নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ১৫ অগাস্ট, ২০২০
সারাবিশ্বে এখন ভ্যাকসিন নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। সবার আগে ভ্যাকসিন নাকি নিরাপদ ভ্যাকসিন এই নিয়েও চলছে বিতর্ক। ইতিমধ্যে রাশিয়া কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে বলে দাবি করছে এবং এই ভ্যাকসিন তাঁদের দেশের নাগরিকদের মধ্যে দেওয়ার কার্যক্রমও তারা শুরু করেছে। যদিও কোন কোন বিশেষজ্ঞ বলছে যে, শুধুমাত্র বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার কারণে তাড়াহুড়ো করে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এই ভ্যাকসিনের যে তৃতীয় ট্রায়াল, সেই তৃতীয় ট্রায়াল এখনো সম্পন্ন হয়নি। আবার কোন কোন দেশ রাশিয়ার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি সমৃদ্ধ অতীতের কথা স্মরণ করে বলছেন যে, তাঁদের পক্ষে এরকম ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা সম্ভব। এই ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর হবে বা কতটুকু করোনা প্রতিরোধ করতে পারবে তা দেখার অপেক্ষায় আছে। কোন কোন দেশ অবশ্য এই অপেক্ষা না করেই রাশিয়ার ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে এবং যোগাযোগও করেছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, অন্তত ২০ টি দেশ রাশিয়ার ভ্যাকসিনের জন্য আবেদন করেছে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ভ্যাকসিনের জন্যে আবেদন করেনি।
অন্যদিকে চীন বলছে যে তাঁরা খুব শীঘ্রই ভ্যাকসিন বাজারে নিয়ে আসছে এবং চীনের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শেষ ধাপে রয়েছে বলে তাঁরা দাবি করছে। চীনের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং মান নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছে। কিন্তু কেউ কেউ আবার মনে করছে যে, এখন চীনকে উপেক্ষা করা ঠিক হবেনা, কারণ চীন বিজ্ঞান গবেষণায় অনেকদূর এগিয়ে গেছে। কাজেই তাঁদের ভ্যাকসিন যে একেবারেই মানসম্মত হবেনা এমন ভাবার কোন কারণ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যে, বৈজ্ঞানিক যে ধাপগুলো রয়েছে সেই ধাপগুলো অনুসরণ করেই চীনা ভ্যাকসিন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে। অন্যদিকে কেউ কেউ এই ভ্যাকসিন কতটুকু নিরাপদ হবে বা কতটুকু বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণালব্ধ হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে। তবে এই দুটি ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্ক-সংশয় থাকলেও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন নিয়ে তেমন কোন বিতর্ক বা সংশয় নেই। সংশয় নেই মডার্না ভ্যাকসিন প্রক্রিয়া নিয়ে। চীন-রাশিয়ার পর এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন এখন তৃতীয় ট্রায়ালে রয়েছে এবং তাঁরা বলছে যে, সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে তাঁরা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ট্রায়াল করবে। ইতিমধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের জন্য বিভিন্ন দেশ আগাম বুকিং দিচ্ছে এবং মডার্না ভ্যাকসিনের জন্যে অনেক দেশ বুকিং দিচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন নিবে তা নিয়ে কোন আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং সরকারের মধ্যেও একটি চিন্তাভাবনা রয়েছে যে, আগে পাওয়া ভ্যাকসিন নিবে নাকি নিরাপদ ভ্যাকসিন নিবে।
কারণ ভ্যাকসিন আগে আসলেই যে সেই ভ্যাকসিন নিরাপদ হবে তেমন কোন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। বরং যেটা নিরাপদ ভ্যাকসিন হবে সেটা নেওয়া উচিত। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, কোন ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং কোন ভ্যাকসিনটি সবথেকে বেশি বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ করে তৈরি করা হচ্ছে সে ব্যাপারে বাংলাদেশেরও পৃথক একটি গবেষণা দরকার এবং এই ব্যাপারে নজরদারি রাখা দরকার। যে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং দ্রুত আসবে সেই ভ্যাকসিনটির জন্য আমাদের আগাম বুকিং দিতে হবে এবং সরকারকে সেই ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন সরকার নেবে সেই ব্যাপারে যেমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি ঠিক তেমনিভাবে ভ্যাকসিনের জন্যে যে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া তা শুরু করতে পারেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বাংলাদেশের এখন তিনটি কাজ করা দরকার। প্রথমত, বিশ্বের যে দেশগুলো ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে সেগুলোর দিকে নজর রাখা। দ্বিতীয়ত, যারা নিরাপদ এবং দ্রুত ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং সেই ভ্যাকসিনের জন্য যদি অর্থের দরকার হয় তাহলে আগাম বুকিং দেওয়া। তৃতীয়ত, গ্যাভির সঙ্গে সমন্বয় করে গরীব মানুষের জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের নিশ্চয়তা করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভ্যাকসিনের কোন সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করেনি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।