লিভিং ইনসাইড

এই বর্ষায় আপনার গাছের যত্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/09/2019


Thumbnail

খুব সাধ করে খোলা ছাদ বা ছোট্ট বারান্দাটিতে নিজের হাতে বাগান বানিয়েছেন আপনি। সেখানে পছন্দের কতো গাছ আপনার, তাদের যত্মআত্তির কোনো কমতিও নেই আপনার। কিন্তু এই যে বর্ষার সময়ে আপনি দেখলেন শখের গাছগুলো নষ্ট হচ্ছে, কখনো পঁচে যাচ্ছে। এখন বুঝতে পারছেন না এই সময়ে আলাদা করে আবার গাছের যত্ন কীভাবে করা যাবে। তাই আপনাকে জানাচ্ছি এই বর্ষার মৌসুমে আপনি গাছ আর বাগানের যত্ন কীভাবে নেবো-

গাছকে ছায়ায় রাখবেন

বর্ষার সময়ে কিছু কিছু গাছের জন্য বেশ ক্ষতি হতে পারে। ক্যাকটাস বা সাকুলেন্ট সদস্যদের গাছ বেশি পানি সহ্য করতে পারে না। তাই এদের খোলা আকাশের নিচে না রাখাই ভালো। এই জাতীয় গাছগুলোকে ছায়ার মধ্যে বা ঘরের মধ্যে রাখা উচিত বর্ষায়।

পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গাছে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা। যেকোনো ঘরোয়া গাছের জন্য এমন টব বা পাত্র বাছাই করবেন যেটায় পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনমত ছিদ্র থাকে। আর ছাদে গাছ লাগানোর জন্য আজকাল বড় আকারের ড্রাম ব্যবহার করা হয়। সেগুলোতেও ছিদ্র রয়েছে কিনা খেয়াল রাখুন।

বৃষ্টির পর টবে পানি জমা দেখা যায় তাহলে টব একদিকে কাত করে পানি ফেলে দিতে হবে। আর মাটি না শুকালে একটু খুচিয়ে দিতে হবে যাতে সম্পূর্ণ মাটি শুকিয়ে যায়। আর যদি গাছের মাটি শুকানোর ব্যবস্থা না থাকে তাহলে বৃষ্টির সময় ঘরে এনে রাখাই ভালো। কারণ পানি জমলে সেখান থেকে ডেঙ্গুসহ অন্য পানিবাহিত রোগগুলো বাড়বে। তাই নিয়মিত গাছের টবগুলি দেখা দরকার যেন পানি না জমে।

গাছে পানি না দেওয়াই ভালো

আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে বর্ষামৌসুমে কি গাছে পানি দেবো কি দেবো না। বর্ষায় গাছে পানি না দেওয়াই ভালো। অতি বৃষ্টির ফলে গাছে পানির ঘাটতি পূরণ হয়। তাই গাছের মাটি না শুকানো পর্যন্ত পানি দেওয়া উচিত নয়। একটা কথা মাথায় রাখা উচিত পানির অভাবে গাছ মরে না কিন্তু পানির পরিমাণ বেশি হলে গাছ মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

টবে মাটি দিয়ে ভরাট করা

গ্রীষ্মের সময়ে আমরা যেমন টবের মাটি কয়েক ইঞ্চি নিচ পর্যন্ত ভরাট করি কিন্তু বর্ষাকালে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য টবে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেয়া উচিত যাতে পানি তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।

মাটি তৈরি করা

অতিবৃষ্টির সময়ে অবশ্যই এমন ধরণের মাটি নির্বাচন করতে হবে যাতে মাটি খুব দ্রুত পানি শুষে নিতে পারে। আর তাই এর জন্য এঁটেল মাটি ব্যবহার করা উপযোগী। মাটি তৈরির ক্ষেত্রে মাটির সাথে সার মেশানোর সাথে সাথে বালু ও নুড়িপাথর বেশি পরিমাণে মিশিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোকোডাস্ট বা পার্লাইট মিশিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে।

গাছের টব সরিয়ে দেওয়া

অনেক সময় পিপড়া বা অন্যান্য ছোট ছোট পোকা টবের নিচে বাসা তৈরি করে। এসব পোকামাকড় গাছের অনেক ক্ষতি করে। তাই গাছের টব সরিয়ে নিয়ে পোকামাকড় ধ্বংস করতে হবে।

সার দেবো কি দেবো না

বর্ষাকালে সার না দেওয়াই ভালো। কেননা বৃষ্টির পানিতে যে পরিমাণে নাইট্রোজেন বা অন্যান্য উপাদান থাকে তা গাছের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। তাই সার দেয়া উচিত নয়। যদি একান্তই সার দেওয়া দরকার মনে হয় তাহলে জৈব সার দিতে হবে। অন্য কোনো রাসায়নিক সার না দেয়াই ভালো।

কীটনাশক

সারের মতোই বর্ষাকালে কীটনাশক ব্যবহার না করাই ভালো। তবে পোকামাকড় নিধনে জৈব কীটনাশক প্রয়োগ করা উচিত। ৫ মিলিলিটার নিমের তেল, ১০ ফোঁটা সাবান পানি ও পানি মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করে দিতে হবে। গাছে যদি মুকুল ধরে তখন কীটনাশক প্রয়োগ করা উচিত তাতে অন্যান্য মুকুল বা পাতায় পোকা আক্রমণ করার আশংকা কমে যায়। ফানজিসাইড বর্ষাকালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রতি ৭ দিন অন্তর অন্তর ফানজিসাইড স্প্রে করা। কারন এই বর্ষায় বৃষ্টির পানি জমে ছত্রাক হয়ে থাকে ফলে গাছের ডাল পালা নষ্ট হয়ে যায়। তাই হাতের কাছে যেকোন ফানজিসাইড স্প্রে করে দেওয়া উচিত।

খুটি দিয়ে দিন

ঝড় বৃষ্টি হলে অনেক সময় গাছ বিশেষ করে চারা গাছ একদিকে হেলে যায়। তাই গাছের অবস্থান ঠিক রাখার জন্যে গাছের সাথে খুটি দিয়ে বেধে দিতে হবে।

মৃত ডালপালা ছাঁটাই করে নিন

এটি মূলত বর্ষার প্রথম বৃষ্টির পরপরই করণীয় একটি কাজ। আপনার বাগানের সমস্ত গাছের যত মৃত ডাল বা শাখা প্রশাখা বিদ্যমান তার সবকিছুই ছেঁটে ফেলুন। এতে করে বর্ষায় নতুন করে আপনার গাছে ফুল এবং পাতা আসার সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রেও আপনার সতর্ক থাকা দরকার। মরা ডালপালা কাটতে গিয়ে গাছের উপর যেন অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না হয় সেদিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭