নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ০৯ মে, ২০২১
২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে মারা যান মুনিয়া। মুনিয়া আত্মহত্যা করেছেন না তাকে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য রয়েছে। একদিকে মুনিয়ার ভাই এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেছেন। অন্যদিকে মুনিয়ার বোন একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন গুলশান থানায়। গুলশান থানার আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলাটি তদন্ত করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থারা। তবে এই তদন্তের ক্ষেত্রে অপরাধবিজ্ঞানী এবং আইনজ্ঞরা মনে করছেন যে, পাঁচটি তথ্যেই এই মৃত্যুর সব জট, রহস্য খুলে দিতে পারে।
১. আত্মহত্যা না হত্যাকাণ্ড: মুনিয়া কি আত্মহত্যা করেছেন না তাকে হত্যা করা হয়েছে এটি তদন্তের প্রধান উপজীব্য বিষয় হওয়া উচিত বলে মনে করছেন অপরাধবিজ্ঞানীরা। এর আগে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার যারা চেষ্টা করছেন তাদের নিশ্চয়ই অন্য কোনো মতলব রয়েছে। মুনিয়ার বোন নুসরাত মুনিয়ার মৃতদেহ পাওয়ার পরপরই আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করলেন কেন সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কাজেই অপরাধবিজ্ঞানীরা মনে করছেন প্রথমে এটি নিশ্চিত হতে হবে যে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এই বিতর্কটি নতুন করে সামনে এসেছে যখন মুনিয়ার ভাই সবুজ এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে মামলা করেছেন। কাজেই সবার আগে নিশ্চিত হতে হবে যে মুনিয়াকে কেউ হত্যা করেনি এবং যদি মুনিয়াকে হত্যা করা হয় তাহলে পুরো বিষয়টি অন্যদিকে তদন্ত করতে হবে। আর যদি মুনিয়া আত্মহত্যা করেন তাহলে তদন্ত হবে অন্য ভাবে।
২. মাদক গ্রহণ পরীক্ষা: মুনিয়ার যে জীবন যাপনের কথা পাওয়া যাচ্ছে তাতে এটা অস্বাভাবিক নয় যে মুনিয়া মাদক গ্রহণ করতেন। তিনি আসলেই মাদক গ্রহণ করতেন কিনা এবং যে রাতে তিনি মারা গিয়েছিলেন সেই রাতে অতিরিক্ত মাদক গ্রহণের কারণে তিনি অস্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিলেন কিনা সেটিও তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজীব্য বিষয়। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, অতিরিক্ত মাদক সেবনের কারণে অনেকে আত্মহত্যার পথে পা বাড়ায়। বাংলাদেশেই প্রতিবছর ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে এবং গবেষণায় দেখা গেছে এদের ৬৫ শতাংশ মানুষই মাদকাসক্ত হয়ে আত্মহত্যা করে। আর এ কারণেই মুনিয়ার যে পোস্টমর্টেম এবং অন্যান্য রিপোর্ট প্রণয়নের ক্ষেত্রে তার মাদক গ্রহণের পরীক্ষাটিও করা জরুরি বলে মনে করেন অপরাধবিজ্ঞানীরা।
৩. মুনিয়া, নুসরাত এবং নুসরাতের স্বামীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা: মুনিয়ার মৃত্যু নিয়ে যেভাবে তোলপাড় করা হচ্ছে তার পিছনে অন্য কোনো রহস্য আছে কিনা বা কেউ মুনিয়াকে ব্যবহার করে অন্য কোনো খেলা খেলার চেষ্টা করেছেন কিনা তা সহজে পাওয়া যাবে মুনিয়া, নুসরাত এবং নুসরাতের স্বামীর ব্যাংক একাউন্টের হিসাবগুলো খতিয়ে দেখলেই। কারণ যদি এটি কোনো পরিকল্পিত ঘটনা থাকে তাহলে নিশ্চয়ই এখানে আর্থিক লেনদেন হবে এবং এই আর্থিক লেনদেনগুলোর মাধ্যমে তাদের পরিকল্পনা সম্পর্কেও জানা যাবে।
৪. সিসিটিভির ফুটেজ: মুনিয়ার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে ওই বাসার সিসিটিভি ফুটেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজীব্য হতে পারে এবং সিসিটিভি ফুটেজগুলো যদি তল্লাশি করা যায়, শেষে কে এসেছে, মৃত্যুর দিন ওই বাসায় কারা এসেছে এবং মৃত্যুর আগে কারা এসেছে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে পুরো রহস্যটা আরো সহজ হবে বলে মনে করছেন অপরাধবিজ্ঞানীরা। কারণ মুনিয়াকে যদি কেউ হত্যা করে তাহলে নিশ্চই তাকে বাসায় প্রবেশ করতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজ সেখানে একটি বড় উপজীব্য।
৫. মুনিয়া, নুসরাত এবং নুসরাতের স্বামীর কল লিস্ট: এই তদন্তের সবচেয়ে দরকারি জিনিস হলো মুনিয়া, নুসরাত এবং নুসরাতের স্বামীর টেলিফোন কল লিস্ট। এই কল লিস্ট পরীক্ষা করলেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
এই পাঁচটি বিষয়ে তদন্ত করলেই মুনিয়ার মৃত্যুর মূল রহস্য বা আদৌ কোনো রহস্য আছে কিনা তা বের করা সম্ভব হবে বলে অপরাধবিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।