ইনসাইড বাংলাদেশ

‘করোনা পরীক্ষায় মূল্য নির্ধারণ একদিক থেকে যৌক্তিক’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/07/2020


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা একদিক থেকে যৌক্তিক। কারণ বিনামূল্যে যখন করোনা পরীক্ষা করা হতো, তখন অযৌক্তিকভাবে বিনা প্রয়োজনে অনেকে করোনা পরীক্ষা করতো। এর ফলে যাদের উপসর্গ আছে বা যারা আক্রান্তের ঝুঁকিতে আছে, তারা পরীক্ষার সুযোগ পেত না। মূল্য নির্ধারণ করার ফলে অযৌক্তিকভাবে যারা বিনা কারণে পরীক্ষা করছিল, তাদের পরীক্ষার প্রবণতা বন্ধ হয়েছে।’ বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিনের আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনা পরীক্ষার শুরুটা হয়েছিল খারাপ। মাত্র একটি ল্যাব দিয়ে পরীক্ষা করা শুরু হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে ল্যাবের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এখন ৭৭টি ল্যাব থেকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু গত কয়েকদিন বিশেষ করে, মূল্য নির্ধারণের পর দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষার সংখ্যা কমে যাচ্ছে।’

পরীক্ষার সংখ্যাটা কমে যাওয়াটা ভালো লক্ষণ নয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মূল্য নির্ধারণের কারণে হয়তো পরীক্ষা কমে গেছে। কিন্তু মূল্য নির্ধারণটা একদিক থেকে সঠিকই ছিল। কারণ বিনা কারণে অনেকে যেমন নমুনা পরীক্ষা করতো, তেমনি নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে দীর্ঘ লাইনের ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়তো। আমাদের কাছে এরকম তথ্য প্রমাণও আছে যে, লাইনে দাঁড়িয়েই অনেকে করোনা সংক্রমিত হয়েছে। এ কারণেই মূল্য নির্ধারণের ফলে অযথা যারা পরীক্ষা করতো, সেটা বন্ধ হয়েছে।’

ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, শুধুমাত্র যে মূল্য নির্ধারণের কারণে পরীক্ষা কমেছে, তা ঠিক নয়। এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে। যেমন- সারাদেশে এখন বন্যা চলছে। বন্যার কারণে একটা জনগোষ্ঠী পানিবন্দি হয়ে আছে। তারা পরীক্ষার জন্য যেতে পারছে না। ফলে এখানেও কিছু মানুষ কমে যাচ্ছে। যারা বন্যাদুর্গত, তারা করোনা পরীক্ষার জন্য কোথাও যেতে পারছে না। এছাড়াও একটি কারণ হচ্ছে যে, এখন সরকার কড়াকড়ি আরোপ করেছে- যাদের লক্ষন থাকবে, তারাই পরীক্ষা করবে। আগে লক্ষণ ছাড়া লোকজন পরীক্ষা করতে যেত। এখন দেখা যাচ্ছে, যাদের জ্বর বা কাশি বা অন্য কোনো উপসর্গ আছে, তারা পরীক্ষা করতে যাচ্ছেন। বিনা কারণে পরীক্ষাকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এটিও পরীক্ষা কম হওয়ার একটি কারণ। তবে সত্যিই যদি ২০০ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষা করা কারও জন্য কষ্টকর হয়, সেজন্য সরকার বিকল্প চিন্তা করতে পারে। সরকারি হাসপাতালেই দুটি বুথ করা যেতে পারে। একটি বিনামূল্যের বুথ। সেখানে যারা টাকা দিতে অক্ষম তারা লাইনে দাঁড়াবেন। লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা পরীক্ষা করাবেন। অন্য বুথটি হলো ফি দিয়ে যারা পরীক্ষা করবে তাদের জন্য। সেখানে তাদের একটু সুযোগ সুবিধা বেশি দেওয়া হবে। তাদের কম ভোগান্তি হবে বা তাদের কাজটা দ্রুত হবে। এ রকম ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এভাবে যদি দুটো বুথ করা হয়, তাহলে যারা মূল্য নির্ধারণের কারণে পরীক্ষা করাতে পারছেন না, তারাও সুযোগ পাবেন। তবে একটা বিষয় দেখা দরকার যে, বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেখানে ৪ হাজার, ৫ হাজার বা ৬ হাজার ফি নিচ্ছে, সেখানে সরকারি হাসপাতালের ২০০ টাকা ফিস খুব বেশি অযৌক্তিক নয়। যারা সামর্থবান তারা তো বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন এবং টাকা দিয়ে পরীক্ষা করছেন। কিন্তু সরকারি হাসপাপালে যদি একেবারেই ফি না নেওয়া হয়, সেটাও এক ধরনের খারাপ দৃষ্টান্ত হতে পারে। তবে শুধুমাত্র টাকার কারণে যেন কেউ পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন ডা. আব্দুল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘উপসর্গ আছে অথচ টাকা না থাকার কারণে কেউ যেন পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়টির দিকেও খেয়াল রাখা দরকার।’



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭