রত্যেকেই পিচিং করতে পারবে। পিচারদের কাজ বিভিন্ন কৌশলে হিটারদের পরাস্ত করা। অভিজ্ঞ পিচাররা সাধারণত গতির দিকেই নজর দেন বেশি। ঘণ্টায় প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বল ছুঁড়তে পারেন পিচাররা। আবার ভিন্নতা আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আনতে পারেন পিচাররা। স্লোয়ার কিংবা সিম কাট, সিম স্ক্রুর মতো ডেলিভারিও ছোঁড়েন তারা।

বেসবলে ফিল্ডিং: ডিফেন্স দলই ফিল্ডিংয়ে থাকে। সাতজন বিভিন্ন মাঠের বিভিন্ন পজিশনে ফিল্ডিং করে। একজন পিচার অন্যজন হিটারের পেছনে থেকে বল ক্যাচ করেন। অনেকটা উইকেট কিপারের মতো। বেসবলে আম্পায়ারের অবস্থান থাকে হিটার এবং কিপারের পেছনে।

খেলার অবস্থা এবং হিটার হিটিং মান বুঝে ফিল্ডারদের অবস্থান পরিবর্তন হয়। ক্রিকেটের মতো দুই ধরণের ফিল্ডিং লক্ষ্য করা হয়। আক্রমণাত্মক এবং রক্ষণাত্মক।

খেলার ধরণ এবং নিয়মে খেলাটি অনেকটা ক্রিকেটের মতো হলেও খুব কমই মিল রয়েছে। উত্তর আমেরিকায় এর জনপ্রিয়তা তুমুল। বর্তমানে খেলাটি প্রায় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বাংলাদেশে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত একটি অ্যাসোসিয়েশনও রয়েছে। যদিও এর কার্যকারিতা নেই বলেই চলে।

বাংলা ইনসাইডার/আরইউ/এমআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭