নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১১ জুন, ২০২১
বাংলাদেশে বর্তমানে আমলাদেরকে অনেক ক্ষমতাবান মনে করা হয়। দেশ পরিচালনায় তারাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন বলে প্রতিদিনই কেউ না কেউ অভিযোগ করে থাকেন। কিন্তু একটু গভীরে গিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, আমলাদের ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। নির্দিষ্ট সময়ের পর আমলারা যখন অবসরে চলে যান তখন তারা ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে যে, অবসরের পরেও অনেক আমলা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন সাংবিধানিক এবং অন্যান্য কমিশনে চেয়ারম্যান পদ পাচ্ছেন, কেউ কেউ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হচ্ছেন। অর্থাৎ অবসরের পরও ক্ষমতা বলয়ের মধ্যে তারা ঘোরাফেরা করছেন। তবে এর মধ্যে কিছু কিছু আমলা আছেন যারা দুর্দান্ত ক্ষমতাবান ছিলেন। কিন্তু নানা বাস্তবতায় এখন ক্ষমতা বলয়ে নেই, তারা কোনো পদ-পদবিতেও এখন আর থাকছেন না। এই সমস্ত কয়েকজন আমলাকে নিয়েই আমাদের এই প্রতিবেদন।
মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান: মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর সচিব ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সচিব হিসেবে তাকে ৩ বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। একসময় প্রচণ্ড ক্ষমতাবান এই সরকারি কর্মকর্তা এখন কোথাও নেই। তিনি তার নিজ এলাকায় মাঝেমধ্যে যান, রাজনৈতিক কিছু তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করেন কিন্তু ক্ষমতা কেন্দ্র থেকে তিনি অনেক দূরে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
আবুল কালাম আজাদ: আওয়ামী লীগের এই ১২ বছরের শাসনামলে সবচেয়ে ক্ষমতাবান আমলা মনে করা হতো আবুল কালাম আজাদকে। তিনি প্রধানমন্ত্রী আস্থাভাজন এবং ঘনিষ্ঠ হিসেবে ছিলেন। বিদ্যুৎ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, ইআরডি সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবে। তারপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর এসডিজির সমন্বয়কারী হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। একটা সময় মনে করা হতো যে, প্রধানমন্ত্রী পরেই হয়তো ক্ষমতাবান আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু সেই ক্ষমতা এখন আর তার নেই। তিনি এখন কোথাও নেই। বিশেষ করে গত বছরের শাহেদ কেলেঙ্কারির পর ক্ষমতা কেন্দ্র থেকে আরো দূরে চলে গেছেন আবুল কালাম আজাদ।
ড. এন আই খান: ড. এন আই খান প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ছিলেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী যখন বিরোধী দলের নেতা ছিলেন তখনো তিনি তাঁর একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি শিক্ষাসচিব হন এবং সেখানেই তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি এখন আর ক্ষমতার কেন্দ্রে নাই। যদিও তাকে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু যে প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল তার ছিটেফোঁটাও এখন তিনি আর ভোগ করেন না।
নজিবুর রহমান: নজিবুর রহমানের ক্ষমতা কেন্দ্রে আসা ছিল বিস্ময়কর। তিনি এনবিআরের চেয়ারম্যান ছিলেন। সেখান থেকে তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব করা হয়। কিন্তু নজিবুর রহমানই একমাত্র ক্ষমতাবান আমলা যিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাননি। এখন তিনি কোথাও নেই। ক্ষমতা কেন্দ্রের চারপাশে তার কথা উচ্চারিত হয় না।
আবু আলম শহিদ খান: আবু আলম শহিদ খান ১৯৯৬ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ আমলা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি প্রশাসন ক্যাডারে কর্মকর্তা হয়ে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে একটি দুর্নীতির মামলা তদন্তের জন্য তিনি সাসপেন্ড হন। বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে তার পদোন্নতি রহিত করে দেয়। আদালতের আশ্রয় নিয়ে তিনি পদোন্নতি পান এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হওয়ার পর দ্রুত পদোন্নতির ধারায় তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। সেসময় তিনি প্রচণ্ড প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাবান আমলা ছিলেন। কিন্তু স্থানীয় সরকার সচিব থাকার শেষদিকে সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্কে অস্থিরতা তৈরি হয়। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাননি। এখন তিনি একজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের সমালোচক বটে।
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রীর দশটি অসাধারণ উদ্যোগের অন্যতম একটি কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। সমগ্র বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবার জন্য এটি যে একটি অনন্য সাধারণ মডেল ও উদ্যোগ তা জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামে জাতিসংঘে উত্থাপিত ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজ্যুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে। ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’কে আরও একবার সম্মানে ভূষিত করল যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়ারেন অ্যালপার্ট মেডিকেল স্কুল। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ওয়ারেন অ্যালপার্ট মেডিকেল স্কুল অব ব্রাউন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের ডিন মুকেশ কে জৈন দ্য লোটে এই উদ্যোগকে ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, এটি কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার একটি সফল মডেল। এটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন, কমিউনিটি সম্পৃক্ততা উন্নয়নের মাধ্যমে সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিধির জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি।
প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশজুড়ে স্থাপিত হয়েছে চৌদ্দ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক, যা গ্রামীণ সমাজের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এনেছে অভূতপূর্ব পরিবর্তন। বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বিপ্লব প্রচেষ্টায় অনুপ্রেরণা হিসেবে ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথ।
তবে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগ ম্লান হতে শুরু করে। স্বাস্থ্য খাতে দলীয় রাজনীতির উদাহরণ হয়ে আছে কমিউনিটি ক্লিনিক। জোট সরকারের শাসনামলে এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সেখানে তখন দিনে গবাদিপশু চরানো হতো আর রাতে বসত মদ আর জুয়ার আসর।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে আবারও রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পেলে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। একে একে চালু করা হয় বিএনপির সময় বন্ধ করে দেয়া ক্লিনিকগুলো আর পাশাপাশি স্থাপন করা হয় আরো নতুন নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক।
স্বাস্থ্যসেবা কমিউনিটি ক্লিনিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবা
মন্তব্য করুন
আজ ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তন করেন। সেই স্বপ্নে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তন করেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরেই দেশের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তৎকালীন মহকুমা ও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য অবকাঠামো গড়ে তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
সংশিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের অভিনব ধারণা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে । মৌলিক স্বাস্থ্য সেবার সুবিধাসমূহ আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমেই দেশের প্রান্তিক ও অন্যান্য তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে-যার ফলে সরাসরি উপকৃত হচ্ছে দেশের গ্রামাঞ্চলের জনগণের বিশাল একটি অংশ। কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীরা জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন, টিকা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং পরামর্শ পরিষেবা সহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের মধ্যে সফলভাবে কাজ করছে। দীর্ঘকাল ধরে চলমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেকটা শহরকেন্দ্রিক হওয়ায় অপেক্ষাকৃত সচ্ছল বা ধনী লোকদের মত প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের গরীব বা হতদরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চয়তা দিতে পারছিল না। তাই “সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা'র মত মানুষের জন্মগত মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্য অর্জন করা আমাদের জন্য সম্ভব ছিল না। এবং বৈপ্রবিক কোনো পদক্ষেপ ছাড়া একশ বছরেও এটা অর্জন করা কঠিন হত। তখন ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের দুস্থ জনগণের জন্য তার হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার এই কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পটি গ্রহন করেন এবং ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করার প্রকল্প গ্রহণ করেন- যার মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় আরাধ্য স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর সরকারী উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়।
গত বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজ্যুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামের ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজ্যুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়ে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই দেশব্যাপী প্রতি ৬ হাজার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে মোট ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২০০১ সালের মধ্যেই ১০ হাজার ৭ শত ২৩টি অবকাঠামো স্থাপনপূর্বক প্রায় ৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু করা হয়। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার আবার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের কাজ শুরু করে। বর্তমানে মোট ১৪ হাজার ১৫৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ১৪ হাজার ১০০ শত ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কোভিড ভ্যাকসিন প্রদানসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টিসেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো- এটি সরকার ও জনগণের সম্মিলিত অংশীদারিত্বের একটি সফল কার্যক্রম, যার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা এবং স্থায়িত্বের লক্ষ্যে সরকার ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন’ পাস করেছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সারাদেশের প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি সেবাসহ বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ঔষধ ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমান অর্থবছরে ঔষধ ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী বাবদ বাৎসরিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ২৪১ কোটি থেকে ২৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সেবার পরিধি সম্প্রসারিত হওয়ার কারণে ৫ শতাংশের পরিবর্তে বর্তমানে ৮ শতাংশ জমিতে চার কক্ষ বিশিষ্ট নতুন নকশায় কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৭ থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৮৭টি নতুন নকশার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রীর দশটি অসাধারণ উদ্যোগের অন্যতম একটি কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। সমগ্র বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবার জন্য এটি যে একটি অনন্য সাধারণ মডেল ও উদ্যোগ তা জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামে জাতিসংঘে উত্থাপিত ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।
আজ ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তন করেন। সেই স্বপ্নে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হয়।