ইনসাইড থট

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণার উদ্দেশ্য কি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/02/2021


Thumbnail

গতকাল দেখলাম যে, হাইকোর্টে আল জাজিরার বাংলাদেশের সম্পর্কে যে নেতিবাচক প্রচারণা করেছে সে বিষয়ে হাইকোর্ট তাদের রায় প্রদান করেছেন।  যেহেতু হাইকোর্ট তাদের রায় প্রদান করেছেন সেজন্য আমি এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য প্রদান করতে চাই না।  তবে শুধু এতটুকু বলবো, আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে যে বিচারকরা যখন জিজ্ঞাসা করেছেন যে, এতদিন হয়ে গেলো জনগণ যা যা পড়ার বা দেখার তা সবাই পড়েছে বা দেখেছে এখন এটা বন্ধ করাতে কি লাভ হবে।  যাইহোক এ বিষয়টি রেখে আমি আসলে কথায় আসছি সেটি হচ্ছে এই যে, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এই দলের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা আগে থেকেই ছিল এখন আরো বাড়ছে এবং দিন দিন এই নেতিবাচক প্রচারণা আরো বাড়বে। 

বিশ্বব্যাপী সবাই জানে যে, যাদের অজস্র টাকা আছে তারা মিথ্যাকে ব্যবহার করে সত্যকে মিথ্যা বানিয়ে ফেলতে পারে।  হিটলারের প্রচারমন্ত্রী যোসেফ গোয়েবলস তখন বার বার মিথ্যাকে লোকের কানে দিয়ে সত্য হিসেবে গ্রহণ করাতে সক্ষম হয় নি। এখন গোয়েবলস এর অভাব বর্তমান যুগে নেই।  বরং পার্থক্য হচ্ছে গোয়েবলস হয়ত ততটা শিক্ষিত ছিল না কিন্তু এখন যারা এসব করে তারা যথেষ্ট লেখাপড়া করে এবং তারা যথেষ্ট পরিশ্রম করেই বাংলাদেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি বিশ্বের সামনে প্রচার করতে চায়।  তাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। যিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পরিচিত যিনি এই করোনাকালেও দেশের জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সবকিছুকেই সচল রেখেছেন এবং ভ্যাকসিন সময়মতো পেয়েছেন।  আমাদের জিডিপির উন্নতি হচ্ছে, সমস্ত দিক থেকে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীতে একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।  এই অবস্থায় নেতিবাচক প্রচারণার উদ্দেশ্য কি?

উদ্দেশ্য হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বে এবং এদেশের জনগণের সামনে কোনও রকমভাবে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করা যায় তখনই তারা আসল আঘাতটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে করবে। এগুলো কোবলমাত্র ভূমিকা। অর্থাৎ আসল আঘাত তারা এখনো শুরু করে নি। তারা কেবলমাত্র মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রচারনা করে দেখছে যে এর ফলাফল কি হয়। আমার ধারণা তারা যেটা আশা করেছিলো সেটা হয়েছে।  সেটি হলো আওয়ামী লীগের মতো একটি শক্তিশালী দলে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে এই যে নেতিবাচক প্রচারণা করা হলো এর কোনও সঠিকভাবে যুক্তি দিয়ে সত্যিকারের কোনও প্রতিবাদ আমার নজরে পড়েনি।  একমাত্র ব্যাতিক্রম হচ্ছে বাংলা ইনসাইডারের সৈয়দ বোরহান কবীর।  তিনি প্রথম থেকে এর প্রতিবাদ করে গেছেন।  তিনি অন্যের মতো এটি সঠিক নয় না বলে একের পর এক যুক্তি দিয়ে এই বিষয়টি জনগণকে জানাবার চেষ্টা করেছেন।  এমনকি তিনি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনেও লিখেছেন।  এবং প্রত্যেক জায়গায় তিনি যুক্তি দিয়ে বলেছেন। 

আর এরপরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী ডয়েচে ভেলেতে এর প্রতিবাদ করেছেন। সেখানে ডয়েচে ভেলের নামকরা সাংবাদিক টিম সেবাস্টিয়ানের প্রশ্নে আবার এই আল জাজিরার প্রসঙ্গ আসে। এবং তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে এইসব প্রশ্নের উত্তর দেন। টিম সেবাস্টিয়ান গওহর রিজভীকে নোটের পরে নোট অনেক বড় বইয়ের সমান হবে, সেই সমস্ত পয়েন্ট তুলে আনছিলেন যাতে তাকে একের পর এক ঘায়েল করা যায়।  এমনকি যখন প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর গওহর রিজভী সঠিক, সুন্দরভাবে এবং যুক্তি দিয়ে দিয়েছেন।  যেমন একটি উদাহরণ দেই, তিনি যখন আমাদের সেনাপ্রধানকে নিয়ে কথা বলেন। তখন তিনি বোঝান তিনি যখন ক্যাডেটও হননি তখন তার ভাইদের নিয়ে তাকে জড়ানো হলো।  এর কি যুক্তি আছে ? কিন্তু এর কোনও জবাব টিম সেবাস্টিয়ান দিতে পারলো না। 

তারপরে আর একটি জায়গায় গওহর রিজভী যাতে বিরক্ত হন সেজন্য তাকে বলা হয় আপনাকে তো উপদেষ্টা করা হয়েছে এবং টাকা দেয়া হয় যাতে করে আপনি সরকারের এই নেতিবাচক কাজগুলোকেও সমর্থন করবেন।  তিনি শুধু প্রতিবাদ স্বরূপ না না বলে অন্যান্য পয়েন্টে আলাপ করলেন।  এর কিছু পরে যখন গওহর রিজভীকে উত্তর দিতে না দিয়েই তারা অন্য প্রশ্নে ঢুকে যাচ্ছিলেন তখন গওহর রিজভী বলেন, শুনুন আপনি আমাকে প্রশ্ন করেছেন আমাকে উত্তর দিতে হবে।  আমি সবই বুঝলাম তখন থেকে আপনি একের পর এক বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক সব প্রশ্ন করলেন। বাংলাদেশের যে উন্নতি হয়েছে, কোভিড-১৯ এ যেখানে আপনার দেশ পর্যন্ত কিছুই সঠিকভাবে করতে পারে নি সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেশে সঠিকভাবে করেছেন। আপনার দর্শকদের তো আপনি সেটি বলছেন না।  তার মানে আপনাকে টাকা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশের নেতিবাচক প্রচারণার জন্য। 

আমি বলতে চাচ্ছি এই যে, জিনিষটি এর আসল প্রতিবাদের ভাষা ছিলো যুক্তিপূর্ণ দিয়ে।  কারণ যখন মিডিয়াতে বলে তখন তার জবাব মিডিয়াতেই দিতে হয়।  লেখার জবাব লেখায়, কথার জবাব কথায় এটিই বিশ্বে প্রমানিত এবং এতেই কাজ হয়।  শুধু আন্দাজে বলে দিলাম যে ঠিক বলা হয়নি তাতেই লোকজন বিশ্বাস করবে এটা হতে পারে না।  এতো বড় আওয়ামী লীগের কি কোনও প্রচার সেল আছে ? আমার তো মনে হয় নাই। হয় তারা এই করোনাতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অথবা তারা করোনার টিকা নেয়ার অপেক্ষায় আছে।  যদি তাই না হতো তাহলে শুধুমাত্র একটি কাজই সফলতার সাথে হচ্ছে আর তা হলো যারা অন্য দল থেকে ঘুরে আওয়ামী লীগে আসছে তাদেরকেই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে। তারাই বড় বড় কাজ করছে। কিন্তু যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সরাসরি আঘাত আসছে তখন তার যুক্তিপূর্ণ উত্তর দেয়ার জন্য লোকের অভাব দেখা যাচ্ছে। 

এতো বুদ্ধিজীবী এতো রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়া হয় বছরের পর বছর তাহলে তারা কি করছে। আমরা না হয় সাধারণ লোক, আমরা কিছু করি নাই যার জন্য রাষ্ট্র আমাদের কোনও পদক বা কিছু দেবে। আর আমি সেটা আশাও করি না।  আমরা পদক পাওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বস করি না, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কারণে তার আদর্শে বিশ্বাসী।  আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে কথা বলি তাকে বিশ্বাসের কারণে।  তিনি এতো বুদ্ধিজীবীকে পদক দিলেন কিন্তু এখন এইসব বুদ্ধিজীবীরা কোথায় গেলেন।  আমি একটি উদাহরণ দেই, ১/১১ তে আমি তখনকার যে প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের অফিসে আমি একা গিয়েছিলাম। নেত্রীকে বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন ছিল।  তখন আমি কোনও লোক খুঁজে পাই নাই। সমস্ত দেশবাসি টেলিভিশনে দেখেছে বিষয়টি।  তবুও তো চেষ্টা করেছি। 

জনগণের চেষ্টায় সবকিছু মিল হয়েছে। আমি এখানে কোনও কৃতিত্ব নিচ্ছি না কিন্তু আমি এখানে চেষ্টা টা তো করেছি।  সেটা এখন আওয়ামী লীগের মনে নাই। যদিও মনে থাকার দরকারও নেই।  কিন্তু এই সময় যেখানে সরাসরি তিনি সরকারের সঙ্গে যুক্ত নয় বা দলের সঙ্গে যুক্ত নয়, তিনি নিজে অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং সত্যিকারে বুদ্ধিজীবী বলতে যদি বোঝায়, বয়স খুব কম কিন্তু আমি অবশ্যই সৈয়দ বোরহান কবীরকে একজন বুদ্ধিজীবী বলবো। কারণ যেকোনও সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আঘাত করলে আমি একটি ঘটনা আজ পর্যন্ত দেখি নাই যেখানে নাকি কোনও না কোনও ভাবে তার যুক্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সৈয়দ বোরহান কবীর করেন নি। এই বোরহান কবীর কিন্তু রাষ্ট্রীয় কোনও স্বীকৃতি পায়ও নি পাওয়ার দরকারও বোধহয় তার নেই।  কারণ তার কাজ তো সে কারোর মুখের দিকে চেয়ে করেন না। 

এখন এটি প্রমাণ হলো যে আসলে আওয়ামী লীগে দায়িত্বপূর্ণ কোনও লোক নেই। এরা খামোখা গলাবাজি করতে পারে।  যুক্তি দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাজগুলিকে দেশে এবং বিদেশের জনগণের মধ্যে প্রচার করতে হবে।  যেকোনও অপপ্রচারকে বাধা দিতে হবে তার জন্য উপযুক্ত কোনও সেল নেই। আজও পত্রিকাতে দেখলাম তারা একটি কমিটি গঠন করলেন। শুধু এগুলো করে তো কোনও লাভ হবে না।  আসলে কোথায় কোন লোক আছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে এবং যদি খুঁজে বের করা না হয় মুখে যত বড় বড় কথাই বলা হোক না কেন যখন আমাদের প্রতি চরম আঘাত আসবে তখন কি হবে। ইতিমধ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের টাকা পয়সা লোকজন এবং সবচেয়ে বড় যে তাদের সম্পদ সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের দলে ভেতরে এবং আওয়ামী লীগের সরকারের ভেতরে তাদের লোক ঢুকে গিয়েছে। 

সুতরাং এই আঘাতকে প্রতিহত করতে হলে এখন থেকে অবশ্যই সঠিকভাবে আওয়ামী লীগকে হতে হবে।  আমার কাছে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ তার সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।  এখন যদি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২ দিনের জন্য জ্বরে পড়ে বসে শুয়ে থাকতে হয় এবং কাজ না করেন তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কি হবে তা চিন্তা করা কঠিন। মাত্র আমি ২ দিনে কথা বললাম সেই জায়গায় বছরের পর বছর তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।  দেশ অবশ্যই আগাচ্ছে এতে কোনও সন্দেহ নাই। কিন্তু শুধু আগালে হবে না।  শুধু ভালো কাজ করলেই হবে না সেটি জনগণকে দেশে এবং বিদেশে বোঝতে হবে।  এই জায়গাতে আমাদের বিরাট রকমের একটি ফারাক সৃষ্টি হয়েছে এবং এইখানে যোগ্য লোককে বসানোর জন্য আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭