দেশে আন্দোলন নয়, জনগণের সাথে মিলে কোন কর্মসূচি পালন নয়, জনগণকে সচেতন করাও নয়, বরং বিদেশে নানারকম ষড়যন্ত্র করে সরকারকে হটানোর এক নীল নকশার বাস্তবায়ন চলছে। আর এই নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য তিনটি কৌশল গ্রহণ করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। আর এই তিন কৌশল বাস্তবায়নের জন্য খরচ করছে হাজার হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাতজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এটিতে বিএনপি-জামায়াত উল্লসিত। বিএনপি-জামায়াতের নেতারাই বলছেন যে, এটি তাদের একটি বিজয়। গত দুই বছর ধরে বিএনপি-জামায়াত দেশে আন্দোলন নয়, দেশে রাজনীতি নয়, বিদেশে ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির এক কৌশল গ্রহণ করেছেন। সেই কৌশলের বাস্তবায়ন এখন হচ্ছে বলেই মনে করছেন বিএনপি-জামায়াত পন্থীরা। আর এজন্য তারা দুহাতে খরচ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য এই তিনটি জায়গায় বসে এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যে তিনটি কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে-
১. সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার: প্রথমত জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে লাগাতার বাংলাদেশ বিরোধী, সরকার বিরোধী, প্রধানমন্ত্রী বিরোধী অপপ্রচার করা হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইউটিউব চ্যানেল এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্মে নোংরা, কুৎসিত, মিথ্যাচার প্রচার করা হচ্ছে। আর এই সমস্ত প্রচারণাগুলো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। বিটিআরসি বা বাংলাদেশ সরকার এগুলো বন্ধ করার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে এই সমস্ত অসত্য কথা গুলো পৌঁছে যাচ্ছে। গোয়েবলসীয় কায়দায় বারবার একই মিথ্যা বলার ফলে অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে কিছুটা হলেও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।
২. পশ্চিমা দেশগুলোতে অপপ্রচার: পশ্চিমা দেশগুলোতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, গণমাধ্যম স্বাধীন নয় এবং বিরোধী মত দমন করা হয়, এই অভিযোগগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে, সিনেটে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। লবিস্টরা ওই দেশগুলোতে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দেন-দরবার করছেন এবং তাদেরকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রভাবিত করছেন। লবিস্ট ফার্মদের কারণেই বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানা গেছে। লবিস্ট ফার্মরাই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নেও এরকম লবিস্ট নিয়োগ করা হচ্ছে। যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে লাগাতার মিথ্যাচার ঐ সমস্ত দেশের ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের কাছে দিচ্ছে। ফলে ঐ সমস্ত দেশগুলোর নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্বন্ধে একটি ভিন্ন ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে এবং একটি নেতিবাচক ধারনা ও দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির মাধ্যমে তারা সরকারের উপর বিরূপ মনোভাব পোষণ করছে। সেক্ষেত্রেও বিএনপি-জামায়াত পন্থীরা অনেকখানি সফল হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
৩. বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় লবিং: শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নই নয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কাছেও বাংলাদেশ বিরোধী নানারকম অপপ্রচার, মিথ্যাচার পৌঁছানো হচ্ছে। জাতিসংঘে জামায়াত-বিএনপির কিছু পেইড এজেন্ট রয়েছে। যারা জাতিসংঘের সদর দপ্তরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিরোধী কোনো না কোনো প্রশ্ন করে। বিভিন্ন লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করা হয়েছে। যে লবিস্ট ফার্মগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেমন- জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস কমিশন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ বিরোধী নানা রকম তথ্য দেয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এর ফলে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভিন্ন রকম একটি ধারণা পেতে শুরু করছেন। আর এরকম চাপের ফলে বাংলাদেশকে ক্রমশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি করাই এই চক্রান্তের মূল উদ্দেশ্য বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।