নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩১ জুলাই, ২০২১
সাম্প্রতিক সময়ে এ অঞ্চলে যে নাটকীয় পরিবর্তনগুলো হচ্ছে সেই পরিবর্তনে ঘুম ভেঙেছে ভারতের। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ভারত মরিয়া হয়েছে। ভারতের একাধিক থিংক ট্যাংক এবং নীতিনির্ধারকরা এ নিয়ে আলোচনা করছেন। আর এই নিয়ে ভারত বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য খুব শীঘ্রই ভারত কিছু চমক নিয়ে আসছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মনে করছে। এই অঞ্চলে ভারত আস্তে আস্তে শুধু একা হয়ে যায়নি, এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে পতিত হয়েছে। চীন এই অঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করেছে সকলের অলক্ষ্যে। বিশেষ করে ভারত যখন করোনা মহামারী মোকাবেলায় হাঁসফাঁস করছে সেই সময়ে চীন নীরবে এই অঞ্চলে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর এ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় চমক সৃষ্টি করেছে আফগানিস্তানে। সেখানে তারা তালেবানদের সঙ্গে একটি ঐক্য তৈরি করেছে এবং এই ঐক্য পুরো সার্ক অঞ্চলের রাজনৈতিক মেরুকরণ পাল্টে দিয়েছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। ফলে চীন এখন সব দিক থেকে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
প্রথমত, চীন পাকিস্তানের যে সম্পর্ক এবং ইমরান খানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা তা ভারতকে চাপে ফেলবে। এর ফলে পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হোক না হোক তাদের জঙ্গি ও সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে পাকিস্তানি অস্থিতিশীলতার জন্য লেলিয়ে দেওয়ার মত সক্ষমতা অর্জন করবে। আফগানিস্তানে তালেবানরা ভারতবিরোধী অবস্থান ইতিমধ্যে জানান দিয়েছে এবং সামনের দিনগুলোতে তালেবানরা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে। ভারতের জন্য সেটি একটি বড় হুমকি সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি এই তালেবানদের উত্থানের ফলে বাংলাদেশ-পাকিস্তানে যে উগ্র জঙ্গিবাদী সংগঠনগুলো আছে সেগুলো নতুন জীবন পাবে এবং সেটি ভারতের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে যাবে। এ অঞ্চলে যখন সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথাচাড়া দিবে তখন ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো নতুন প্রাণশক্তি পাবে। এই সংগঠনগুলোকে অস্ত্র, অর্থ ইত্যাদি সরবরাহ করা হবে। ফলে ভারতজুড়ে এক অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হবে, এমনটি মনে করছে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাংকরা। এ কারণে তারা তারা মনে করছে, কৌশলগত কারণে যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে। ভারত মনে করছে, বাংলাদেশ এবং ভারতে যদি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিবাদীদের উত্থান না ঘটে তাহলে ভারত নিরাপদ থাকবে এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতাও বন্ধ হবে। আর এই কারণেই ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের তাগিদ দেয়া হয়েছে।
গত এক যুগে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিল। কিন্তু ভারতের নানা রকম স্বার্থপর সিদ্ধান্তের কারণে এই সম্পর্কটা এখন কিছুটা হলেও শীতল হয়েছে। যদিও দুই দেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হচ্ছে যে, দুই দেশের সম্পর্ক এখনো ভালো রয়েছে কিন্তু টিকা কূটনীতি, পিঁয়াজ কূটনীতি, সীমান্তে হত্যা ইত্যাদি নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে এক ধরণের ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে। এ কারণেই বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন কৌশল গ্রহণ করছে বলেও জানা গেছে। এই কৌশলের তিনটি ধাপ রয়েছে। প্রথমত, প্রথম ধাপ ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। ভারত বাংলাদেশকে নিয়মিত অক্সিজেন দিচ্ছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের যে নিম্নগামীতা তা কিছুটা হলেও বন্ধ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ভারত খুব শীঘ্রই তাদের প্রতিশ্রুত টিকা যে টিকার দাম বাংলাদেশ ইতিমধ্যে দিয়েছে তা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এ ব্যাপারে একটা আকর্ষণীয় ঘোষণা আসতে পারে। তৃতীয়ত, ভারতের কূটনীতিক মহল থেকে বাংলাদেশে একটি সফরের উদ্যোগ নেয়া হবে এবং এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলোকে আবার মিটিয়ে ফেলার একটা চেষ্টা করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ভারত মনে করছে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ছাড়া এই অঞ্চলে টিকে থাকার আর কোন উপায় নেই।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।