নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৬ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
জঙ্গিদের উগ্রপন্থার পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জানুয়ারি(২০২১) র্যাব সদর দপ্তরে ৯ জঙ্গি আত্মসমর্পণ করে। এ উপলক্ষে সেখানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে না পারলেও অনেক এগিয়েছি। আবার আত্মসমর্পণের সুযোগ দিয়েও তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনছি।’বিনয়ের সঙ্গে একথা বলে নিজের সাফল্য গোপন করেছেন তিনি।কারণ চলতি মাসে ঢাকাস্থ সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দু’টি গুরুত্ব পূর্ণ মামলার রায় ঘোষিত হওয়ায় জঙ্গিবাদের মূল-উৎপাটনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামালের আন্তরিকতার প্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
১০ ফেব্রুয়ারি(২০২১) জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যায় সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আট জঙ্গি সদস্যের ফাঁসির রায় হয়েছে।২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর অর্থাৎ প্রায় ছয় বছর আগে কুপিয়ে হত্যার মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হয়।দণ্ডিতদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক। বাকিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। তারা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য বলে পুলিশের ভাষ্য। অন্যদিকে ১৬ ফেব্রুয়ারি (২০২১) বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যার মামলায় সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়াসহ পাঁচ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড এবং উগ্রপন্থি ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বইমেলা থেকে ফেরার পথে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন অভিজিৎ।এ ঘটনায় দণ্ডিত সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হত্যাকারী জঙ্গি সদস্যরা সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু। এজন্য জঙ্গিবাদ দমনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাঁধে চাপটা বেশি।উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, সেনাবাহিনীতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানচেষ্টার পর পালিয়ে জঙ্গিনেতার খাতায় নাম লেখানো সৈয়দ জিয়াউল হকের গতিবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে। ‘মাস্টারমাইন্ড’ জিয়ার অনুসারীদের প্রায় সকলকে ধরা হয়েছে। জিয়াও ধরা পড়বে বলে তিনি মনে করেন।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে তিন বছর অতিবাহিত হওয়ায় সেসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান,‘চ্যালেঞ্জ অনেক। হঠাৎ হঠাৎ নানান ধরনের ষড়যন্ত্র হয়। কারণ বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রের অভাব নেই। আমাদের সেই ষড়যন্ত্র আজকে নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে গেছেন। তাতে ষড়যন্ত্র করবে না, এমন চিন্তাই আমরা করি না। ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেই দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জ অনেক।’ এর মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদ মোকাবেলা অন্যতম চ্যালেঞ্জ।এজন্য তাঁর নির্দেশ মেনে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তৎপর রয়েছেন জঙ্গিবাদ নির্মূলে।
১৯/২/২০২১ তারিখে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত তথ্য মতে, কয়েক মাসে পুরনো জেএমবি (জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ), নব্য জেএমবি, আনসার আল ইসলামসহ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য ধরা পড়েছে। পুরনো জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজিবি) অনেক সদস্য এখনো মাঠে সক্রিয়। নব্য জেএমবি, আনসার আল ইসলামের সদস্যরাও বসে নেই-তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তৎপর।
গত কয়েক মাসে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে নব্য জেএমবির মিনহাজ হোসেন ও পুরান জেএমবির ‘ডাকাত দলের’ সদস্য মোজাফফর আলী ওরফে শাহীনসহ সারা দেশে অন্তত ৩৫ জন জঙ্গি ধরা পড়েছে।২০২০ সালের ডিসেম্বরে পুরনো জেএমবির ‘ডাকাত দলের’ সদস্য মোজাফফর আলী ওরফে শাহীনকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা সম্পর্কে জানা যায়।২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিনহাজ হোসেনকে। তিনি পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়েছিলেন। দেশে ফিরে আসার পর আবার জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। গ্রেপ্তারের পর মিনহাজ সিটিটিসি ইউনিটকে জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার তাঁরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতার চেষ্টা চালিয়েছেন। সর্বশেষ তাঁরা মিরপুর এলাকায় সংগঠিত হয়েছিলেন। তাঁরা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করে সংগঠিত হচ্ছিল।মিনহাজ সিরিয়াভিত্তিকে আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী সংগঠন হায়াত তাহরির আল শামেরও (এইচটিএস) সদস্য।মিনহাজকে গ্রেপ্তারের দিনই মিরপুরের রূপনগর এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য হাসিবুর রহমান ওরফে সোহেল, মো. মোশারফ হোসেন ওরফে আতিক, রামিম হোসেন ওরফে পনির হোসেন ওরফে নাহিদুর রহমান, মো. সজিব মিয়া ওরফে খিজির, চঞ্চল হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।র্যাবের ধারণা, একই দিন একই এলাকায় জেএমবি ও আনসার আল ইসলামের গোপন বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল নাশকতার পরিকল্পনা করা। দুটি বৈঠকে অন্তত ২০ জন জঙ্গি সদস্য উপস্থিত ছিল। তাঁদের মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা পালিয়ে যায়।এর আগে গত ১ জানুয়ারি ঢাকাসহ দেশের পাঁচটি স্থানে অভিযান চালিয়ে আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার দুজনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।চলতি মাসের (ফেব্রুয়ারি) ২ তারিখে রাজধানীর পল্টন, ভাটারা ও ঢাকার বাইরে শেরপুর জেলা থেকে আনসার আল ইসলামের এক নারী সদস্যসহ আরো চার জঙ্গিকে গ্রেপ্তার র্যাব। তাঁরা শেরপুরে নাশকতার পরিকল্পনা করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াচ্ছিল বলে র্যাব জানতে পেরেছে।১০ ফেব্রুয়ারি নরসিংদীর রায়পুরা ও নারায়ণগঞ্জের মদনপুর এলাকা থেকে নাশকতার পরিকল্পনাকারী আনসার আল ইসলামের আরো দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে এটিইউ। তারা দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের সদস্য বাড়াতে দাওয়াতি কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নিষিদ্ধ ঘোষিত আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড শেখ কামাল হোসেনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে এটিইউ। জঙ্গিবাদ দমনে এভাবেই প্রাথমিক কাজ করে যাচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী।
২. আমরা জানি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং দক্ষ পরিচালনার পুরস্কার হিসেবেই ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই আসাদুজ্জামান খানকে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যোগ্যতা, দূরদর্শিতা আর সঠিক নেতৃত্বগুণের জন্য আজ তিনি সফল মন্ত্রীদের একজন। দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনাকে যারা সর্বাঙ্গীনভাবে যোগ্যতার সঙ্গে সহায়তা করে আসছেন তাদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যতম। দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের মাধ্যমে তিনি বর্তমানে বৈশ্বিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম এবং গুরুতত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয় হল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়টিকে সফলতার সঙ্গে পরিচালনায় অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন মাননীয় মন্ত্রী জননেতা আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করা মান্যবর মন্ত্রী বর্তমানে ঢাকা মহানগর (উত্তর) আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদে একজন সাংসদ নির্বাচিত হন এবং ১২ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনেও তিনি বিপুল ভোটে জয়ী মন্ত্রীত্ব বজায় রাখেন।তাঁর দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং দক্ষতা ও যোগ্যতার তুলনা নেই। তাঁর নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত সুনামের সঙ্গে দেশ পরিচালনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে (২০০৯-২০১৩) জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁরই গৃহীত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ জঙ্গিমুক্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনার দেখানো পথ এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মত জঙ্গিবাদের রসাতলে পতিত না হয় যেন, সেই প্রত্যয় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর এর পরিচালনায় যে মানুষটির অসামান্য অবদান তিনি হলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। মন্ত্রী মহোদয় আসাদুজ্জামান খান কামালের লক্ষ ও উদ্দেশ্য স্পষ্ট। কারণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানবসম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা প্রদান, উদ্ধার অভিযান বা তৎপরতা, অপরাধদমন, অপরাধী শনাক্তকরণ, জল ও স্থল সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান রোধ, প্রবাস ও অভিবাসন সম্পর্কিত নীতিমালা বা চুক্তি প্রণয়ন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধ, মাদকদ্রব্য চোরাচালান রোধ, মানবপাচার রোধ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম বৃহৎ মন্ত্রণালয় হিসেবে মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। নাগরিকের জন্য একটি নিরাপদ, সুন্দর, সুখী ও শান্তিপূর্ণ আবাসভূমি নির্মাণের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিরলস ও বদ্ধপরিকর।
৩. লেখাবাহুল্য যে, শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের শক্তিশালী মন্ত্রণালয়ের একজন যোগ্য কর্ণধার হিসেবে আইন-শৃঙ্খলা উন্নয়নের মাধ্যমে বিগত সময়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেছেন আসাদুজ্জামান খান। দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা উন্নয়নের প্রধান কারণ, ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক শিল্পমন্ত্রীকে আহবায়ক করে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির সভা প্রতি ২ মাস অন্তর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৩ জন মন্ত্রী/ প্রতিমন্ত্রীসহ সারাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে এ কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে (২০০৯-২০১৩) জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিসহ উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম গ্রহণ ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে সভাপতি করে ১৭ (সতের) সদস্যের জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং প্রতিকার কমিটি গঠন করা হয়। তাঁর নেতৃত্বেই আইন-শৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন ২০১৪ (আইনটির মেয়াদ ৫ বছর বৃদ্ধি) করা হয়। মোবাইল কোর্ট (সংশোধন) আইন ও বিধিমালা প্রক্রিয়াধীন আছে। সন্ত্রাস বিরোধী আইন-এর বিধিমালা ২০১৪ প্রণীত হয়েছে।
বর্তমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর আমলেই ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ‘জননিরাপত্তা’ ও ‘সুরক্ষা সেবা বিভাগ’- এই দুই নামে ভাগ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। ‘জননিরাপত্তা’ বিভাগের অধীনে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, তদন্ত সংস্থা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিআরসি)। ‘সুরক্ষা সেবা’ বিভাগের অধীনে আছে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, কারা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩শ ৩ জন জনবল ছিল। বর্তমানে তা ২ লাখ ৫ হাজারে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮ সালে নারী পুলিশ সদস্য ছিল মাত্র ২৫২০ জন। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৭৬৭ জন। পুলিশবাহিনীতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৫০ হাজার পদ সৃজনের নীতিগত সিদ্ধান্তের পর পর্যায়ক্রমে ৫০ হাজার পদ সৃষ্টির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও পুলিশ পরিদর্শক পদকে ২য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণিতে এবং উপ-পুলিশ পরিদর্শককে ৩য় থেকে ২য় শ্রেণিতে উন্নীতকরণ করা হয়েছে, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবদান। পুলিশের নতুন নতুন উইং সৃষ্টি হয়েছে। যেমন, এ বাহিনীতে শিল্পাঞ্চল পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ, পিবিআই, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ, ৩০টি ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার এসপিবিএনসহ মোট ১০টি নতুন ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ পুলিশের কর্মরত থাকার ব্যাপারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন মন্ত্রী মহোদয়। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ৭টি ফর্মড পুলিশ ইউনিটে ১২১১ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন। এরমধ্যে ১৬০ জন নারী সদস্য। নতুন ২টি র্যাব ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছে। র্যাবের জন্য একাধিক হেলিকপ্টার ক্রয় করা হয়েছে। পুলিশের জন্যও ২টি হেলিকপ্টার টিওএন্ডইতে অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্রয় সম্পন্ন হয়েছে।
বর্তমান মন্ত্রীর আমলেই পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে(সিআইডি) এলআইসি শাখা গঠন করা হয়। বিশেষ অপরাধ তদন্তের জন্য গঠন করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)। ডিএমপি-এর কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম(সিটিটিসি) ইউনিটের অভিযানে আসে একের পর এক সাফল্য। নব্য জেএমবি’র শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার কিংবা নিহত হয়। আলোচিত মামলাগুলোর তদন্তও সফলভাবে শেষ করেছে পুলিশ। এতে কমেছে জঙ্গি তৎপরতা। একইসঙ্গে সংঘবদ্ধ অপরাধ, হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাই ও দস্যুতার হারও কমেছে অনেকখানি। বিশেষত বন ও জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অন্যতম অবদান যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। অন্যদিকে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাজকে গতিশীল করতে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। বর্তমান সরকারের এক সংসদ অধিবেশনে ৫ গ্রামের বেশি ইয়াবা পাওয়া গেলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮’ পাস করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য শনাক্তকরণ এবং অধিদপ্তরকে ৩টি পিকআপ, দুটি মাইক্রোবাস, ২৯ ধরনের যন্ত্রপাতি ও ১৫০টি কম্পিউটার সরবরাহ করা হয়েছে। প্রায় ৪ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হয়েছে।দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা ‘কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি(কৈকা) ও বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
৪. ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গি দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কার্যকর পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করায় জঙ্গি দমনে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ইতিবাচক ভূমিকা ও অবদান গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে। কারণ বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সবসময়ই তৎপর রেখেছেন তিনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হওয়ার পর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দৃষ্টান্ত রয়েছে জঙ্গিসদস্যকে গ্রেপ্তারের। ধরার পর বিচারে ফাঁসি হয়েছে কয়েকজন দুর্ধর্ষ জঙ্গি সদস্যদের। জঙ্গিদের অনলাইন তৎপরতা রোধে এখন প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে নিশ্চিন্তে কাজ করাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি ফেসবুক, গুগলসহ বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম এবং স্মার্টফোন অ্যাপ নির্মাতাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সখ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যাতে প্রয়োজন হলে দ্রুত সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া যায়। আসলে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে এলিট ফোর্স র্যাব, বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটসহ পুলিশের সকল ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থাকে জঙ্গিবিরোধী অভিযান ও কার্যক্রম জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।’ এদেশের মানুষ ধর্মীয় উগ্রবাদিতা ও তাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করে। দেশের অগ্রগতি ও নিরাপত্তার জন্য সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বড় ধরনের অন্তরায়। এই অন্তরায় দূর করার জন্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ‘পুলিশ’ ও ‘র্যাব’ বাহিনীর সফল অভিযানে শীর্ষ স্থানীয় জঙ্গি নেতাসহ গুরুত্বপূর্ণ সদস্য গ্রেপ্তার ও নিহত হয় এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলা-বারুদ উদ্ধার করা হয়। ২০১৬ সালের হোলি আর্টিজান হামলার পর এ পর্যন্ত যতগুলো অপারেশন পরিচালিত হয়েছে তার সবগুলো থেকেই জঙ্গিগোষ্ঠী আঘাত হানার পূর্বে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে জঙ্গি আস্তানাসমূহ গুড়িয়ে দিয়েছে। জঙ্গি দমনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফলে বর্তমানে জঙ্গি তৎপরতা বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে এবং জঙ্গি দমনে এ সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। উপরন্তু জনগণের নিরাপত্তা এবং দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর উদ্যোগে ‘কতিপয় বিষয়ে জঙ্গিবাদীদের অপব্যাখ্যা এবং পবিত্র কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াত ও হাদীসের সঠিক ব্যাখ্যা’ শীর্ষক প্রকাশিত পুস্তিকা এখন সকলের হাতে। অন্যদিকে জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ২০২০ সাল পর্যন্ত ৭টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গিবাদের অর্থায়নে জড়িতদের কার্যকরভাবে দমনের লক্ষ্যে সরকার সন্ত্রাস বিরোধী আইন-২০০৯ (সংশোধনী-২০১৩) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ প্রণয়ন করেছে। সরকারের আন্তরিকতা এবং গৃহীত নানা পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। জনগণের প্রত্যাশা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দমনে মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, জঙ্গি হিসেবে এযাবৎ যতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই ৪টি সংগঠনের। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনগুলো হচ্ছে: জেএমবি, নব্য জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ওরফে আনসার আল ইসলাম ও হিযবুত তাহরির। জেএমবি গঠিত হয়েছে জামায়াতের প্রাক্তন সদস্যদের নিয়ে। আল-কায়েদার অনুসারী আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে শিবিরের মানুষ। হিযবুত তাহরিরের সঙ্গে সরাসরি জামায়াতের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া না গেলেও দল দুটির মধ্যে মতাদর্শগত মিল রয়েছে; এরা ওয়াহাবী ধারার জিহাদি। গবেষকরা জানিয়েছেন, বিদেশি অর্থ ছাড়াও জামায়াতী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মুনাফার ৪০ হাজার কোটি টাকা প্রতি বছর বিনিয়োগ হচ্ছে জঙ্গি চাষাবাদে। এদের নিষিদ্ধ করে নির্মূল করা হলে বন্ধ হবে জঙ্গিবাদ। আর জঙ্গিবাদের বিলোপের মাধ্যমে নিশ্চিত হবেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বিজয়।
দেশব্যাপী ২০২০ সালের মধ্যে পরিচালিত অনেকগুলো অভিযানের মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদ দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাফল্য দেখিয়েছেন যা পূর্ববর্তী বছরের মতো সরকার ও জনগণের কাছে সুনাম অর্জন করেছে। এসময় তারা চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনেছেন। তবে ২০১৬ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৬টির বেশি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়। এতে ৪৬ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। তাদের ৩৫ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী জঙ্গি। এছাড়া বাকি ৫ জন শিশু। ২০১৬ সালের ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’, ‘অপারেশন স্টোর্ম-২৬’, ‘অপারেশন হিট স্ট্রং ২৭’, ‘অপারেশন রূপনগর’, ‘অপারেশন আজিমপুর’, ‘স্পেইট-এইট’, ‘অপারেশন শরতের তুফান’, ‘অপারেশন হারিনাল’, ‘অপারেশন গাজীরাস্ট’, ‘অপারেশন কাপমারা’, ‘অপারেশন রিপল ২৪’ প্রভৃতি জঙ্গিবাদ বিরোধী অপারেশনে মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা ছিল। ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ছিল নব্য জেএমবির। র্যাবসহ পুলিশের যৌথ টিমের অভিযানে (আগস্ট বাইট) সেই পরিকল্পনা নসাৎ করে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অদূরে পশ্চিম নাখালপাড়া এলাকায় জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় র্যাব। সেখানে অভিযানে তিন জেএমবি সদস্য নিহত হয়। উদ্ধার করা হয় গ্রেনেড, বিস্ফোরক ও অস্ত্র। এর পরও ২০১৮ থেকে ২০২০ এর মধ্যে দেশের ভেতর জঙ্গি তৎপরতা ও তার বিরুদ্ধে অভিযানের আরো তথ্য রয়েছে।
অর্থাৎ জঙ্গি সদস্যরা এখনও নানা কৌশলে সক্রিয়। এমন বাস্তবতায় জঙ্গিরা আইনের আশ্রয় নিয়ে জামিনে মুক্ত হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। একথা সত্য দীর্ঘ নজরদারি, গোয়েন্দা তথ্য বিশ্নেষণ, প্রযুক্তিগত ও স্থানীয় তদন্তের পর জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়। বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারকৃত জঙ্গি সদস্যদের তথ্যের ভিত্তিতেও গ্রেফতার হয় অনেক জঙ্গি। এরপরও তাদের অনেকে জামিনে বের হয়ে আবারও একই কাজে যুক্ত হচ্ছে। এতে জঙ্গি কার্যক্রম পুরোপুরি নির্মূল করা যাচ্ছে না। জামিন পাওয়া সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। আর এসব জঙ্গির জামিনে উদ্বিগ্ন আমরা সাধারণ জনগণ।
৫. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রথম থেকেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আপোসহীন অবস্থানে রয়েছেন এবং নিরলসভাবে কাজ করছেন। তাঁর নির্দেশনা ও কর্ম তৎপরতার কারণেই সারাদেশে একযোগে বোমা বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন সময়ে নাশকতা সৃষ্টিকারী জঙ্গি সংগঠনসমূহের শীর্ষ সারির নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্নস্তরের নেতা কর্মীদেরকেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা সম্ভবপর হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে, কেউ কেউ বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে এবং বেশকিছু মামলা এখনো বিচারাধীন। তবে, যে সকল জঙ্গি এখনো আত্মগোপন করে আছে তাদের তৎপরতা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। পুলিশ ও র্যাবের কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযানের ফলে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেতা কর্মীরা পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে বার বার ব্যর্থ হয়েছে এবং বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে আটক হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ‘আর অ্যান্ড ডি সেল’একটি গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান। এটি র্যাব কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন অপারেশন, অপরাধ ও অপরাধী চক্র, ধর্মীয় জঙ্গিবাদ, চরমপন্থী জঙ্গিবাদ, ইভটিজিং, এসিড-সন্ত্রাসসহ সমসাময়িক ও জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণাকার্য পরিচালনা ও গবেষণাপত্র তৈরির কাজ করে আসছে। র্যাব সদর দপ্তরে অবস্থিত এ সেলটি মহাপরিচালকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন এবং চরমপন্থী দলের উত্থান, সাংগঠনিক কার্যক্রম, গতিপ্রকৃতি ও বিস্তার ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এ সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে চরমপন্থী ও জঙ্গি দমনে র্যাবের করণীয় দিকগুলো এ সেলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। (সূত্র : ওয়েবসাইট) অর্থাৎ র্যাবের আছে জঙ্গিবিরোধী আলাদা ইউনিট। আর সেখানে জঙ্গিদের তথ্য সংগ্রহ, জঙ্গিবিরোধী অভিযান এবং তদন্ত চলে। তারা যৌথ অভিযানেও অংশ নেন। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির হামলার পর গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সহায়তায় একের পর এক জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গিসদস্যদের নির্মূল করা হচ্ছে। এসব অভিযানের কারণে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে জনজীবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ফিরে এসেছে।
তবে জঙ্গিবাদ উত্থানের কিছু কারণ রয়েছে সেগুলো বন্ধ না হলে জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল হবে না। অন্যদিকে মনে রাখা দরকার জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর যে সাফল্য, যে অর্জন, সেটা অকল্পনীয়। বিশ্বের বহু দেশ এটা করতে পারেনি। ১৭ কোটি মানুষের দেশে জঙ্গিসদস্য এবং তাদের আস্তানা খুঁজে বের করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মেধাবী ও চৌকস অফিসাররা যে অপারেশনগুলো করছেন, তা বিরল ঘটনা। তাদের কাজের প্রধান উৎসাহদাতা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। তাঁর সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হোক।
(লেখক : ড. মিল্টন বিশ্বাস, ইউজিসি পোস্ট ডক ফেলো এবং বিশিষ্ট লেখক, কবি, কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশ এবং অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, email-drmiltonbiswas1971@gmail.com)
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।