ইনসাইড পলিটিক্স

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পেয়েছেন বিএনপির অনেকেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/10/2019


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই যে রাজনীতিবিদ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার চিকিৎসার প্রয়োজন হয়েছে তাকে সহযোগিতা করেছেন। এটা তিনি সরকার কিংবা বিরোধী যে দলেই থাকুন। রাজনীতিবিদদের জন্য সহায়তার দরজা সবসময় তিনি খোলা রেখেছেন। সবসময় তিনি যতটুকু পেরেছেন সাহায্য করেছেন।

এই সহায়তা তিনি শুধু আওয়ামী লীগ নয়, জামাত- ফ্রিডম পার্টি এবং স্বাধীনতা বিরোধী ছাড়া সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের জন্যই অসুস্থতার সময় সহায়তা করেছেন।

বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অতীতে বিএনপির অনেক নেতাকেই সহায়তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অতি সম্প্রতি মারা গেছেন ন্যাপের সভাপতি মোজাফফর আহমেদ। তারও চিকিৎসার খরচ জুগিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া তিনি বিএনপির প্রয়াত নেতা মীর শওকত আলীর জন্য আর্থিক অনুদান দিয়েছিলেন। বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকেও তিনি চিকিৎসার জন্য সহায়তা দিয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়াও বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের অন্তত ১০জন নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন বলে বাংলা ইনসাইডারের কাছে তথ্য প্রমানাদি রয়েছে। এই সমস্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রধান কারণ রাজনৈতিক নয় বলেই প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছেন।

যখন একজন রাজনীতিবিদ সততার সঙ্গে রাজনীতি করেন। অসুস্থতার সময় যখন তিনি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকেন না এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আসেন তখন তিনি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপিপন্থী সংস্কৃতিবিদ হিসেবে পরিচিত আমজাদ হোসেন, গাজী মাজহারুল আনোয়ারকেও প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। এছাড়াও কমিউনিস্টপন্থী এবং বামপন্থী অনেক নেতাদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী অর্থ সহায়তা দিয়েছিলেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে যে, প্রধানমন্ত্রীর এই সহায়তার পিছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, বরং মানবিক কারণেই তিনি এই সহায়তা দেন।

সূত্রমতে, শেখ হাসিনা যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখনই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলকে তিনি শক্তিশালী করেছেন। এই ত্রাণ তহবিল থেকে দুস্থ, গরিব লোকেরা যাতে আর্থিক এবং চিকিৎসা সহায়তা যেন পায় সেটা নিশ্চিত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যে কেউ চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদন করলে সেটি যাচাই-বাছাই করা হয়। যদি দেখা যায় কেউ আর্থিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য, তাকেই সাধারণত সহায়তা দেওয়া হয়। সাধারণত দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা হয় বলে জানা গেছে।

শুধু রাজনীতিবিদরাই নয়, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষ যারা চিকিৎসার আর্থিক দায়ভার মেটাতে গিয়ে সংকটে পড়েন, তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দরজা সবসময় খোলা থাকে।

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সহায়তা পেয়েছেন, এমন একজন বিএনপির নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘বিষয়টি রাজনৈতিক নন, মানবিক। চিকিৎসার অভাবে আমি প্রায় ধুকে ধুকে মরছিলাম। এসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একজন আসেন এবং আমার কাছ থেকে আবেদন নিয়ে যান। এই আবেদনের ভিত্তিতে চারদিনের মাথায় আমি অর্থ সহায়তা পেয়ে যাই।’

আমরা দেখেছি যে, এন্ড্রু কিশোরের অসুস্থতার খবর শুনে প্রধানমন্ত্রী তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছেন, তাকে অনুদানের চেক দিয়েছেন। এটাই হলো আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহত্ব এবং বিশেষত্ব।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা যেই হোক না কেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি মনে করেন বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের উন্নত চিকিৎসা করা দরকার- তখন তিনি নিঃসঙ্কোচে তার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এর মধ্যে কোনো রাজনীতি খোঁজার প্রয়োজন নেই।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭