কালার ইনসাইড

শোবিজের তারকারা আওয়ামী লীগে: দু:সময়ে ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 28/01/2021


Thumbnail

শোবিজের  তারকারা কেন রাজনীতিতে আগ্রহী হচ্ছেন । চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সবে শেষ হলো । নির্বাচনে  প্রচারণা হয়েছে উত্তেজনাপূর্ণ ।  প্রচারণা হয়েছে কিন্তু ভোটের দিন ছিলো নিরুত্তাপ ।   মাত্র ২২ শতাংশ ভোট  হয়েছে। নির্বাচনের অনেকগুলো আকর্ষণীয় দিক এর মধ্যে একটা ছিল যে  ঢাকা থেকে শোবিজ তারকারা চট্টগ্রামে গেছেন এবং নির্বাচনী প্রচারণায় তারা সফল ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন ‌।  শুধু তাই নয় ২০১৮ এর জাতীয় নির্বাচন থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে , তারকারা রাজনীতির প্রতি ব্যাপক ভাবে আকৃষ্ট হচ্ছে এবং সুযোগ পেলেই রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণা এবং এবং সুযোগ পেলেই মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত হয়ে পড়ছেন ‌।  

দেখা যায় যে, নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন  একটা সংক্রামক ব্যাধির  রূপ ধারণ করলো ‌ । আওয়ামী লীগের নমিনেশন নেওয়ার জন্য সমস্ত প্রথম সারির নায়ক নায়িকারা যারা একসময় জাসাস করতো তারেক ও খালেদা জিয়ার সাথে নানা কারণে ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিলো তারা পর্যন্ত মনোনয়ন  চাইল । তারপর এটাও দেখা যায় যে, বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এমন সব নায়ক নায়িকারা উপস্থিত হচ্ছেন যাদের অতীত কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ ‌। এর মধ্যে কেউ জাসাসের নেতা ছিলেন আবার কেউ বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন ।  এরা কেউ তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চালিয়ে গেছেন ।

সমষ্টিগত ভাবে দেখা যায় যে, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকেন তখন সেই দলের রাজনীতির তোষণ করা আমাদের আমাদের তারকাদের  একটা চিরতর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে । কিন্তু প্রশ্নটা হল,  ইদানীং আমাদের তারকাদের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ অধিক পরিমাণে বেড়েছে । এমনকি স্থানীয় নির্বাচন ও পৌরসভা নির্বাচনেও যাচ্ছেন তারকারা । এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ যে বেশি উৎসাহী তা কিন্তু না ‌। আওয়ামী লীগের অনেক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা ইতিমধ্যে অনেক তারকাদের ব্যাপারে নিরুৎসাহী । কিন্তু তারকাদেরই এটা নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ তারা রাজনীতির সাথে জড়িত হতে চায় এমনটা জানা যায় ।

একটি জরিপ করে দেখা গেছে যে, এই বিষয়টির একাধিক কারণ আছে  প্রথম কারণ হলো তারকাদের আগের মত কাজ নেই। তার ওপর সিনেমার বাজার মন্দা । দেশের নাটক গুলো এখনো বাজারে তেমন কোন একটা প্রভাব ফেলতে পারছে না । করোনার কারণে যেসব নাটক ও ওয়েব ফিল্ম যেসব হচ্ছে তাও শুধু একটা মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী করছেন । বলা যায় যে, যারা  বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রচারণায় যারা যাচ্ছেন তাদের হাতে তেমন কোন কাজ কর্ম নেই । তারকারা এসব প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করে ক্ষমতাসীন দলের সাথে  ঘনিষ্ঠ হতে চায়। কারণ ক্ষমতাসীন দলের সাথে ঘনিষ্ঠ হলে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় ।

ইদানীং সচিবালয় ও প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যালয়ে  দেখা যায় তারকাদের উপস্থিতি । বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর পক্ষে তদবির করার জন্য মন্ত্রী সচিব দের কাছে ধন্না দেয় । কাজেই বাংলাদেশী তারকাদের তদবির বাণিজ্যের একটা নতুন ধারা তৈরি হয়েছে ।  তারকারা নিজেদের স্বার্থেই তদবির বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন । কারণ তদবির  বাণিজ্য করতে গেলে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া যায় ।  ফায়দা হিসেবে তারকারা দেখছেন যে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেয়া এটা তদবির বাণিজ্যের একটা ভালো তরিকা ‌।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন যে, তারকাদের আগের যেই  চাহিদা ছিল তা আর নেই। মানুষ এখন তারকাদের যে ভোট দেয় এই বাস্তবতা এখন আর  নেই  । যদিও ভারতের পশ্চিম বাংলায় তৃণমূল তারকাদের হাইপ করে তারা ব্যবহার করছেন । কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল যাদেরকে নিয়েছে এবং রাজনীতিতে যারা মমতা ব্যানার্জির সাথে কাজ করছেন সবাই কিন্তু খুব জনপ্রিয় এবং সময়ের সাথে ব্যস্ত তারকা। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা কিন্তু সেরকম নয় । আমাদের তারকারা নিশ্চয়ই রাজনীতি করবে কিন্তু আজকে যারা সুসময় আওয়ামী লীগের পাশে আছে তারা যেন দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের পাশে থাকে সেটাই এখন জনগণের প্রত্যাশা । কারণ হাজার ১৯৭৫ সালের পরে দেখা গিয়েছে যে , আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে আলমগীর, কবরী, কুমকুম ছাড়া কোনো তারকাকে আওয়ামী লীগের পাশে পাওয়া যায়নি । সুতরাং আজকে যারা সুসময়ের পাখি তারা কি দুঃসময়ে থাকবে কিনা সেটাই প্রশ্ন !



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭