নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০৮ পিএম, ১৯ জুন, ২০১৭
কয়েক মন্ত্রীর কার্যক্রমে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্ধ। এঁদের ওপর নির্ভর না করে প্রধানমন্ত্রী নিজেই সংকট সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। পাঁচটি সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে সমন্বয় সেল গঠন করা হয়েছে। আর পরিস্থিতি উন্নতির জন্য সরাসরি তদারকি করছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে এখবর জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জনঅস্বস্তির ৫টি কারণ চিহ্নিত করেছে, এগুলো হলো- ১. চাল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, ২. এক লাখ টাকার বেশী ব্যাংক আমানতের উপর আবগারী শুল্ক ৩. সঞ্চয়পত্রের উপর সূদের হার কমানো ৪. ঢালাও ভ্যাট ৫. রাঙামাটি পরিস্থিতি।
প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে প্রতিবেদন এসেছে, এই পাঁচ কারণে সরকারের জনপ্রিয়তা দ্রুত কমছে। বিরোধিদল সুযোগ পাচ্ছে। অবিলম্বে এসব মোকাবেলায় তাগিদ দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী তার সংসদ ভবনের কার্যালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে কথা বলেন। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীর একগুয়েমীতে উস্মা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন ‘আপনি তো আমাদের সব সাফল্য মাটি করে দিলেন।’ প্রধানমন্ত্রী ধাপে ধাপে অনলাইন ভ্যাট চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আমানতের ওপর আবগারী শুল্ক হ্রাস করার জন্যও বলেছেন। সঞ্চয়পত্র সুদের হার না কমানোর কথাও বলেছেন।
এদিকে বাজার অস্থিরতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। খাদ্যমন্ত্রী সাক্ষাৎ চাইলেও প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ দেননি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর মুখ্য সমন্বয়কারীকে অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী তার মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ, খাদ্য সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে অবিলম্বে চাল আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ বাংলা ইনসাইডারকে জানান ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার চাল আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শুল্ক হার প্রত্যাহার করবে।’ তিনি জানান, আজকালের মধ্যেই এব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। মুখ্য সমন্বয়কারী বলেন আমদানি করা চাল এলে বাজার স্থিতিশীল হবে।
চাল আমদানির পাশাপাশি বাজার মনিটরিং বাড়ানোর ওপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। আজ থেকেই বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিদিন চাল পরিস্থিতির ওপর রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে।
রাঙামাটির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী গতকাল এবং আজ দুদফায় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের উর্ধ্বতন অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায় পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রী কিছু প্রশাসনিক রদবদল করতে পারেন। এমনকি মন্ত্রিপরিষদ রদবদলও অসম্ভব নয়।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।