ইনসাইড পলিটিক্স

ধন্যবাদ শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 31/03/2020


Thumbnail

পৃথিবীতে করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ভাষণ দিয়েছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে তাদের নির্দেশনা দেওয়ার এই বিরল নজির স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ টানা ৩ ঘণ্টা ব্যাপী ভিডিও কনফারেন্সে সারাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। এই ভিডিও কনফারেন্সে তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে করোনা মোকাবেলায় সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার দুরদৃষ্টি, প্রজ্ঞা এবং রাষ্ট্রনায়কোচিত নির্দেশনার কারণে সারাদেশে করোনা মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন শুধু নয়, জনগণও নতুন সাহস সঞ্চয় করেছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬৪ জেলার সঙ্গে একযোগে সম্পৃক্ত হন। এই ভিডিও কনফারেন্সে সম্পৃক্ত হয়ে প্রথমে তিনি একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এরপর ১০ দফা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রীর এসব কর্মপরিকল্পনার মধ্যে প্রথমেই ছিল যে, দরিদ্র মানুষ যাতে ঠিকমতো খাবার পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রান্তিক মানুষ যাতে খাদ্য পায় সেটা সুনির্দিষ্টভাবে নজরদারির মধ্যে আনতে হবে। এসময় কেউ দুর্নীতি করলে তাকে ক্ষমা করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

দ্বিতীয়ত শেখ হাসিনা নির্দেশনা দেন যে, খাদ্য নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখার জন্য কৃষিকাজ অব্যাহত রাখতে হবে। কৃষি বাংলাদেশের প্রাণশক্তি, এজন্য কৃষিকাজ কোনো অবস্থাতেই বন্ধ করা যাবে না।

তৃতীয়ত রোগের লক্ষণ দেখে চিকিৎসকদের চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাম্প্রতিক করোনাভাইরাসের প্রকোপের মাঝে দেখা গেছে যে অনেক চিকিৎসকেরা সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এজন্য সাধারণ জনগণ সীমাহীন ভোগান্তিত পোহাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী এই ব্যাপারটি বন্ধের জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে করে চিকিৎসকেরা রোগের লক্ষণ দেখে চিকিৎসা করেন। একইসঙ্গে বলেছেন যে, সবার জন্য পিপিই নয়। যারা শুধু করোনা সংক্রমণের চিকিৎসা করবেন, তাদেরই পিপিই ব্যবহার করতে হবে।

চতুর্থত, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যে, করোনার জন্য আমাদের যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, তাই এবার পয়লা বৈশাখের কোনো আয়োজন করা যাবে না। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান বাতিলের জন্য তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন।

পঞ্চমত, ১৪ দিনের সামাজিক দূরত্ব যেহেতু করোনা মোকাবেলায় সবচেয়ে ভালো উপায়, তাই তিনি করোনা মোকাবেলার জন্য সাধারণ ছুটি আরও কিছুদিন বাড়িয়ে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সরকারি ঘোষণা আসবে। এর ফলে মানুষের মধ্যে যে অনিশ্চয়তা, উদ্বিগ্নতা ছিল, সেটা দূর হবে।

ষষ্ঠত, প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে করোনার পরীক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। এই নির্দেশনাটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ এটি বার বার কথাবার্তা হচ্ছিলো যে করোনা রোগের যেই পরিমাণ আশঙ্কা রয়েছে, যে পরিমাণ প্রবাসী বিদেশ থেকে এসেছেন, সেই পরিমাণ যদি পরীক্ষা না হয় তাহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। এজন্য তিনি সারাদেশে করোনা পরীক্ষার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

সপ্তমত, প্রধানমন্ত্রী জনগণকে আবার অনুরোধ জানিয়েছেন যে, তারা যেন নির্দেশনা মেনে জরুরি প্রয়োজন মেনে ঘর থেকে বের না হয় এবং সামাজিক যোগাযোগ থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে।

অষ্টমত, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। সরকার সবসময় জনগণের পাশে আছে। জনগণের যেন কোনো দুঃখ দুর্দশা না হয়, সে ব্যাপারে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে সরকার প্রস্তুত।

নবমত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা মোকাবেলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এটা সাধারণ মানুষের জন্য ছিল খুবই উদ্দীপনাদায়ক।

সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনা মোকাবেলায় সরকার যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে বলেই দেশে করোনা এখনো ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি। এ ব্যাপারে তিনি সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রীর ১০ দফা এই নির্দেশনার ফলে করোনা নিয়ে জনমনে যেই অস্বস্তি, আতঙ্ক, নানারকম গুজব সঞ্চারিত হচ্ছিলো, সেগুলোর অবসান হবে। শেখ হাসিনা একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শুধু নয়, জনগণের সেবক হয়ে সর্বদা জনগণের পাশে থাকেন- আজকের এই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেটা আবার আজ প্রমাণ করলেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭