ইনসাইড পলিটিক্স

সহিংসতার রাজনীতি ভুলেনি জামায়াত-শিবির!


প্রকাশ: 06/02/2023


Thumbnail

গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকাসহ ১০টি বিভাগীয় শহরে একযোগে সমাবেশ করেছে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দল ও জোটগুলো। রাজধানী ঢাকার সমাবেশে ওইদিন সকাল থেকেই বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা নয়াপল্টনে জমায়েত হলেও দেখা যায়নি জামায়াতক-শিবিরের কোনো কার্যক্রম। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের পদচারনায় নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত  রাস্তার একপাশ ভরে যায়। বেলা দুইটায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকার সমাবেশ শুরু হয়। 

এদিকে ঢাকাসহ দেশের ৮ বিভাগে বিক্ষোভ-সমাবেশও করে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটসমূহ। এরই অংশ হিসেবে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতিও ছিল দলটির। সমাবেশ শেষে আসছে ১১ জানুয়ারি ইউনিয়নে ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

কিন্তু এদিন জামায়াত বা তার অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কোনো দেখা পাওয়া যায়নি। তবে আজ সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কিশোরগঞ্জে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক র‌্যালি বের করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এ সময় সেখানে তারা ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া শিবিরের ২১ নেতাকর্মকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ২১ জনের মধ্যে শিবিরের কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য মাসুম বিল্লাহ ও কলেজ শাখার সেক্রেটারি এমদাদ উল্লাহ রয়েছেন। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার প্যাড়াভাঙ্গা ও নতুন জেলখানা মোড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে বলেও গণমাধ্যমকে জানায় পুলিশ। 

পুলিশ জানায়, ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার সকালে ইসলামী ছাত্রশিবির নতুন জেলাখানার সামনের সড়কে র‌্যালি বের করে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে দু’টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান শিবিরের নেতাকর্মীরা। এতে এসআই কামালসহ পুলিশের সাত সদস্য আহত হন। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ১৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে পালানোর সময় প্যাড়াভাঙ্গা ও নতুন জেলখানা মোড় থেকে শিবিরের ২১ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতার অভিযোগে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।   

আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে শিবিরের ককটেল হামলা, আহত ৭ পুলিশ, আটক ২১    

এর আগে বিএনপির সাথে জামায়াত-শিবিরের জোটের ব্যাপারে বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছিলেন, জামায়াতের সঙ্গে তাদের (বিএনপির) আলোচনার কোনো পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই। বরং দূরত্ব রাখার নির্দেশনা রয়েছে। ফলে জামায়াত তাদের কর্মসূচিতে এল কি এল না, সেটা নিয়ে তারা ভাবছেন না। এবার জোট বাদ দিয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে জোট ভেঙে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা এখনও আসেনি। 

অন্যদিকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোসহ বিএনপির ১০ দফা, ২৭ দফাসহ যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের দূরত্বের বিষয়টি জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ স্পষ্ট করেছিলেন। বিএনপি আলোচনা না করে কর্মসূচি দিলে জামায়াত তাতে অংশ নেবে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে হঠাৎ কেন জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা? -এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াত শিবিরের অস্তিত্ব জানান দিতেই শিবির নেতাকর্মীরা কিশোরগঞ্জে ফের সহিংসতার ঘটানা ঘটিয়েছেন। বিএনপির  আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরকে এখন খুব একটা কাছে টানছে না বিএনপি। ফলে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতের একটা নিজস্ব শক্তি রয়েছে, তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদে দিয়ে এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে চাইছে জামায়াত-শিবির। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,সহিংসতার রাজনীতি ভুলেনি জামায়াত-শিবির! জিহাদের যে মন্ত্র তাদের মস্তিষ্কে খেলা করে, তা থেকেই সহিংস হয়ে ওঠে জামায়াত-শিবির। তারা ইসলামী যে মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থান করে নিতে চায়, তা আসলে ইসলাম পরিপন্থী। ইসলাম শান্তির ধর্ম, সহিংসতার নয়। আর অসাম্প্রদায়িক এই দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি স্থান পাবে না। ফলে তারা (জামায়াত-শিবির) খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না। যে কারণেই বিভিন্ন সময়ে এ ধরণের সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়াই তাদের মূল কাজ। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে এ ধরনের সহিংস ঘটনা আবারও দেখা যাবে কিনা?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭