ইনসাইড পলিটিক্স

তিন ক্ষেত্রে হাজার কোটি টাকা খরচ করছে বিএনপি-জামায়াত


প্রকাশ: 12/12/2021


Thumbnail

দেশে আন্দোলন নয়, জনগণের সাথে মিলে কোন কর্মসূচি পালন নয়, জনগণকে সচেতন করাও নয়, বরং বিদেশে নানারকম ষড়যন্ত্র করে সরকারকে হটানোর এক নীল নকশার বাস্তবায়ন চলছে। আর এই নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য তিনটি কৌশল গ্রহণ করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। আর এই তিন কৌশল বাস্তবায়নের জন্য খরচ করছে হাজার হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাতজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এটিতে বিএনপি-জামায়াত উল্লসিত। বিএনপি-জামায়াতের নেতারাই বলছেন যে, এটি তাদের একটি বিজয়। গত দুই বছর ধরে বিএনপি-জামায়াত দেশে আন্দোলন নয়, দেশে রাজনীতি নয়, বিদেশে ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির এক কৌশল গ্রহণ করেছেন। সেই কৌশলের বাস্তবায়ন এখন হচ্ছে বলেই মনে করছেন বিএনপি-জামায়াত পন্থীরা। আর এজন্য তারা দুহাতে খরচ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য এই তিনটি জায়গায় বসে এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যে তিনটি কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- 

১. সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার: প্রথমত জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে লাগাতার বাংলাদেশ বিরোধী, সরকার বিরোধী, প্রধানমন্ত্রী বিরোধী অপপ্রচার করা হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইউটিউব চ্যানেল এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্মে নোংরা, কুৎসিত, মিথ্যাচার প্রচার করা হচ্ছে। আর এই সমস্ত প্রচারণাগুলো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। বিটিআরসি বা বাংলাদেশ সরকার এগুলো বন্ধ করার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে এই সমস্ত অসত্য কথা গুলো পৌঁছে যাচ্ছে। গোয়েবলসীয় কায়দায় বারবার একই মিথ্যা বলার ফলে অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে কিছুটা হলেও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। 

২. পশ্চিমা দেশগুলোতে অপপ্রচার: পশ্চিমা দেশগুলোতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, গণমাধ্যম স্বাধীন নয় এবং বিরোধী মত দমন করা হয়, এই অভিযোগগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে, সিনেটে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। লবিস্টরা ওই দেশগুলোতে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দেন-দরবার করছেন এবং তাদেরকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রভাবিত করছেন। লবিস্ট ফার্মদের কারণেই বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানা গেছে। লবিস্ট ফার্মরাই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নেও এরকম লবিস্ট নিয়োগ করা হচ্ছে। যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে লাগাতার মিথ্যাচার ঐ সমস্ত দেশের ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের কাছে দিচ্ছে। ফলে ঐ সমস্ত দেশগুলোর নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্বন্ধে একটি ভিন্ন ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে এবং একটি নেতিবাচক ধারনা ও দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির মাধ্যমে তারা সরকারের উপর বিরূপ মনোভাব পোষণ করছে। সেক্ষেত্রেও বিএনপি-জামায়াত পন্থীরা অনেকখানি সফল হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

৩. বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় লবিং: শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নই নয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কাছেও বাংলাদেশ বিরোধী নানারকম অপপ্রচার, মিথ্যাচার পৌঁছানো হচ্ছে। জাতিসংঘে জামায়াত-বিএনপির কিছু পেইড এজেন্ট রয়েছে। যারা জাতিসংঘের সদর দপ্তরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিরোধী কোনো না কোনো প্রশ্ন করে। বিভিন্ন লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করা হয়েছে। যে লবিস্ট ফার্মগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেমন- জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস কমিশন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ বিরোধী নানা রকম তথ্য দেয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এর ফলে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভিন্ন রকম একটি ধারণা পেতে শুরু করছেন। আর এরকম চাপের ফলে বাংলাদেশকে ক্রমশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি করাই এই চক্রান্তের মূল উদ্দেশ্য বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭