ইনসাইড বাংলাদেশ

তিস্তার জলাধার বন্ধই মোদির প্রধান টার্গেট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 05/03/2021


Thumbnail

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ২৬ মার্চ ঢাকা সফরে আসছেন। মোদির সফর চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার ঢাকা ঘুরে গেলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। আর এ সফরের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। যদিও বাইরে থেকে বলা হচ্ছে দুই দেশের সম্পর্ক এবং যোগাযোগ বৃদ্ধি তাদের প্রধান লক্ষ্য কিন্তু কূটনীতিক বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, মোদির সফরকে ভারত অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। আর ভিন্ন কারণটি হলো বাংলাদেশ সীমান্তে তিস্তার দুই পাশে জলাধার নির্মাণ যেনো বাংলাদেশ বন্ধ করে সেই অনুরোধ মোদি জানাবেন বাংলাদেশ সরকারকে।

উল্লেখ্য, তিস্তার পানি চুক্তির বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে এবং এই পানি চুক্তির জন্য দুই দেশ সম্মত হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বাধার কারণে এই চুক্তি এখন পর্যন্ত সম্পাদিত হয়নি।  তিস্তার পানি না পাওয়ার ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে এক ধরনের খরা এবং ফসলহানীর ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেনি। আর এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ তিস্তার দুই পাশে ১০০ কোটি ডলার ব্যয়ে জলাধার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলো। এই জলাধার নির্মাণে অর্থায়ন করছে চীন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বর্ষা মৌসুমে তিস্তায় যে পানি আসে সেই পানি তিস্তা থেকে এই জলাধারগুলোতে সংরক্ষণ করা হবে এবং শুকনো মৌসুমে এই পানি তিস্তায় প্রবাহিত করার ব্যবস্থা করা হবে।  এই জলাধার নির্মিত হলে বাংলাদেশের জন্য তিস্তা আর কোনো মাথাব্যথার কারণ হবে না এবং পানি চুক্তি হোক না হোক বাংলাদেশ অংশে পানির সমস্যা হবে না। আর এই জলাধার নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই জলাধার বাস্তবায়নের কাজ একনেকের বৈঠকের জন্য আটকে আছে। এখন পর্যন্ত একনেকে এই জলাধার নির্মাণের প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়নি।  উল্লেখ্য, যখন চীন তিস্তার দুই পাশে জলাধার নির্মাণের প্রস্তাব দিচ্ছে তখন থেকেই ভারত নড়েচড়ে বসেছে এবং ভারত সরকার মনে করছে, তিস্তার দুই পাশে জলাধার নির্মাণ হলে এতে ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং পানি প্রবাহের যে ভারসাম্য সেটা নষ্ট হবে। তাছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকার নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েও ভারত কথা বলছে। এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা করোনার মধ্যেও বাংলাদেশে এসেছিলেন এই জলাধারের নির্মাণের কাজ বন্ধের অনুরোধ জানাতে।  তার এই সফরের পর জলাধার নির্মাণের কাজে একটু শ্লথগতি আসে। 

তবে সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, সরকার এখন পর্যন্ত জলাধার নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে আসেনি। এখন নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রধান বিষয় হিসেবে ভারত দেখছে, যেকোন মূল্যেই এই জলাধার নির্মাণকে স্থগিত করা বা বাতিল করা। আর এটি নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রধান টার্গেট বলে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর বিনিময়ে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশকে কি দেবেন বা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে টানাপোড়েনের বিষয়গুলো আছে বিশেষ করে সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি চুক্তিসহ বিভিন্ন ইস্যু, সেগুলোর কি হবে সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে কূটনীতিক মহল মনে করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিস্তার জলাধার বন্ধের মিশনে মোদি সফল হবেন কিনা সেটি হলো দেখার বিষয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭