নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ৩১ মার্চ, ২০২০
পৃথিবীতে করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ভাষণ দিয়েছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে তাদের নির্দেশনা দেওয়ার এই বিরল নজির স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ টানা ৩ ঘণ্টা ব্যাপী ভিডিও কনফারেন্সে সারাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। এই ভিডিও কনফারেন্সে তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে করোনা মোকাবেলায় সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার দুরদৃষ্টি, প্রজ্ঞা এবং রাষ্ট্রনায়কোচিত নির্দেশনার কারণে সারাদেশে করোনা মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন শুধু নয়, জনগণও নতুন সাহস সঞ্চয় করেছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬৪ জেলার সঙ্গে একযোগে সম্পৃক্ত হন। এই ভিডিও কনফারেন্সে সম্পৃক্ত হয়ে প্রথমে তিনি একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এরপর ১০ দফা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রীর এসব কর্মপরিকল্পনার মধ্যে প্রথমেই ছিল যে, দরিদ্র মানুষ যাতে ঠিকমতো খাবার পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রান্তিক মানুষ যাতে খাদ্য পায় সেটা সুনির্দিষ্টভাবে নজরদারির মধ্যে আনতে হবে। এসময় কেউ দুর্নীতি করলে তাকে ক্ষমা করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
দ্বিতীয়ত শেখ হাসিনা নির্দেশনা দেন যে, খাদ্য নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখার জন্য কৃষিকাজ অব্যাহত রাখতে হবে। কৃষি বাংলাদেশের প্রাণশক্তি, এজন্য কৃষিকাজ কোনো অবস্থাতেই বন্ধ করা যাবে না।
তৃতীয়ত রোগের লক্ষণ দেখে চিকিৎসকদের চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সাম্প্রতিক করোনাভাইরাসের প্রকোপের মাঝে দেখা গেছে যে অনেক চিকিৎসকেরা সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এজন্য সাধারণ জনগণ সীমাহীন ভোগান্তিত পোহাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী এই ব্যাপারটি বন্ধের জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে করে চিকিৎসকেরা রোগের লক্ষণ দেখে চিকিৎসা করেন। একইসঙ্গে বলেছেন যে, সবার জন্য পিপিই নয়। যারা শুধু করোনা সংক্রমণের চিকিৎসা করবেন, তাদেরই পিপিই ব্যবহার করতে হবে।
চতুর্থত, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যে, করোনার জন্য আমাদের যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, তাই এবার পয়লা বৈশাখের কোনো আয়োজন করা যাবে না। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান বাতিলের জন্য তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন।
পঞ্চমত, ১৪ দিনের সামাজিক দূরত্ব যেহেতু করোনা মোকাবেলায় সবচেয়ে ভালো উপায়, তাই তিনি করোনা মোকাবেলার জন্য সাধারণ ছুটি আরও কিছুদিন বাড়িয়ে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সরকারি ঘোষণা আসবে। এর ফলে মানুষের মধ্যে যে অনিশ্চয়তা, উদ্বিগ্নতা ছিল, সেটা দূর হবে।
ষষ্ঠত, প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে করোনার পরীক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। এই নির্দেশনাটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ এটি বার বার কথাবার্তা হচ্ছিলো যে করোনা রোগের যেই পরিমাণ আশঙ্কা রয়েছে, যে পরিমাণ প্রবাসী বিদেশ থেকে এসেছেন, সেই পরিমাণ যদি পরীক্ষা না হয় তাহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। এজন্য তিনি সারাদেশে করোনা পরীক্ষার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
সপ্তমত, প্রধানমন্ত্রী জনগণকে আবার অনুরোধ জানিয়েছেন যে, তারা যেন নির্দেশনা মেনে জরুরি প্রয়োজন মেনে ঘর থেকে বের না হয় এবং সামাজিক যোগাযোগ থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে।
অষ্টমত, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। সরকার সবসময় জনগণের পাশে আছে। জনগণের যেন কোনো দুঃখ দুর্দশা না হয়, সে ব্যাপারে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে সরকার প্রস্তুত।
নবমত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা মোকাবেলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এটা সাধারণ মানুষের জন্য ছিল খুবই উদ্দীপনাদায়ক।
সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনা মোকাবেলায় সরকার যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে বলেই দেশে করোনা এখনো ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি। এ ব্যাপারে তিনি সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রীর ১০ দফা এই নির্দেশনার ফলে করোনা নিয়ে জনমনে যেই অস্বস্তি, আতঙ্ক, নানারকম গুজব সঞ্চারিত হচ্ছিলো, সেগুলোর অবসান হবে। শেখ হাসিনা একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শুধু নয়, জনগণের সেবক হয়ে সর্বদা জনগণের পাশে থাকেন- আজকের এই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেটা আবার আজ প্রমাণ করলেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।