ইনসাইড থট

স্বাস্থ্য খাতের ‘মুন্নিদের’ জন্য সরকারের বদনাম!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/04/2021


Thumbnail

‘মুন্নি বদনাম হুয়ি ডার্লিং তেরে লিয়ে’ লিরিকের ভারতের হিন্দি ছবির একটি খুব জনপ্রিয় আইটেম গান ব্রিটেনের স্কুলে পড়ানো হবে। ইংল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট ফর এডুকেশনের নতুন সঙ্গীত পাঠ্যক্রমে যুক্ত করে এই গানের সম্পর্কেই এবার পড়াশোনা করবেন ইংল্যান্ডের পড়ুয়ারা। এর পাশাপাশি আরও একাধিক গান ইংল্যান্ডের মিউজিক স্কুলগুলির পাঠ্যক্রমে রাখা হয়েছে। 

এর মধ্যে রয়েছে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী কিশোরী আমোনকরের ‘সহেলি রে’, অনুষ্কা শংকরের ‘ইন্ডিয়ান সামার’ এবং এ আর রহমানের অস্কারজয়ী গান ‘জয় হো’। কেন এত ভারতীয় গান রাখা হয়েছে সেদেশের স্কুলের পাঠ্যক্রমে? ভারতীয় গানের বৈচিত্র বোঝাতেই এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে।

এই করোনা কালে জেনে হউক আর নে জেনে হউক “সরকারের দালাল” নামে চিহ্নিত একটি টেলিভিশনের ‘মুন্নির আদলের’ একজন নিউজ কাস্টারের ভিডিও ফুটেজ ঘুরছে সরকার ও দেশ বিরোধীদের সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়ালে, ইন-বক্সের চ্যাটিং এ, নানা জায়গায়। এসব মুন্নিদের জন্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে, হচ্ছে চরম। অভিযোগ ৩১ কোটি  ও ১৩ কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা বসুন্ধরার ৩০০ ফুটের পাশে আর ডিএনসিসি) মহাখালী কাঁচাবাজারের উপরে আইসোলেশন সেন্টার উধাও হয়ে গেছে। অমনি সরকার বিরোধীরা এটা লুফে নিলো, নেবারই কথা। কিন্তু আসল সত্য কি সে ব্যাখ্যা দেবার যিনি মুল দায়িত্বে তিনি গা এড়িয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীকে মিডিয়ার সানে ঠেলে দিলেন। কিন্তু কেন? মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কে?

বাংলাদেশ সরকারের RULES OF BUSINESS 1998 (Revised up to 2012) এর Chapter I, Rule no. 4 (iv) ধারা বলে মন্ত্রী জাতীয় সংসদে তাঁর মন্ত্রণালয়য়ের কাজের জন্য সংসদের কাছে দায়ী থাকবেন.........। কিন্তু Rule no. 4 (v) তে বলা হয়েছে যে, একজন সচিব তাঁর মন্ত্রণায়ের প্রশাসনিক প্রধান ও একাউন্টিং চীফ। তিনি তাঁর মন্ত্রণালয়য়ের অধীনস্থ সকল দপ্তরের এ সব আইন মানা হচ্ছে কি না তা সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং মন্ত্রীকে মন্ত্রণালয়য়ের কাজ সম্পর্কে অবহিত করবেন। এর বাইরেও ক্ষমতার যে সব ঘাটতি, ফাঁক ফোঁকর আছে তা কভার করার জন্য RULES OF BUSINESS 1998 (Revised up to 2012) এর Chapter I, Rule no. 4 (iiv) এ দেওয়া ক্ষমতা বলে পুরা ক্ষমতা সচিবদের হাতে পোক্ত করে নেওয়া হয়েছে ‘সচিবালয় নির্দেশমালা-২০১৪’ জারি করে। এসব না জেনে কেন মন্ত্রীরা মিডিয়ার সামনে বলির পাঠা হত যান! বদনাম হয় সরকারের, প্রধানমন্ত্রীর। এসব মন্ত্রীর আক্কেল জ্ঞান দেখে হতবাক হই আমরা অনেকেই, যারা ১৯৭১ সালের হাতের অস্ত্র ফেলে দিয়ে নিরন্তর কলম নিয়ে যুদ্ধ করছি। 

আজ রোববার ১৮ এপ্রিল উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল। রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। ওই হাসপাতালটিতে স্থাপন করা হয়েছে ১০০ শয্যার আইসিইউ এবং ১১২টি এইচডিইউ। এছাড়া রোগীদের জন্য রয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই হাসপাতাল চালু হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মহাখালী কাঁচাবাজারের (ছয় তলা) এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ফাঁকা ভবনে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশেষায়িত ওই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে ৫০০ চিকিৎসক, ৭০০ নার্স, ৭০০ স্টাফ এবং ওষুধ, সরঞ্জামের ব্যবস্থা করেছে। ইতিমধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন শতাধিক চিকিৎসক ও দুই শতাধিক নার্স। শনিবারের মধ্যে কাজে যোগ দেবেন বাকিরা। তবে হাসপাতালটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত হবে বলেও সূত্রটি জানায়।

এ বিষয়ে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, আপাতত ওই হাসপাতালে কেবলমাত্র করোনার চিকিৎসা দেয়া হবে। তবে কোনও অপারেশন করা হবে না বলেও জানান তিনি। 

১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বিনিময়ে গত বছর একই ভবনে নির্মিত একটি হাসপাতাল এতদিন ব্যবহৃত হতো করোনা আইসোলেশন সেন্টার (বিদেশ থেকে আগতদের) এবং বিদেশ-গামীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে। অনেকের মনে থাকার কথা যে, পক্ষ ত্যাগ করে পাকিস্তানি অরিজিন হওয়া বঙ্গবন্ধু প্রেমিক, বর্তমানে আমেরিকার নিউইয়র্কে বসবাসকারী ডা. ফেরদৌস খন্দকারকে  এই আইসোলেশন সেন্টারে রাখা হয় গত বছর জুন মাসে। এখন করোনা হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হলেও পৃথকভাবে চলবে করোনা আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশ-গামীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাবের কার্যক্রমও।    

অন্য দিকে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে বসুন্ধরায় নির্মাণ করা হয় ২০০০ বেডের আইসোলেশন সেন্টার। গত বছর করোনা রোগীর সংখ্যা কমে গেলে এ সময় অব্যবহৃত ও আংশিক ব্যবহৃত মহাখালী, বসুন্ধরাসহ সারা দেশে তৈরি করা ১২ টি হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টারের ব্যয় কমাতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকার ৫টি, চট্টগ্রামের ৬টি ও সিলেটের ১টি হাসপাতাল। কারণ হয় গত বছর এগুলোর জন্য মাসে মাসে অনর্থক বিপুল অংকের টাকা খরচ হতে থাকে। একারণে ঐ সেপ্টেম্বর মাসেই এসব হাসপাতালের সরঞ্জামাদি সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের মাঝে বিতরণ করে দেওয়া হয়।  

উপরের এসব কথা সচিব, তাঁর ডিজি, ডাইরেক্টদের নিয়ে মিডিয়ার সামনে কেন আসেন না! লজ্জা করে, নাকি ভয় করে? এত ভয় থাকলে সচিবগিরি বাদ দেওয়াই ভালো। এট জনগণের করের টাকার ইস্যু, আমার বাবার টাকা না যে আমি কাউকে হিসাব দেবো না। নাকি তাঁরা নিজেরাও একেকটা বদনাম করানোর “মুন্নি”! তাঁদের নিয়ে যে সরকারের বদনাম হয় তা কী তাঁরা বোঝেন না, নাকি অন্য কোন উপায়ে বুঝাতে হবে!

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭