নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১৬ এএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
পয়লা ফাল্গুন, ভ্যালেন্টাইনস ডে। পরপর দুই দিন। বান্ধবীকে নিয়ে জম্পেশ সময় কাটানোর পরিকল্পনা ছিল তারেকের। বান্ধবীকে ফুল উপহার দেবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরোঘুরি করবে, সন্ধ্যায় ভালো কোনো রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া এই তাঁর পরিকল্পনা ছিল। কিছু টাকাও জমিয়েছিল এজন্য। কিন্তু পয়লা ফাল্গুনে ফুল কিনতে গিয়ে তাঁর আক্কেল গুরুম। অন্য সময়ে যে ফুলের দাম ১০ টা আজ তা ৫০ ছাড়িয়েছে। ফুল কিনতে গিয়ে ঘুরোঘুরি আর খাওয়ার বাজেটে টান পড়ে গেল। পরদিন ভালোবাসা দিবসেও ফুল কিনতে গিয়ে একই পরিস্থিতি। ফুলের বাজারে হঠাৎ করে দুদিনব্যাপী আগুন লেগেছে যেন।
বসন্তবরণ ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে রাজধানীতে জমজমাট ফুলের বাজার। কয়েক বছর ধরে ব্যবসায়ীরা ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ফুল বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় সুযোগ হিসেবে ধরে নিয়েছেন । পহেলা ফাল্গুনে মাথায় ফুলের মুকুট নেই এমন তরুণী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আবার ভালোবাসা দিবসও ফুল ছাড়া ভাবা যায় না। এই দু’দিনে ফুল বিক্রির হার বছরের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। দিবস পালনে ফুল হয়ে উঠেছে প্রধান আকর্ষণ। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরাও বিশাল প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। দু’দিনে কয়েক কোটি টাকার ফুল বাণিজ্য হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সারা দেশের খুচরা বিক্রেতারা রাজধানীর শাহবাগ ও আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ফুলের পাইকারি মার্কেট থেকে ফুল কিনে থাকেন। রাজধানীর এসব বাজারে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন শুধু রাজধানীর পাইকারি বাজারে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার ফুল কেনাবেচা হয়। আর বিশেষ বিশেষ দিবসে যেমন পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে তিন থেকে পাঁচ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়ে থাকে। শাহবাগের পাইকারি বাজারের ফুল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ব্যবসা করার পরিকল্পনা নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। শাহবাগে রাজধানীর সবচেয়ে বড় ফুলের বাজার। এখানে প্রায় একশটি ফুলের দোকান। জানা গেছে, এবারের ভালোবাসা দিবসে রাজধানী ঢাকায় যে কয়েক কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে, এর সিংহভাগই শাহবাগে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিন দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ফুল বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফুল বিক্রেতা সাগর জানান, শাহবাগে সারা বছরই ফুলের ব্যবসা থাকে। কারণ অনেকের কাছে ফুলের একমাত্র প্রাপ্তিস্থান হিসেবে শাহবাগই পরিচিত। তবে ফেব্রুয়ারিতে বিক্রি অন্য যে কোনো মাসের চেয়ে ভালো। দামও একটু বেশি থাকে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতিটি দেশি গোলাপ ১০ থেকে ১৫ টাকা,চায়না ও ভারতীয় গোলাপ ২০ থেকে ২৫, জারবেরা ১৫ থেকে ১৮ টাকা, গ্লাডিওলাস ১০ থেকে ১৫ টাকা ও রজনীগন্ধা ৬-৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে খুচরা বাজারে একই ফুল বিক্রি হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ দামে। শাহবাগে কয়েক জন ব্যবসায়ীদের কথা বলে জানা গিয়েছে ফাল্গুন ও ভালবাসা দিবসে অন্যান্য ফুলের চেয়ে গোলাপের চাহিদা বেশি। ব্যবসায়ী জামান জানান সোমবার রাতে পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ টাকার শুধু গোলাপ বিক্রি করেছেন।
মোহাম্মদপুর এলাকায় কয়েকজন যুবক ফুলের পসরা সাজিয়েছেন । তারা মূলত মৌসুমি ব্যবসায়ী। ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুল ব্যবসায় নেমেছেন তারা। এদের একজন সাজ্জাদ। তিনি জানান, ফুলের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এর মধ্যে গোলাপ অন্যতম। এজন্য দামও একটু চড়া। তিনি জানান, প্রতিটি গোলাপ ৫০ টাকা, জারবেরা ৩০ টাকা, গ্লাডিওলাস ৩০ টাকা ও রজনীগন্ধা প্রতি স্টিক ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে । ফুলের মুকুট বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে । গাঁদা ফুল মালা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। এছাড়া নানা ফুলে সাজানো তোড়া বিক্রি হচ্ছে তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকায়। অন্যান্য বছরের তুলনায় ফুল ভালো বিক্রি হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/এএফ/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। ১৫০টি উপজেলায় এখন জনগণ ভোটের অপেক্ষায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫৯টি উপজেলায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন গতকাল শেষ হয়েছে। সেখানেও এখন নির্বাচনী প্রচারণার ডামাডোল শুরু হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে কি না, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে কি না এবং উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে কি না তা নিয়ে একদিকে যেমন জনগণের সংকট রয়েছে তেমনই নির্বাচন কমিশনও এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।
লক্ষ্মীপুর সদরের তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই হামলার শিকার হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নেপথ্যে নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ। এঘটনায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী দুই প্রার্থীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৯১১ জনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলাও দায়ের করেন। ফলে নির্বাচনের পর আনন্দের বদলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ওই ইউনিয়নে।