নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ৩০ মার্চ, ২০২১
টানা ১২ বছর ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার এটি অনন্য একটি রেকর্ড। এই সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে। পাশাপাশি রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ একটি সংযত অবস্থান তৈরি করেছে। ফলে বিরোধী দল নেই বললেই চলে। বিএনপি সংকুচিত হতে হতে নিঃশেষিত প্রায়। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো শক্তিহীন।
রাজনীতিতে হরতাল, ভাঙচুর, নাশকতা কঠোরভাবে দমন করেছে আওয়ামী লীগ। ফলে দলটি জনসমর্থনও পেয়েছে। বাংলাদেশ গত এক যুগে হরতালের নামে জ্বালাও পোড়াও, ভাঙচুরের সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে এসেছে। কিন্তু সেই বাংলাদেশেই হঠাৎ করে হেফাজতের তাণ্ডব, চোখ রাঙানি লক্ষ্যণীয়। তারা সরকারের চোখে চোখ রেখে সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে, সরকারকে বিভিন্ন দাবি দাওয়া দিচ্ছে, সরকারের সঙ্গে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু অনান্য রাজনৈতিক দলের ব্যাপারে সরকার যতটা কঠোর, যত দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়, হেফাজতের ব্যাপারে ততটাই নমনীয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে স্লথ গতি লক্ষ্য করা যায়। রাজনৈতিক মহলে কথা উঠেছে আওয়ামী লীগ কি তাহলে হেফাজতকে ভয় পায়?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একাধিক কারণে হেফাজতের সাথে আওয়ামী লীগ সরাসরি বিরোধে যেতে চায় না বরং হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ আগ্রহী। হেফাজতকে কেন আওয়ামী লীগ ভয় পায় এটি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা পাঁচটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন।
১. আওয়ামী লীগকে ইসলাম বিরোধী বলে প্রচারণার ভয়: হেফাজত একটি উগ্র মৌলবাদী সংগঠন। হেফাজতের সঙ্গে যদি আওয়ামী লীগ সরাসির কঠোর অবস্থানে যায় তাহলে আওয়ামী লীগ ৭৫ পরবর্তী তাদের মুসলিম বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছিলো সেটি আবার ঘটানোর একটি সুযোগ তৈরি হবে, যেটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি নেতিবাচক প্রচারণা হতে পারে। কাজেই ইসলাম বিরোধী রাজনৈতিক দলের তকমা এড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগ হেফাজতকে সমীহ করে চলে।
২. সংঘবদ্ধ উগ্র শক্তি: হেফাজত এই মুহূর্তে বাংলাদেশে একটি সংঘবদ্ধ উগ্র শক্তি। সারাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো একটি অভিন্ন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চলে। এই শিক্ষার্থীরা দরিদ্র হওয়ার কারণে তারা শিক্ষকদের কথামত সবকিছু করে। তাদেরকে যেভাবে প্রশিক্ষণ-শিক্ষা দেয়া হয় তাকে নিজস্ব চিন্তা-চেতনা, বিবেক-বুদ্ধিকে বন্ধক রেখে শিক্ষকদের নির্দেশে সবকিছু করতে প্রস্তুত থাকে। এই সংঘবদ্ধ উগ্র শক্তিকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে একটু ভয় পায় বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।
৩. বিএনপি সুযোগ পাবে: হেফাজতকে ভয় পাওয়া বা সমীহ করার প্রধান কারণ হলো বিএনপি। বিশ্লেষকরা মনে করে হেফাজতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালে এই ঘটনা থেকে বিএনপি লাভবান হতে পারে। বিএনপি এই সুযোগ নিয়ে হেফাজতকে যেমন ব্যবহার করবে তেমনি নিজেরাও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। আর এ কারণেই এখনই হেফাজতের সঙ্গে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ব্যাপারে সরকারের মধ্যে একটি ভিন্ন মত আছে বলেই বিভিন্ন মহল মনে করে।
৪. আওয়ামী লীগের মধ্যে হেফাজতের লোক আছে: সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনের ভেতরে প্রচুর মৌলবাদী লোকজন ঘাঁটি গেড়েছে বলেই মনের করেন বিশ্লেষকরা। এরা সরকারের নীতি এবং কৌশলে হেফাজত বিরোধী অবস্থানকে বাদ রাখছে। এদের কারণেই সরকার হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে পারছে না বরং এরা সরকারকে হেফাজতের ব্যাপারে ভুল তথ্য দিচ্ছে। যে কারণে হেফাজতকে সরকার সমীহ করছে।
৫. নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে বিপদ: হেফাজত যদি শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায় তাহলে সরকার বিপদে পড়তে পারে এমন ধারণা সরকারের কারও কারও মধ্যে আছে। আর যে কারণেই সরকার হেফাজতকে সমিহ করে চলছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। তবে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে মুক্তচিন্তার মানুষ মনে করে হেফাজতের সাথে সরকারের ফায়সালা হওয়া উচিৎ এখনই কারণ হেফাজতকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হলে এটি আওয়ামী লীগের জন্যই ভয়ঙ্কর হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। ১৫০টি উপজেলায় এখন জনগণ ভোটের অপেক্ষায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫৯টি উপজেলায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন গতকাল শেষ হয়েছে। সেখানেও এখন নির্বাচনী প্রচারণার ডামাডোল শুরু হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে কি না, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে কি না এবং উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে কি না তা নিয়ে একদিকে যেমন জনগণের সংকট রয়েছে তেমনই নির্বাচন কমিশনও এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।
লক্ষ্মীপুর সদরের তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই হামলার শিকার হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নেপথ্যে নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ। এঘটনায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী দুই প্রার্থীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৯১১ জনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলাও দায়ের করেন। ফলে নির্বাচনের পর আনন্দের বদলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ওই ইউনিয়নে।