ইনসাইড বাংলাদেশ

‘করোনা চিকিৎসার জন্য প্রতি আইসিইউ বেডের ভাড়া হবে মাত্র ২ হাজার টাকা’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 05/07/2020


Thumbnail

বাংলাদেশে যখন করোনা চিকিৎসা নিয়ে নানা সমালোচনা, বেসরকারি হাসপাতালগুলোর লাগামহীন মূল্য এবং করোনা নিয়ে ব্যবসা, ঠিক সেই সময়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যেন আশার আলো দেখালো। বিএসএমএমইউ গত শনিবার থেকে করোনা চিকিৎসা শুরু করেছে এবং এই প্রেক্ষিতে বাংলা ইনসাইডারের মুখোমুখি হন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন যে, আমরা গতকাল থেকে করোনা চিকিৎসা শুরু করেছি এবং এই চিকিৎসা দেওয়া হবে একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে এবং সুশৃঙ্খলভাবে। তিনি জানান যে, প্রথমে যে রোগীরা আসবে তাঁরা কেবিন ব্লকের নিচে থাকবে, যেখানে ২৬ টি শয্যা রয়েছে। কেউ আসতে পারে টেস্ট ছাড়া, কেউ আসতে পারে টেস্ট করে পজিটিভ আসার পর। যারা টেস্ট ছাড়া আসবে তাঁদের পরীক্ষা করা হবে এবং পরীক্ষা করে যারা আসবে তাঁদেরকে পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে যে তাঁদের ভর্তি করতে হবে কিনা। যদি শ্বাসকষ্ট বেশি থাকে তাহলে তাঁকে আমরা ভর্তির জন্য কেবিনে অথবা বেডে পাঠাবো। আর যদি দেখি অবস্থা স্থিতিশীল নয় তাহলে সেসব রোগীদের আমরা আইসিইউ-তে পাঠাবো।

বিএসএমএমইউ-এর উপাচার্য বলেন যে, ১৫ টি আইসিইউ এবং এসডিইউসহ এই ধরণের চিকিৎসার জন্য ৪২ টি বেড রয়েছে। যে দুটি ফ্লোরে চিকিৎসা হচ্ছে সেখানে ২৪০ জনের বেশি রোগী চিকিৎসা পেতে পারেন। প্রত্যেকটি বেডের সঙ্গে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা আছে এবং হাই ফ্লো অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও বেতার ভবনে ১২০ বেডের একটি আইসোলেশন সেন্টারও করা হয়েছে। বাংলাদেশে এই প্রথম একটি হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ করোনা চিকিৎসা দিচ্ছে। যেভাবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় করোনা চিকিৎসা করা উচিত সেভাবেই করোনা চিকিৎসা দিবে বলে অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া দাবি করেন।

তিনি বলেন যে, এখানে শুধু কিছু ওষুধ কিনতে হবে রোগীদেরকে। যেমন যদি রেমডেসিভির প্রয়োজন হয়, যেটার দাম বেশি, সেটা আমরা দিতে পারবো না। সেগুলো রোগীদেরকে কিনতে হবে। তিনি বলেন যে, কেউ যদি কেবিনে থাকতে চান তাহলে কেবিন ভাড়া এবং আগের নির্ধারিত মূল্যেই কেবিন পাবেন। এক ধরণের কেবিন আড়াই হাজার টাকা এবং অন্য একটির ভাড়া সাড়ে ৪ হাজার টাকা। আর রোগীকে আইসিইউ-তে নেওয়া হলে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। যেটা অন্য যেকোন হাসপাতালের তুলনায় অবিশ্বাস্য রকম কম।

বিএসএমএমইউ-এর উপাচার্য জানান যে, ফ্রন্টলাইনে ৬৫ জনের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা প্রথম ৭ দিন দায়িত্ব পালন করবেন এবং এরপর ১৪ দিনের জন্য আইসোলেশনে থাকবেন। এরপর ১ সপ্তাহ তাঁর পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন। এরকম আড়াইশ থেকে তিনশ চিকিৎসকের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে যারা ফ্রন্টলাইন অর্থাৎ সরাসরি রোগীদের সংস্পর্শে আসবেন। এরপর দ্বিতীয় ধাপে আছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যারা সকাল-বিকাল রাউন্ড দিবেন এবং রোগীদের যে সমস্যাগুলো তা শুনবেন ও দেখবেন। এরপরে আছে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসকরা। যারা ভার্চুয়ালি অপিনয়ন দিবেন, ফ্রন্টলাইন চিকিৎসকরা রোগীদের সমস্যার কথা তাঁদের কাছে বলবেন এবং বিশেষজ্ঞরা রোগীদের পরামর্শ দিবেন।

বাংলাদেশে করোনা চিকিৎসা নিয়ে যখন নজিরবিহীন হ-য-ব-র-ল অবস্থা তখন বিএসএমএমইউ করোনা চিকিৎসা সম্পর্কে একটি দিকনির্দেশনা দিচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে কেন বিএসএমএমইউ এই চিকিৎসা এত দেরিতে শুরু করলো? উত্তরে ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন যে, আমাদেরকে সরকার চিঠি দিয়েছে গত ২৭ জুন এবং আমরা চিকিৎসা শুরু করেছি ৪ জুলাই। তাহলে কি আমাদের চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হলো?

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭