কালার ইনসাইড

এ ডটারস টেল : সিনেমার ফ্রেমে শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 27/09/2020


Thumbnail

“খন্দকার মুশতাক আহমেদের নেতৃত্বে আজ ভোরে সামরিক বাহিনী দেশের সর্বময় ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন, শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে”, রেডিও অ্যানাউন্সমেন্টটি চলতে চলতে সিড়ি ধরে ক্যামেরা উপরে উঠছে ব্যাকগ্রাউন্ডে ভেসে আসছে পান্নালাল ভট্টাচার্যের বঙ্গবন্ধুর প্রিয় গান “আমার সাধ না মিটিলো আশা না পুরিলো… সকলি ফুরায়ে যায় মা…… টপ শটে সিড়ি ধরে একজন উঠছেন উপরের দিকে। আসলেন ক্যামেরায়। শেখ হাসিনা! রক্তের বন্যা পেরিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের আশা আকাঙ্ক্ষার ভার বয়ে নিয়ে চলা বঙ্গবন্ধু কন্যার একান্ত কিছু কথা নিয়ে নির্মিত সিনেমার দৃশ্য এটি।

এটি কোনো প্রধানমন্ত্রীর গল্প ছিলো না, ছিলোনা কোনো রাষ্ট্রনায়কের গল্প। বঙ্গবন্ধুকে আমি আপনি বইতে পড়ে ইতিহাস ঘেটে যতোটা জানতে পেরেছিলাম তার থেকে বেশি জানতেন একজন, সেই একজনের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়ে আসা শব্দ আর সিনেমার ফ্রেমে উঠে আসা গল্পটিই এ ডটারস টেল। কেমন ছিলেন জাতির পিতার তার মেয়ের প্রতি প্রেম, খুনসুটি। কিংবা কেমন ভালোবাসতেন তিনি তার স্ত্রীকে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যখন বাড়িতে আসতেন তখন কি জড়িয়ে ধরতেন প্রিয় হাসুকে!

১৯৭৫ এর আগস্টের ১৫ আগস্টে বেলজিয়ামে ছিলেন শেখ হাসিনা, সাথে ছোটবোন রেহানা। ১৪ তারিখ রাতে ছিলো একটি ক্যান্ডেল লাইট ডিনার, সেদিন খুব আনন্দ করছিলেন সবার সাথে মিলে। সকালের একটি কর্কশ ফোনকলে জানতে পারলেন যে বাংলাদেশে ক্যু হয়েছে। ওই সময়ে বেলজিয়ামের টেলিভিশনে শেখ মুজিবের ছবি দেখানো হচ্ছিলো, কিন্তু ভাষা বুঝতে না পারায় শেখ হাসিনা ঘটনা বুঝে উঠতে পারছিলেন না। সিনেমার গল্পে এভাবেই উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশের ওই সময়ে সুদূর জার্মানিতে থাকার কারণে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া শেখ হাসিনার দিনগুলোর গল্প।

পাশাপাশি মায়ের সাথে শেখ হাসিনার সম্পর্কের গল্প শুনিয়েছেন নিজ মুখে। বোনদের প্রেমপত্র এলে মা কে বলে দেওয়া, শেখ জামাল, শেখ কামালের সাথে কাটানো সময়ের গল্প, শেখ মুজিবের সাথে কাটানো সময়ের না বলা কথাগুলো একজন মেয়ের জায়গা থেকে দর্শকদের বলেছেন শেখ হাসিনা।

সিনেমাটোগ্রাফির জাদুতে রুপকথার মতো সুন্দর হয়ে ওঠা টুঙ্গিপাড়া এবং শেখ হাসিনার টুঙ্গিপাড়া প্রতি প্রেম ও  ঢাকায় চলে আসার গল্পের সাথে ৭৫ এর আগস্টের ওই সময়ে বেলজিয়ামের দুর্বিষহ বর্ননা দর্শকের চোখ ভারী করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।

পিতামাতা বিহীন দুই বোনের বিদেশে থাকাকালীন বিভিন্ন ঘটনা এবং ইন্দিরা গান্ধীর হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পুরো বর্ননা উঠে এসেছে শেখ হাসিনার মুখে। স্মৃতি থেকে কথা বলেছেন শেখ রেহানাও।

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে ভাগ্যগুণে বেঁচে গেলেও ২০০৪ এ শেখ হাসিনার উপরে হামলার ঘটনাটিও ঊঠে এসেছে শেখ হাসিনার মুখে। ২০০৪ এ নিজে আবারও প্রানে বেঁচে গেলেও আবারো হারিয়েছিলেন কাছের কিছু মানুষকে। কিন্তু যার শরীরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত বইছে সেই নিঃশ্বাস কি করে বন্ধ করে দিতে পারে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। শক্ত হাতে দল ও দেশের হাল ধরে বাংলাদশকে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়ে বাংলাদেশকে আরো শক্তিশালী করার কথা বলেছেন।

রেজাউর রহমান খান পিপলুর পরিচালনায় ৫ বছর সময় ধরে নির্মিত এই সিনেমাটি বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে ২০১৮ সালে। এই সিনেমায় আমরা পেয়েছি জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে, পেয়েছি মমতাময়ী মা কে, সেইসাথে পেয়েছি নাতি নাতনিদের কাছে প্রিয় এক স্নেহময়ীকে। যিনি আর দশটা বাঙ্গালী নারীর মতো রান্না করতে পারেন, আদর স্নেহে ছেলে, নাতি নাতনিদের পাশে রাখতে পারেন এবং একইসাথে পারেন শক্তহাতে স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়ে যেতে।

সিনেমার একপর্যায়ে আমরা দেখতে পাই বঙ্গবন্ধু ইংরেজিতে বলছেন, "We don`t believe in revenge, we believe in the philosophy of Bengali life- love, love and love."। কিন্তু স্নেহময় পিতার ভালোবাসা চিরতরে হারিয়ে ফেলা শেখ হাসিনা চোখের পানিতে দর্শকদের ভাসিয়ে সিনেমার ফ্রেমে বলে গিয়েছেন বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশের গল্প।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মদিনে বাঙ্গালীর আশা আকাঙ্ক্ষার বাতিঘরকে জানাই “শুভ জন্মদিন”। সিনেমার ফ্রেমে মৃত্যু নামক গল্পের পাশ কাটিয়ে হয়তো আবারও কখনো সেলুলয়েডের পর্দায় হাজির হবেন শেখ হাসিনা।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭