নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩০ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ভোট নিয়ে এক ধরণের বিষণ্ণতা জেঁকে বসেছে নগরীর সচেতন মানুষের হৃদয়ের মাঝে। এর থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে ভোটারের কম উপস্থিতি নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা আর মন্তব্যে তাই মিডিয়া সয়লাব। নানা জনে তার নিজের সীমিত জ্ঞান বিবেচনায় নানারূপ মন্তব্য করে অবস্থার বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করে চলেছেন। পাড়া মহল্লাতেও গতকাল এটা ছিল মূল আলোচনার বিষয়। সিটি নির্বাচনে পোল্ড ভোট শতকরা ৩০ এর নীচে বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে। বিভিন্ন সূত্রে কম ভোট পড়ার যে সব কারণ বলা হচ্ছে যে গুলো হচ্ছে-
ইভিএম নিয়ে খোদ একজন নির্বাচন কমিশনারের তির্যক মন্তব্য আর তারই সূত্র ধরে বিরোধীদলের নেতিবাচক প্রচারণা আর ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অপ্রতুল প্রচার মানুষের মধ্যে ভোট দেওয়া জটিল হতে পারে এমন ধারণার জন্ম দিয়েছে। যাতে অনেকের মাঝেই জটিলতা এড়িয়ে চলার জন্য অনীহা দেখা দিয়েছে যা তাঁদের ভোট কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত করেছে।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থীরা বা তার কর্মীরা মিছিল মিটিং করলেও বাসায় বাসায় ভোটার স্লিপ পৌঁছে দেন নি বহু এলাকায়। এতে এই শীতের দিনে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে লাইন ধরে ভোটার স্লিপ নিয়ে ভোট দিতে যাওয়ায় অনেকেই অনীহা দেখিয়েছেন। তাই ভোট কেন্দ্রে যান নি।
ঢাকার এক এলাকার ভোটার হয়েও অনেকে নানা কারণে বাসা পরিবর্তন করে অন্য এলাকায় চলে গেছেন। যানবাহনের অভাবে টাকা খরচ করে তাই একটা ভালো অংশের মানুষ ভোট দিতে আসেন নি। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বা গণযোগাযোগের যানবাহনের সংকট ভোট কম হবার একটি অন্যতম কারণ বলে অনেকে উল্লেখ করেছেন।
স্কুল কলেজে পর পর ৩ দিনের ছুটি থাকার কারণে অনেকে ঢাকার বাইরে গেছেন, তাই তারা ভোট দিতে আসতে পারেন নি, বা আসতে চান নি। তাঁদের কাছে ভোটের চেয়ে পরিবার নিয়ে বাইরে বা গ্রামের বাড়িতে যাওয়া বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
শীতে অনেকে দেরিতে ঘুম থেকে উঠছেন। আগের দিন বড় দুই দলের কেন্দ্র দখলে রাখার শব্দ বোমা মারার আস্ফালন আর পরে টিভিতে ছোটখাটো গোলযোগের ওজুহাতে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত থেকেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় জামায়াত বিএনপি ও বামপন্থীরা যত সক্রিয় সেই তুলনায় আওয়ামী লীগ বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিরা ততটা সক্রিয় না। বিদেশ থেকে পরিচালিত বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, ইউটিউব খুব নোংরা ভাবে আর বাংলাদেশের কিছু জনপ্রিয় মিডিয়ায় স্লো পয়জনিংয়ের মত নির্বাচন আর সরকার বিরোধী মতবাদ প্রচারের ফলে বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় সন্দেহ বা অবিশ্বাসের জন্ম নিয়েছে যার প্রভাব পড়েছে সদ্য সমাপ্ত সিটি নির্বাচনে।
বিএনপি’র কর্মীরা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের বন্ধুদের সাথে থেকে অনেকটা আওয়ামী লীগ সেজে চুটিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তারা চক্ষু লজ্জায় ধানের শীষের ব্যাজ না লাগিয়ে নৌকার ব্যাজ লাগাতে চায় না। আবার মুখে প্রচার করে যে, ‘আরে কিছু লাগবে না এমনিতেই আওয়ামী লীগ জিতে যাবে’। এই ধরণের প্রচারকের কথার পক্ষে যুক্তি হল ২০১৪, ২০১৮ সালের নির্বাচন। এতেও বহু মানুষ ডি-মোটিভেটেড হয়েছে ভোট কেন্দ্রে যাবার ব্যাপারে।
তৃণমূলে আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মী সমর্থকরা চরম অবহেলিত। পুরাতনদের মাঝে যারা একটু বেশি কম্প্রোমাইজিং মেন্টালিটির, তারা ছাড়া কেউ ভোটারের বাড়ি বাড়ি তেমন করে যান নি। আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মীদের অধিকাংশই এক ধরণের হতাশায় ভুগছেন, কিন্তু তাঁদের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু তাই তারা শত অবহেলাতেও দলের সাথে আছেন, থাকবেন। এদেরকে বাদ দিয়ে এবার অধিকাংশ মহল্লায় হাইব্রিড আওয়ামী লীগারদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মহল্লার ত্যাগী কর্মীদের রাখা হয়েছে নামকাওয়াস্তে গণ-উপদেষ্টা পরিষদে, যাদের কোন দায়িত্ব নেই বাস্তবে। যারা ঐ মহল্লায় ১০ বছর আগেও ধানের শীষ নিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে, তাণ্ডব ছড়িয়েছে। তাঁদের ক্ষমতা নেই কোন অন্তপ্রাণ আওয়ামী লীগারকে নির্বাচনী ক্যাম্পে আনা বা ভোট দিতে জোর করা। এতে বয়স্ক বিপুল আওয়ামী লীগ সমর্থক অসহায় হয়ে নির্লিপ্ত হয়ে গেছেন। তারা প্রতিবাদ করতে পারেন নি কারণ সেই পরিবেশ নেই, বরং পরবর্তীতে বিপদের সম্ভাবনা আছে। এই নির্লিপ্ততা অনেকেই ভোট কেন্দ্রে যান নি। এছাড়া দলীয় এমপি বা নেতাদের মধ্যে গ্রুপিং তাঁদের ভোটে দলীয় প্রার্থীর পক্ষ নিতে নিরাপত্তাহীন ও মানসিকভাবে নিরুৎসাহিত করেছে।
আরেকটি বিরাট বিষয়ে বয়স্ক ও সৎ আওয়ামী লীগ কর্মীরা হতাশ হয়েছেন। তা হল, কাসিনো কেলেঙ্কারির পরে যেসব বড় নেতা, এমপি, বা এলাকার পাতি নেতাদের নাম দুর্নীতিবাজ হিসেবে বিভিন্ন মিডিয়ায় এসেছিল তাঁদের অনেকেই নির্বাচনের আগে আবার সেই আগের রূপে এলাকায় এসেছে। তাদের অনেকে নমিনেশন না পেলেও তাদের অপকর্মের সঙ্গীরা মনোনয়ন পেয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষ খুব শঙ্কিত আর পুরাতন আওয়ামী লীগাররা আশাহত হয়েছেন। তাই তাঁদের কাছে ভোট দেওয়া না দেওয়া অর্থহীন হয়ে পড়েছে। কিছু আশাবাদী মানুষ বলেছেন, আওয়ামী লীগের কাউন্সিল আর সিটি নির্বাচন পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে গোয়েন্দা হিসেবে ঢুকে পড়া প্রায় ৫৫ হাজার অনুপ্রবেশকারী আর দলের উচ্চ পর্যায়ের কিছু দুর্নীতিবাজ নেতার মুখে লাগাম টেনে ধরা হবে, মানে ‘সাংগঠনিক অপারেশন’ চালান হবে। সবার প্রত্যাশা ছিল আওয়ামী লীগে এবার হাইব্রিডের আর অসৎদের দাপট কমবে। সেই প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি। তা না হলে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর থেকে দেখা আওয়ামী লীগের যে দলীয় ভোট তার সাথে বিএনপি’র ১০ /১২ ভাগ ভোট যোগ হলেও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে ভোট পড়ার হার ৫০ ভাগ ছাড়িয়ে যেতো।
এমতাবস্থায়, আওয়ামী লীগ কর্মী ও ভোটারগণ আওয়ামী লীগের হাই কম্যান্ডের দিকে তাকিয়ে আছেন। জননেত্রি শেখ হাসিনাই পারেন দলকে পরগাছা মুক্ত করে আগের মত চাঙ্গা করে, ভোটারদের নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রমুখি করতে।
সায়েদুল আরেফিন
কলামিস্ট, উন্নয়নকর্মী
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।
দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি যে নতুন সরকার গঠন করেন আজ তার ১০০ তম দিন। এক কঠিনতম সময়ে তিনি এই সরকার গঠন করেছেন। কিছু বুদ্ধিজীবী নির্বাচনের আগে আগে নানান রকম কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ ঠিকই জানত যে, শেখ হাসিনাই আবার সরকার গঠন করবেন। কারণ তারা জানেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। সরকার গঠনের পরও কিন্তু তাকে কঠিনতম সময় পার করতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সফলতা পাচ্ছেন। এজন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও মনে করি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই।