গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকাসহ ১০টি বিভাগীয় শহরে একযোগে সমাবেশ করেছে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দল ও জোটগুলো। রাজধানী ঢাকার সমাবেশে ওইদিন সকাল থেকেই বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা নয়াপল্টনে জমায়েত হলেও দেখা যায়নি জামায়াতক-শিবিরের কোনো কার্যক্রম। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের পদচারনায় নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত রাস্তার একপাশ ভরে যায়। বেলা দুইটায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকার সমাবেশ শুরু হয়।
এদিকে ঢাকাসহ দেশের ৮ বিভাগে বিক্ষোভ-সমাবেশও করে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটসমূহ। এরই অংশ হিসেবে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতিও ছিল দলটির। সমাবেশ শেষে আসছে ১১ জানুয়ারি ইউনিয়নে ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কিন্তু এদিন জামায়াত বা তার অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কোনো দেখা পাওয়া যায়নি। তবে আজ সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কিশোরগঞ্জে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক র্যালি বের করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এ সময় সেখানে তারা ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া শিবিরের ২১ নেতাকর্মকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ২১ জনের মধ্যে শিবিরের কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য মাসুম বিল্লাহ ও কলেজ শাখার সেক্রেটারি এমদাদ উল্লাহ রয়েছেন। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার প্যাড়াভাঙ্গা ও নতুন জেলখানা মোড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে বলেও গণমাধ্যমকে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার সকালে ইসলামী ছাত্রশিবির নতুন জেলাখানার সামনের সড়কে র্যালি বের করে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে দু’টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান শিবিরের নেতাকর্মীরা। এতে এসআই কামালসহ পুলিশের সাত সদস্য আহত হন। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ১৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে পালানোর সময় প্যাড়াভাঙ্গা ও নতুন জেলখানা মোড় থেকে শিবিরের ২১ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতার অভিযোগে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে শিবিরের ককটেল হামলা, আহত ৭ পুলিশ, আটক ২১
এর আগে বিএনপির সাথে জামায়াত-শিবিরের জোটের ব্যাপারে বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছিলেন, জামায়াতের সঙ্গে তাদের (বিএনপির) আলোচনার কোনো পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই। বরং দূরত্ব রাখার নির্দেশনা রয়েছে। ফলে জামায়াত তাদের কর্মসূচিতে এল কি এল না, সেটা নিয়ে তারা ভাবছেন না। এবার জোট বাদ দিয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে জোট ভেঙে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা এখনও আসেনি।
অন্যদিকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোসহ বিএনপির ১০ দফা, ২৭ দফাসহ যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের দূরত্বের বিষয়টি জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ স্পষ্ট করেছিলেন। বিএনপি আলোচনা না করে কর্মসূচি দিলে জামায়াত তাতে অংশ নেবে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে হঠাৎ কেন জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা? -এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াত শিবিরের অস্তিত্ব জানান দিতেই শিবির নেতাকর্মীরা কিশোরগঞ্জে ফের সহিংসতার ঘটানা ঘটিয়েছেন। বিএনপির আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরকে এখন খুব একটা কাছে টানছে না বিএনপি। ফলে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতের একটা নিজস্ব শক্তি রয়েছে, তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদে দিয়ে এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে চাইছে জামায়াত-শিবির।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,সহিংসতার রাজনীতি ভুলেনি জামায়াত-শিবির! জিহাদের যে মন্ত্র তাদের মস্তিষ্কে খেলা করে, তা থেকেই সহিংস হয়ে ওঠে জামায়াত-শিবির। তারা ইসলামী যে মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থান করে নিতে চায়, তা আসলে ইসলাম পরিপন্থী। ইসলাম শান্তির ধর্ম, সহিংসতার নয়। আর অসাম্প্রদায়িক এই দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি স্থান পাবে না। ফলে তারা (জামায়াত-শিবির) খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না। যে কারণেই বিভিন্ন সময়ে এ ধরণের সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়াই তাদের মূল কাজ। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে এ ধরনের সহিংস ঘটনা আবারও দেখা যাবে কিনা?
সহিংসতা রাজনীতি জামায়াত শিবির কিশোরগঞ্জ ককটেল বিস্ফোরণ
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।