ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রতিদিন নিম্নমুখী হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/05/2021


Thumbnail

করোনায় লণ্ডভণ্ড ভারত। বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ আস্তে আস্তে থেমে যাচ্ছে, আবার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে। ঢিলেঢালা লকডাউনে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি অন্য দেশের তুলনায় ভালো। কিন্তু দুই দেশের এই করোনা পরিস্থিতির পার্থক্যের মতোই দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যেও যেন এক দূরত্বের রেখা দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিনই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক শীতল হচ্ছে, নিম্নগামী হচ্ছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের বিভিন্নক্ষেত্রে সাফল্য ভারতকে বাংলাদেশ বিরোধী করে তুলছে। আবার ভারতের বাংলাদেশ বিরোধিতা, বাংলাদেশের জনগণকে ভারত বিরোধী করছে। এই সংকট যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আবার আগের পরিস্থিতিতে যাবে কিনা সে নয়েও কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করছে।

সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, টাকার কাছে মার খাচ্ছে ভারতীয় রুপি। এটি বলা হয়েছে যে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশের টাকার মান ভারতের রুপিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। এটি ভারতের জন্য যেন প্রচণ্ড আত্মসম্মানের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত এটি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। কিছুদিন আগে বলা হয়েছিল যে অর্থনৈতিক সাফল্যে বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে। সেটি নিয়ে ভারতের মধ্যে এক ধরনের আহাজারি, আর্তনাদ শুরু হয়েছিল। তখন ভারত বাংলাদেশকে একের পর এক আক্রমণ সূচক বক্তব্য রেখে চলেছে। আর বাংলাদেশের টাকা ভারতের রুপি চেয়ে শক্তিশালী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে যখন নতুন করে তোলপাড় চলছে তখন ভারত বাংলাদেশে করোনার টিকা পাঠানো বন্ধ করে রেখেছে। যদিও ভারত বলেছে তার উৎপাদন কম ইত্যাদি কিন্তু সেরাম ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের জন্য যে করোনার টিকা দেওয়ার কথা সেটি তাদের কাছে মজুদ আছে। সরকারি অনুমতি দিলেই তারা পাঠাতে পারবে।

ভারতের আভ্যন্তরীণ চাপ যাই থাকুক না কেন, সেই চাপ থেকে সামান্য কিছু টিকা বাংলাদেশে যদি দেওয়া যেত তাহলে বাংলাদেশের করোনা টিকার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হতো। কিন্তু ভারতের জন্য এই কার্যক্রমটি বন্ধ হয়ে গেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সরকারকে টিকা কার্যক্রম বন্ধ করতে হয়েছে। আর এ কারণেই বাংলাদেশে বুঝতে পেরেছে যে, ভারত বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু নয়। কারণ, প্রকৃত বন্ধু হলে এরকমভাবে টিকা বন্ধ করা উচিত নয়। আর এই কারণেই বাংলাদেশের মন্ত্রীরা এখন প্রকাশ্যে ভারত বিরোধী কথাবার্তা বলছে। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর কথাবার্তা থেকে মনে হচ্ছে যে, ভারতের ব্যাপারে এই সরকারের অবস্থান খুবই অ-সুস্পষ্ট এবং এটি নেতিবাচক।

এই ভারত বিরোধিতার মধ্যেই বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে সম্পর্কটা আবার নতুন করে জ্বালিয়ে নিয়েছে এবং বাংলাদেশ চীনের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় টিকার জন্য চীনের যে উদ্যোগে, সেই উদ্যোগে বাংলাদেশও শামিল হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে এখন তিস্তার পাশের জলাধারের কাজটিকে দ্রুত এগিয়ে নেয়ার পক্ষপাতী। এটি যদি হয় তাহলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত অগ্রগতিশীল পরিস্থিতির তৈরি হবে। দুই দেশের এই সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নাটকীয় ভাবে কেউ কোনো ভূমিকা নেয় কিনা সেটাই দেখার বিষয়। না হলে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরো উদ্বেগ তৈরি করবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭