নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 14/10/2017
বিদেশে অর্থপাচার, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, নৈতিক স্খলনসহ ১১ টি অভিযোগ রয়েছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে। এজন্য সুপ্রিম কোর্টের পাঁচজন বিচারপতি তাঁর সঙ্গে একই বেঞ্চে বসতে চাননি। আজ শনিবার সুপ্রিম কোর্টের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
‘ছুটিভোগরত মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস,কে,সিন্হা মহোদয়ের বিদেশ গমনের প্রাক্কালে প্রদত্ত লিখিত বিবৃতি সম্পর্কে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বক্তব্য’ শিরোনামে বিবৃতিটি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ছুটি ভোগরত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ১৩ অক্টোবর বিদেশ যাওয়ার প্রাক্কালে একটি লিখিত বিবৃতি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। লিখিত বিবৃতিটি সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ওই লিখিত বিবৃতি বিভ্রান্তিমূলক। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের বিবৃতি নিম্নরূপ: ’
‘গত ৩০/০৯/২০১৭ তারিখ মহামান্য রাষ্ট্রপতি মাননীয় বিচারপতি এস কে সিনহা ব্যতিত ৫ জন বিচারপতিকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানান। মাননীয় বিচারপতি ইমান আলী দেশের বাইরে থাকায় তিনি উক্ত আমন্ত্রণে উপস্থিত হতে পারেননি। অপর চারজন অর্থাৎ মাননীয় বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, মাননীয় বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মাননীয় বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এবং মাননীয় বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার মহোদয়গণ মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।দীর্ঘ আলোচনার এক পর্যায়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মাননীয় বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সম্বলিত দালিলিক তথ্যাদি হস্তান্তর করেন। তন্মধ্যে বিদেশে অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, নৈতিক স্খলনসহ আরো সুনির্দিষ্ট গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে মাননীয় বিচারপতি মোঃ ইমান আলী মহোদয় ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের পর ১ অক্টোবর, ২০১৭ তারিখে আপিল বিভাগের উল্লিখিত ৫ জন বিচারপতি মহোদয় এক বৈঠকে মিলিত হন যে, ওই সকল গুরুতর অভিযোগসমূহ মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস. কে. সিনহা মহোদয়কে অবহিত করা হবে। তিনি যদি ওই সকল অভিযোগের ব্যাপারে কোন সন্তোষজনক জবাব বা সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন তাহলে তার সঙ্গে বিচারালয়ে বসে বিচারকার্য পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।এই সিদ্ধান্তের পর ওইদিনই বেলা ১১.৩০টায় মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা মহোদয়ের অনুমতি নিয়ে উল্লিখিত ৫ জন বিচারপতি মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়ের ১৯, হেয়ার রোড, রমনা, ঢাকা বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অভিযোগসমূহ নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন। কিন্তু দীর্ঘ আলোচনার পরেও তার কাছ থেকে কোন প্রকার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা বা সদুত্তর না পেয়ে আপিল বিভাগের উল্লেখিত মাননীয় ৫ জন বিচারপতি তাকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, অভিযোগ সমূহের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তার সঙ্গে একই বেঞ্চে বসে তাদের পক্ষে বিচারকার্য পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। এ পর্যায়ে মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সুস্পষ্টভাবে বলেন যে, সেক্ষেত্রে তিনি পদত্যাগ করবেন। তবে এ ব্যাপারে পরেরদিন অর্থাৎ ০২/১০/২০১৭ তারিখে তিনি তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। এরপর ০২/১০/২০১৭ ইং তারিখে তিনি উল্লিখিত মাননীয় বিচারপতিগণকে কোন কিছু অবহিত না করেই মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট ১ (এক) মাসের ছুটির দরখাস্ত প্রদান করলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন করেন। সে প্রেক্ষিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি মাননীয় বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির অনুরূপ কার্যভার পালনের দায়িত্ব প্রদান করেন।’
‘উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতির পদটি একটি প্রতিষ্ঠান। সেই পদেরও বিচার বিভাগের মর্যাদা সমুন্নত রাখার স্বার্থে এর আগে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে কোন প্রকার বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান করা হয় নাই। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে নির্দেশক্রমে বিবৃতি প্রদান করা হলো,’ বলে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।’
সুপ্রিম কোর্টের এ সংক্রান্ত বিবৃতি নিচের লিংকে পাওয়া যাবে:
http://www.supremecourt.gov.bd/resources/contents/notice_20171014_01.pdf
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭