নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫২ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
প্রতিটি শিশুরই রয়েছে মানবাধিকার। রয়েছে বাকি ১০টি শিশুর মত বেঁচে থাকার অধিকার। কিন্তু সবার ভাগ্যে কি আর তেমনটা জোটে? আজ বলবো ৭ বছরের শিশু জান্নাতুল ফেরদাউস মাওয়া‘র কথা। যার নামটি এতো সুন্দর হলেও হয়তো সুন্দর হবেনা তার ভবিষ্যত। কারণ তার দূরন্ত শৈশব যেন ইজিবাইকে লোহার খাঁচায় বন্দি।
সাধারণত এই বয়সে শিশুরা খেলাধুলা, পড়াশুনা আর দুষ্টুমিতেই মেতে থাকে। কিন্তু তার শৈশব আর দশটা শিশুর শৈশবের মতো নয়। জান্নাতুলের জীবনযাপন একেবারেই ভিন্ন। যখন আশপাশের শিশুরা খেলা করে, স্কুলে যায় তখন শিশু জান্নাতুলের দিন ও রাতের অধিকাংশ সময় পার হয় পিতার ইজিবাইকে বসে। পিতা ইজিবাইক চালান, আর শিশু জান্নাতুল তার ডান পাশেই বসে থাকে। তিনবেলা খাওয়াদাওয়া সেরে নিতে হয় হোটেলে। রাতে পিতার সঙ্গেই ঘুম ইজিবাইক চার্জ দেওয়া গোডাউনে।
তাকে দেখাশুনার জন্য পিতা ছাড়া আর কেউ নেই। ১ বছর আগে সংসার ছেড়ে মা চলে যাওয়ায় মায়ের আদর-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত। আর এভাবে রাস্তায় রাস্তায় শৈশব পার করে দেওয়া জান্নাতুল ফেরদাউস মাওয়ার। লেখাপড়ার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ থাকলেও সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জান্নাতুল জানায়, তার আম্মু চলে গেছে। এখন তাকে দেখার মতো কেউ নেই। আব্বু ইজিবাইক চালায়, আমি পাশে বসে থাকি। হোটেলে খাই, গোডাউনে ঘুমাই। কথা বলতে বলতেই তার হাসি মুখটা একেবারে অন্ধকারে ঢেকে যায়।
জান্নাতুলের পিতা ইজিবাইক চালক মুন্না মিয়া জানান, তার বাড়ি যশোর শহরের বেজপাড়া তালতলা এলাকায়। চাচাতো ভাইয়েরা মিলে পৈত্রিক সম্পত্তি কৌশলে দখল করে নিয়েছে। এই ঘটনার পর তার স্ত্রীও সংসার ছেড়ে চলে গেছে। বর্তমানে তার বসতবাড়ি নেই। শহরে ঘর ভাড়া করে থাকার মতো সামর্থ্য নেই তার। কেননা সারাদিন ইজিবাইক চালিয়ে যে অর্থ রোজগার হয় তা দিয়ে কোনোরকম খাওয়া দাওয়া চলে। তাই একমাত্র মেয়ে জান্নাতুলকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় দিন রাতের অধিকাংশ সময় পার হয় তার। ভোর থেকে গভীররাত পর্যন্ত ইজিবাইকে জান্নাতুল পাশে বসে থাকে। গভীররাতে ফিরে ইজিবাইক চার্জ দেওয়া গোডাউনে তাদের রাত কাটে।
তিনি আরও জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে তারও স্বপ্ন আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু অর্থের কারণে তা হয়ে উঠছেনা। অর্থ সংকটের কারণে মেয়েকে স্কুলেও ভর্তি করাতে পারছেন না। কোনো সুহৃদ ব্যক্তি যদি দৃষ্টি দেন তাহলে শিশু জান্নাতুল ফেরদাউস মাওয়া লেখাপড়া করতে পারবে অবশ্যই। পথে পথে তার রাত দিন আর পার হবেনা তখন।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
মন্তব্য করুন
সাজাপ্রাপ্ত মামলার আসামি চাঁদপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট
মাসুদুল ইসলামকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাসুদুল ইসলাম কচুয়া উপজেলার বিতারা গ্রামের
মৃত সরাফত আলীর ছেলে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে চাঁদপুর জেলা পুলিশের মিডিয়া
সেল থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কচুয়া থানা পুলিশ
বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
কচুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানার জিআর মামলায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরা-ক্লাওচা-উয়ুয়া
এবং রানি সুথিদা বজ্রসুধা-বিমলা-লক্ষণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে দুসিত প্রাসাদের অ্যামফোর্ন
সাথার্ন থ্রোন হলে রাজা ও রানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং
জানায়, সাক্ষাৎকালে তারা কুশল বিনিময় করেন এবং দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা
করেন।
এর আগে, এদিন সকালে জাতিসংঘের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের
অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয়দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে যান। ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল
সফরকালে বাংলাদেশের
প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য
আলোচনার আগ্রহপত্রসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করবে।
বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ড সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত
একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারে। শক্তি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)
এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক
সহযোগিতার বিষয়ে আরও দুইটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষর করতে পারে দুই দেশ।
থাইল্যান্ড প্রধানমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাৎ
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রীর দশটি অসাধারণ উদ্যোগের অন্যতম একটি কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। সমগ্র বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবার জন্য এটি যে একটি অনন্য সাধারণ মডেল ও উদ্যোগ তা জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামে জাতিসংঘে উত্থাপিত ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজ্যুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে। ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’কে আরও একবার সম্মানে ভূষিত করল যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়ারেন অ্যালপার্ট মেডিকেল স্কুল। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ওয়ারেন অ্যালপার্ট মেডিকেল স্কুল অব ব্রাউন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের ডিন মুকেশ কে জৈন দ্য লোটে এই উদ্যোগকে ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, এটি কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার একটি সফল মডেল। এটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন, কমিউনিটি সম্পৃক্ততা উন্নয়নের মাধ্যমে সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিধির জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি।
প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশজুড়ে স্থাপিত হয়েছে চৌদ্দ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক, যা গ্রামীণ সমাজের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এনেছে অভূতপূর্ব পরিবর্তন। বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বিপ্লব প্রচেষ্টায় অনুপ্রেরণা হিসেবে ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথ।
তবে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগ ম্লান হতে শুরু করে। স্বাস্থ্য খাতে দলীয় রাজনীতির উদাহরণ হয়ে আছে কমিউনিটি ক্লিনিক। জোট সরকারের শাসনামলে এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সেখানে তখন দিনে গবাদিপশু চরানো হতো আর রাতে বসত মদ আর জুয়ার আসর।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে আবারও রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পেলে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। একে একে চালু করা হয় বিএনপির সময় বন্ধ করে দেয়া ক্লিনিকগুলো আর পাশাপাশি স্থাপন করা হয় আরো নতুন নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক।
স্বাস্থ্যসেবা কমিউনিটি ক্লিনিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবা
মন্তব্য করুন
আজ ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তন করেন। সেই স্বপ্নে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তন করেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরেই দেশের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তৎকালীন মহকুমা ও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য অবকাঠামো গড়ে তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
সংশিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের অভিনব ধারণা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে । মৌলিক স্বাস্থ্য সেবার সুবিধাসমূহ আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমেই দেশের প্রান্তিক ও অন্যান্য তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে-যার ফলে সরাসরি উপকৃত হচ্ছে দেশের গ্রামাঞ্চলের জনগণের বিশাল একটি অংশ। কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীরা জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন, টিকা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং পরামর্শ পরিষেবা সহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের মধ্যে সফলভাবে কাজ করছে। দীর্ঘকাল ধরে চলমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেকটা শহরকেন্দ্রিক হওয়ায় অপেক্ষাকৃত সচ্ছল বা ধনী লোকদের মত প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের গরীব বা হতদরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চয়তা দিতে পারছিল না। তাই “সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা'র মত মানুষের জন্মগত মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্য অর্জন করা আমাদের জন্য সম্ভব ছিল না। এবং বৈপ্রবিক কোনো পদক্ষেপ ছাড়া একশ বছরেও এটা অর্জন করা কঠিন হত। তখন ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের দুস্থ জনগণের জন্য তার হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার এই কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পটি গ্রহন করেন এবং ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করার প্রকল্প গ্রহণ করেন- যার মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় আরাধ্য স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর সরকারী উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়।
গত বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজ্যুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামের ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজ্যুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়ে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই দেশব্যাপী প্রতি ৬ হাজার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে মোট ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২০০১ সালের মধ্যেই ১০ হাজার ৭ শত ২৩টি অবকাঠামো স্থাপনপূর্বক প্রায় ৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু করা হয়। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার আবার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের কাজ শুরু করে। বর্তমানে মোট ১৪ হাজার ১৫৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ১৪ হাজার ১০০ শত ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কোভিড ভ্যাকসিন প্রদানসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টিসেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো- এটি সরকার ও জনগণের সম্মিলিত অংশীদারিত্বের একটি সফল কার্যক্রম, যার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা এবং স্থায়িত্বের লক্ষ্যে সরকার ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন’ পাস করেছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সারাদেশের প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি সেবাসহ বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ঔষধ ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমান অর্থবছরে ঔষধ ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী বাবদ বাৎসরিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ২৪১ কোটি থেকে ২৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সেবার পরিধি সম্প্রসারিত হওয়ার কারণে ৫ শতাংশের পরিবর্তে বর্তমানে ৮ শতাংশ জমিতে চার কক্ষ বিশিষ্ট নতুন নকশায় কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৭ থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৮৭টি নতুন নকশার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রীর দশটি অসাধারণ উদ্যোগের অন্যতম একটি কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। সমগ্র বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবার জন্য এটি যে একটি অনন্য সাধারণ মডেল ও উদ্যোগ তা জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামে জাতিসংঘে উত্থাপিত ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।
আজ ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তন করেন। সেই স্বপ্নে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হয়।