কালার ইনসাইড

‘দুই ভাইয়ের আরো অনেক কাজ হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/06/2019


Thumbnail

ঈদে মুক্তি পেল মালেক আফসারি পরিচালিত ‘পাসওয়ার্ড’ সিনেমা। সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মামনুন হাসান ইমন। যারা সিনেমাটি দেখেছেন, সবার মুখেই ইমনের প্রশংসা। ক্যারিয়ারের এই সময়ে এসে এমন একটি সিনেমায় অভিনয় করে কেমন লাগছে। এই প্রশংসা কি অতীতের সব কাজকে ছাড়িয়েছে। সেসবের গল্প বললেন বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে। 

বাংলা ইনসাইডার: চরিত্রটা করতে কেন রাজি হওয়া?

ইমন: শাকিব খানের সঙ্গে ‘ক্যাপ্টেন খান’সহ আরো কয়েকটি সিনেমাতেই অফার ছিল। কিন্তু শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে নিজের ক্যারেক্টারটার তেমন জোর না পেয়ে না করতে হয়েছে। শাকিব ভাই বুঝেছেন আমি কি করতে চাই। এবার শাকিব ভাই নিজে প্রযোজনা করছেন। সিনেমার প্রতি তাই আলাদাভাবে তার গুরুত্ব পাবে সেটাই স্বাভিাবিক। পরিচালকের সঙ্গে বসে শাকিব ভাই প্রত্যেকটা ক্যারেক্টার সেভাবেই গুরুত্ব দিয়ে তৈরী করলেন। শাকিব ভাই সিনেমাটির জন্য অফার করলেন। তিনি বলেলেন, ‘ছবিটিতে একটা ভালো ক্যারেক্টার আছে। আমাকে সবাই বলছে ডাবল ক্যারেক্টার করতে। আমার মনে হয়েছে সিনেমায় এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। আমি সিনেমার হিরো। কিন্তু গল্পের হিরো এইটা। তুমি আগে গল্পটা শোনো। শোনার পরে দেখতে পারবে তুমি কি করতে পারো। গল্পটা শোনো। তারপর পছন্দ না পছন্দ আমি তোমার উপর ছেড়ে দিলাম।

এভাবেই রাজি হওয়া?

গল্পটা শোনার পর আমি রীতিমতো মুগ্ধ। দেখলাম অদ্ভূত একটা চরিত্র। আমার কাছে এত ভালো লেগেছে। অনেকদিন থেকে আমার এ ধরনের ক্যারেক্টার করার শখ ছিল। এবার সুযোগটা মিললো। যাদের সঙ্গে মিললো, পরিচালক মালেক আফসারি, শাকিব ভাই, ইকবাল ভাইদের মতো মানুষদের সঙ্গে।  সব মিলিয়ে আমার মনে হলো হিরো হিসেবে তো অনেকগুলো কাজ করলাম। অনেক অফারও আসে। কিন্তু এ ধরনের ক্যারেক্টার তেমন পাই না। এটা আমার নিজেকে প্রমাণ করার আরো একটি চান্স পেলাম। তাছাড়া বড় বাজেটের ঈদের সিনেমা। ১৮০টি সিনেমা হলে রিলিজ পাবে। এত মানুষ দেখবে। সব মিলিয়ে আমার ক্যারেক্টারটা ঠিকঠাক করতে পারলে মানুষ আমার প্রশংসা করবেই এমন একটা ব্যাপার ছিল। এটা আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল।

মুক্তির পর দর্শকের রেসপন্স কেমন পাচ্ছেন?

শুটিং শেষে ইউনিটের লোকজন খুব প্রশংসা শুরু করলো। বললো যে আমরা তো এডিট করছি। খুব ভালো হইছে আপনার ক্যারেক্টারটা। যখন ডাবিং করতে গেলাম, তখনও সবাই বললো খুব ভালো হইছে। ফাইনালি সেন্সর বোর্ড থেকে যখন প্রশংসটা করলো যে ইমন তোমার অভিনয় অনেক ভালো হয়েছে। তখন আমার আত্মবিশ্বাসটা বাড়লো। কিন্তু আমি অপেক্ষা করছিলাম দর্শকের জন্য। তারা কিভাবে নেয় এই চরিত্রটা। শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেটা, এক শাকিব খান থাকলে সিনেমায় অন্য চরিত্রগুলোতো ওভাবে হাইলাইটেড হয় না। শাকিব খান যে সিনেমায় আছে মানুষ তো সেখানে তাকেই খুঁজবে।  আমার কাছে সবচেয়ে বড় যে পাওয়া, শাকিব খান থাকা সত্বেও এই ক্যারেক্টারটা নিয়ে মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল।

সিনেমা মুক্তির পর শাকিব খানের ফিডব্যাক কি?

গত কয়েকদিন ধরে প্রায় প্রতিদিন কয়েকবার শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়। শাকিব ভাইই বলেন, ইমন আমার কাছে যেই আসে বলে যে ইমন সেই অভিনয় করছে। শাকিব ভাই বলে এটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। তোকে নিয়ে ক্যারেক্টারটা ভাবছি, মানুষ সেটা পছন্দ করছে। এটাই তো আমার পাওয়া। আমার ছোট ভাইকে মানুষ পছন্দ করছে। সেটাই এই সিনেমায় আমার অনেক ভালো লাগা। শাকিব ভাই অলরেডি তার পরের প্রডাকশনে অলরেডি কথা বলে রাখছে। আমাদের একসঙ্গে আরো কাজ করার প্ল্যান আছে।

ট্রেলারে ইমনকে দেখা যায়নি। এটা নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে। সেই কৌশল কেন ছিল?

এর পেছনে ছিল কৌশল। আমার যে চরিত্র। সেটা হচ্ছে সিনেমার অন্যতম আকর্ষণ। শাকিব ভাই বললো তুমি যে চরিত্রটা করলে। এটা যে কারো স্বপ্ন। যখন সিনেমাটি দেখবে। বাংলাদেশের যে কোন নায়ক বলবে এই ক্যারেক্টারটা আমিও করতে পারতাম। এটা আমারও স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আমি একাই দুটি ক্যারেক্টার করতে চাচ্ছিলাম না। যদি আমার কাছে অপশন থাকতো আপনি কোন ক্যারেক্টারটা করবেন, তাহলে আমি ওইটা করতাম। সিনেমায় যেহেতু নায়োকোচিত একটা ক্যারেক্টার থাকা লাগবে। তাই সেটা আমার করতে হয়েছে। তোমার ক্যারেক্টটারটা এতই ইন্টেরেস্টিং। সেটা যদি দেখাইয়া ফেলি আগেই, তাহলে সিনেমারই কিন্তু মজাটা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ট্রেলার , পোস্টার কেথাও আমি ছিলাম না। সিনেমাটি রিলিজ হওয়ার পর তার ফলটা পেয়েছি।

এর আগে এমন ক্যারেক্টার করা হয়েছে?

এর আগে এমন ক্যারেক্টার করা হয়নি।  এটা করার সময় আমার পার্সোনাল কিছু প্রিপারেশনও ছিল। এটা কিন্তু টোটাল যে প্রতিবন্ধি তা নয়। যারা সিনেমাটি দেখেননি, তারা হয়তো শুনে বলছে যে প্রতিবন্দ্বি। সে আসলে তা নয়। তার ব্রেইন কাজ করে। এই ধরনের মানুষের মায়া থাকে বেশি। রাগ থাকে বেশি। একটা পাগলামি থাকে। যখন ভাইকে সে হারিয়ে ফেলে মাঝে তখন সে পাগল প্রায় হয়ে যায়। এই জিনিসগুলো আমি স্টাডি করেছি। এমন ক্যারেক্টারগুলো কেমন হয় সেটা বুঝেছি। পরিচালক আফসারি ভাই এর জন্য অনেক হেল্প করেছে। আমি যেটা করেছি। আমার ক্যারেক্টারটা স্বাবলিল করার জন্য রাতে কম ঘুমাতাম। চেহারাটা একটু রাফ রাখার চেষ্টা করেছি। এরকম করে আমার বেশ কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হয়েছে। ’ 

পরিচালক মালেক আফসারিসহ শুটিং অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

মালেক আফসারি ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করার সবচেয়ে মজার এক্সপেরিয়েন্স হলো উনি খুব হাসিখুশি মানুষ। ওনাকে যদি বলি এটা করতে চাই। উনি বলে করো। আর আমার এই পরামর্শটাও নিতে পারো। দুটি মিলিয়ে দেখো ভালো কিছু হচ্ছে। মিশা ভাইও আমাকে খুব অভিনয় করেছে। শাকিব ভাই আমাকে পার্সোনালি ডেকে বলতো যে ইমন খুব ভালো করতে হবে কিন্তু। সিনেমায় আমার ক্যারেক্টারটা যেহেতু খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। সবাই আমার ক্যারেক্টারের যত্ন নিতো। সবাই খুব দুশ্চিন্তায় ছিল যে আমি কেমন করি।

সিনেমাটিতে যে নকলের অভিযোগ এসেছে তা নিয়ে কি বলবেন?

দেখুন আমি হচ্ছি সিনেমা অভিনেতা। আমি দেখেছি যে আমার ক্যারেক্টার কেমন। আমি কার সঙ্গে কাজ করছি। তা নিয়ে আমি স্যাটিসফাইড। সিনেমার গল্প যদি কোন সিনেমার সঙ্গে মিলেও যায়, সেটা আসলে পরিচালক বা যিনি লিখেছেন তারাই ভালো বলতে পারবেন। আমি এতটুকু বলবো আমরা সবাই সিনেমাটির জন্য খুব কষ্ট করেছি। একটা ভালো সিনেমা দর্শককে উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সেখানে আমরা সফল বলবো। কারণ মুক্তির পর থেকে আমরা সে রেসপন্স পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা ব্যবসার মুখ দেখেছি।

বর্তমানে আর কি কি ব্যস্ততা আছে?

বর্তমান ব্যস্ততার মধ্যে ‘সাহসী যোদ্ধা’র শুটিং চলছে, ‘আমার সিদ্ধান্ত’ সেন্সরে গেল, কাজী কামরুলের পরিচালনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা গল্প নিয়ে একটা ছবি হচ্ছে। নতুন একটা প্রডাকশনের সঙ্গেও কথা ফাইনাল। জাকির হোসেন রাজুর সঙ্গেও একটি সিনেমার কথা প্রায় ফাইনাল। আর শাকিব ভাইয়ের সঙ্গেও কাজ করার কথা চলছে।



বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭